মানুষ
আমরা যখন সোভিয়েত ইউনিয়নে আসি তখন তা সব অর্থেই ছিল ভিন গ্রহের দেশ। ছোটবেলা থেকে যেসব জিনিস সঠিক বা ন্যায় বলে জেনে এসেছি এখানে সেসবের অনেক কিছুই ছিল ভুল বা অন্যায়। বিশেষ করে কেনা বেচার ক্ষেত্রে। এর কারণ ছিল সম্পদের উপর মালিকানা সম্পর্কের ভিন্নতা। আমাদের অনেকেই নতুন বাস্তবতা মেনে ও মানিয়ে নিয়ে চলেছে, অনেকেই আবার এসব আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য করে আয়েশী জীবন যাপন করেছে। পেরেস্ত্রোইকা ও গ্লাসনস্তের দমকা হাওয়ায় এসব বাধানিষেধ উড়ে গেলে বেশিরভাগ মানুষ সোৎসাহে ব্যবসায় নামে। অনেকেই নামে সেই সময়ে স্টাইপেন্ডের টাকায় জীবন ধারণ অসম্ভব হয়ে পড়ায়। অনেকেই সেই সুযোগে নিজের অর্থনৈতিক অবস্থা পরিবর্তন করতেও ব্যবসায় নামে। নতুন বাস্তবতায় সেটা অন্যায় কিছু ছিল না। তবে এটা প্রমাণ করে যে যারা আদর্শের কারণে নিজেদের উপর এ ধরণের কৃত্রিম বাধানিষেধ (কৃত্রিম এ কারণে যে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অপ্রতুলতা যে চাহিদার জন্ম দেয় সেটা সমাধান করার পরিবর্তে জনগণকে নিজেদের মধ্যেই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের লেনদেন করা বেআইনি ঘোষণা করে সোভিয়েত সরকার) আরোপ করেছিল তাদের অনেকেই সেটা করেছিল অনিচ্ছায়। এদের অনেকেই সোভিয়েত আইন না ভাঙলেও সেই আইন লঙ্ঘন করে যারা বেশ পয়সার মালিক হয়েছিল তাদের ওখানে গিয়ে বেশ করে গলা ভেজানো খারাপ কিছু মনে করত না।
প্রায় একই ধরণের ঘটনা ঘটছে এখন বাংলাদেশে। সংস্কৃতিমনা, প্রগতিশীল ও মুক্তমনা বলে পরিচিত অনেক মানুষ চক্ষুলজ্জার খাতিরে দীর্ঘদিন প্রকাশ্যে হালুয়া রুটির ভাগ নিতে পারছিল না। আগস্ট বিপ্লবের লেজ ধরে এখন এদের অনেকেই সেই বৈতরণী পার হয়েছে, হচ্ছে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নাম করে এখন অনেকেই দিব্যি জামাত শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। এবং করছে বুক চিতিয়ে। আর সেই সাথে নিজেদের কার্যকলাপকে নৈতিক ভাবে বৈধতা দেবার জন্য স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে। কিন্তু বাংলাদেশটাই (আমি ভূখণ্ডের কথা বলছি না, বলছি স্পিরিটের কথা) যদি না থাকে তাহলে সেখান থেকে স্বৈরাচার তাড়িয়ে দেশের ও দেশের মানুষের কী লাভ হবে সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা জরুরি।
দুবনা, ১১ মার্চ ২০২৫
প্রায় একই ধরণের ঘটনা ঘটছে এখন বাংলাদেশে। সংস্কৃতিমনা, প্রগতিশীল ও মুক্তমনা বলে পরিচিত অনেক মানুষ চক্ষুলজ্জার খাতিরে দীর্ঘদিন প্রকাশ্যে হালুয়া রুটির ভাগ নিতে পারছিল না। আগস্ট বিপ্লবের লেজ ধরে এখন এদের অনেকেই সেই বৈতরণী পার হয়েছে, হচ্ছে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নাম করে এখন অনেকেই দিব্যি জামাত শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। এবং করছে বুক চিতিয়ে। আর সেই সাথে নিজেদের কার্যকলাপকে নৈতিক ভাবে বৈধতা দেবার জন্য স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে। কিন্তু বাংলাদেশটাই (আমি ভূখণ্ডের কথা বলছি না, বলছি স্পিরিটের কথা) যদি না থাকে তাহলে সেখান থেকে স্বৈরাচার তাড়িয়ে দেশের ও দেশের মানুষের কী লাভ হবে সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা জরুরি।
দুবনা, ১১ মার্চ ২০২৫
Comments
Post a Comment