পিরামিড
নব্বইয়ের দশকে পশ্চিমা বিশ্বের অনেক কিছুর সাথে রাশিয়াতে আসে পিরামিড। সব হারিয়ে মানুষ সর্বশান্ত। তাই যখনই কেউ দুই পয়সা উপার্জনের লোভ দেখাত তখনই সবাই ছুটত তার পেছনে। এমনও হতে পারে পুঁজিবাদী ব্যবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞ এসব কোম্পানির মালিকরাও বিশ্বাস করত সবাই এতে লাভবান হবে। এসব কোম্পানির একটি ছিল এমএমএম। মাভরোদি ভাইদের কোম্পানি। সেখানে বিজ্ঞাপন দিত লোনিয়া গালুবকভ নামে যে লোক তার লুক এতটাই নির্বোধ ছিল যে সবার মনে প্রশ্ন জাগত যদি ও পারে আমি কেন নয়। ফলে লোকজন দেদারসে ওদের বন্ড কিনত। সারাদিন কতবার যে টিভিতে ওদের বিজ্ঞাপন দেখাত! প্রথম দিকে যোগদানকারী লোকজন পরবর্তীতে যোগ দেয়া লোকদের টাকার বদৌলতে লাভবান হলেও শেষের দিকে লোকজন কিছু পেত না। এরপর শুরু হল আইনী প্রক্রিয়া। কত লোক যে সর্বশান্ত হল।
ভেবে দেখলাম রাজনৈতিক দলগুলোও একই প্রক্রিয়ায় চলে, যেমন চলে বিপ্লব। রাজনীতিতেও কিছু মানুষ রাজা উজির হয় জনতার শক্তির উপর ভর করে। এই জনতার কাঁধে চড়ে নেতারা হয় ক্ষমতা ও সম্পদের মালিক, জনগণ নিঃস্ব থেকে যায় বরাবরের মত। বিপ্লব ব্যতিক্রম নয়। এই তো দেখুন কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের কেউ কেউ রাজা উজির হলেও অধিকাংশ আগের মতই রয়ে গেছে, এমনকি পরীক্ষা বাতিলের ফলে অনেকের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। একটু ভাবলে দেখবেন সারা বিশ্বই এক বিশাল পিরামিড যেখানে ১% মানুষের হাতে জমে আছে ৯০% সম্পদ। ক্ষমতার বাজারেও একই অবস্থা যেমন ধর্মের বাজারে। এজন্যেই হয়তো মিশরের পিরামিড আজও টিকে আছে যদিও এরচেয়ে অনেক পরে তৈরি স্থাপনা হারিয়ে গেছে পৃথিবীর বুক থেকে। আচ্ছা সব শাসনই এক সময় কমবেশি স্বৈরাচারী রূপ ধারণ করে সেখানেও ক্ষমতার পিরামিড গড়ে ওঠে বলে কি?
মস্কো, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Comments
Post a Comment