অপ্রত্যাশিত
অফিসে যাচ্ছি হাঁটতে হাঁটতে, হঠাৎ দেখা আমাদের পাবলিসিং ডিপার্টমেন্টের এক ভদ্রমহিলার সাথে। আমি অফিস যাই দেরী করে, ১২ টা - ১ টার দিকে, ওই সময় ও লাঞ্চ করতে যায়, দেখা হয় প্রতিদিন, তবে আজ "হঠাৎ" এ অর্থে যে, অন্য দিনের মতো "হাই" বলে পাশ কাটিয়ে না গিয়ে বললো
- দুটো মিনিট সময় আছে আপনার?
- হ্যা।
আমি উৎসুকের দৃষ্টিতে তাকালাম।
- আমার পিটারের বন্ধুরা আপনার ছবি দেখে অবাক হয়ে গেছে। আপনাকে অনেক শুভেচ্ছা দিয়েছে।
এবার আমার অবাক হবার পালা। এসব ক্ষেত্রে যেটা হয়, আমি চোখ ছানাবড়া করে তাকিয়ে থাকি ওর দিকে। কোনো মতে বলি
- পিটার, আমার ছবি ..........
আমি সত্যি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।
- পিটার, মানে সেন্ট পিটার্সবার্গ।
- তা বুঝলাম, তবে আমার ছবি ওখানে গেলো কি ভাবে?
আমি মাঝে মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ছবি পাঠাই, ওরা নিজেরা প্রদর্শনী করে বিভিন্ন ফটোগ্রাফারের ছবি দিয়ে। আমাকে জানায়, যেতে বলে। তবে যাওয়া হয়না কখনো। তবে পিটারে এমন কিছু হবে বলে তো শুনিনি। সব যেন গুলিয়ে যাচ্ছিলো। ও আমার অবস্থা দেখে বলে
- ওই যে ভোলগায় বাম পাশে তোমাদের যে প্রদর্শনী হলো, আমি আমার বন্ধুদের ওখানে নিয়ে গেছিলাম।
এতক্ষনে অরিন্দম কহিলা বিষাদে। মনে পড়লো। এ মাসে প্রথম দিকে আমাদের ক্লাব "অব্রাজ" এর প্রদর্শনী হয়েছে। এমনিতে মার্চে আমাদের প্রদর্শনী, তবে প্রতি তিন বছরে একবার ওই তিন প্রদর্শনীর সেরা ছবি নিয়ে একটা প্রদর্শনী হয়, যেখানে বিভিন্ন শহর থেকে জুরিরা এসে ক্লাবের স্ট্যাটাস নির্ধারণ করে। আমি জানতাম, আমার ৬ টা ছবি যাবে, তবে রোববার উদ্বোধন হওয়ায় যেতে পারিনি। এর আগে শহরের একটা প্রতিযোগিতায় আমার একটা ছবি প্রথম হয়েছে আর এখানে তার পুরস্কার স্বরূপ সার্টিফিকেট দেবার কথা ছিল। আমাদের ক্লাবের প্রধান তাই বার বার বলছিলো উপস্থিত থাকতে। কিন্তু ছুটির দিনে আমি মস্কো থাকি, তাই আর যাওয়া হয় না। যাই হোক, ভালোই লাগলো অপ্রত্যাশিত ভাবে ছবির প্রশংসা শুনে।
আমার জামা-কাপড়, চলন বলেন দেখে বৌ প্রায়ই বলে,
- তোমাকে দেখে সারা দুবনা হাসে।
- তা বিনে পয়সায় যদি মানুষকে একটু আনন্দ দিতে পারি তাতেই বা ক্ষতি কি?
অনেক আগে, যখন আমি শীতের রাস্তায় সাইকেল নিয়ে ঘুরতাম আর লোক জন তা দেখে বলতো "হায় ঈশ্বর", আমি সবাইকে শুনিয়ে বলতাম,
- সময় এসেছে পাদ্রীর চাকরি নেবার। বিশ্বাসী না হয়েও যে ভাবে মানুষকে ঈশ্বরের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছি, পাদ্রীর চাকরি নিলে তো আর ভীড় সামলানো যাবে না। যাকগে মস্কো গিয়ে বৌকে বলা যাবে
- শুধু আমাকে দেখেই নয়, আমার ছবি দেখেও এমনকি পিটারের মানুষও খুশী হয়।
দুবনা, ২৩ নভেম্বর ২০১৬
- দুটো মিনিট সময় আছে আপনার?
- হ্যা।
আমি উৎসুকের দৃষ্টিতে তাকালাম।
- আমার পিটারের বন্ধুরা আপনার ছবি দেখে অবাক হয়ে গেছে। আপনাকে অনেক শুভেচ্ছা দিয়েছে।
এবার আমার অবাক হবার পালা। এসব ক্ষেত্রে যেটা হয়, আমি চোখ ছানাবড়া করে তাকিয়ে থাকি ওর দিকে। কোনো মতে বলি
- পিটার, আমার ছবি ..........
আমি সত্যি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।
- পিটার, মানে সেন্ট পিটার্সবার্গ।
- তা বুঝলাম, তবে আমার ছবি ওখানে গেলো কি ভাবে?
আমি মাঝে মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ছবি পাঠাই, ওরা নিজেরা প্রদর্শনী করে বিভিন্ন ফটোগ্রাফারের ছবি দিয়ে। আমাকে জানায়, যেতে বলে। তবে যাওয়া হয়না কখনো। তবে পিটারে এমন কিছু হবে বলে তো শুনিনি। সব যেন গুলিয়ে যাচ্ছিলো। ও আমার অবস্থা দেখে বলে
- ওই যে ভোলগায় বাম পাশে তোমাদের যে প্রদর্শনী হলো, আমি আমার বন্ধুদের ওখানে নিয়ে গেছিলাম।
এতক্ষনে অরিন্দম কহিলা বিষাদে। মনে পড়লো। এ মাসে প্রথম দিকে আমাদের ক্লাব "অব্রাজ" এর প্রদর্শনী হয়েছে। এমনিতে মার্চে আমাদের প্রদর্শনী, তবে প্রতি তিন বছরে একবার ওই তিন প্রদর্শনীর সেরা ছবি নিয়ে একটা প্রদর্শনী হয়, যেখানে বিভিন্ন শহর থেকে জুরিরা এসে ক্লাবের স্ট্যাটাস নির্ধারণ করে। আমি জানতাম, আমার ৬ টা ছবি যাবে, তবে রোববার উদ্বোধন হওয়ায় যেতে পারিনি। এর আগে শহরের একটা প্রতিযোগিতায় আমার একটা ছবি প্রথম হয়েছে আর এখানে তার পুরস্কার স্বরূপ সার্টিফিকেট দেবার কথা ছিল। আমাদের ক্লাবের প্রধান তাই বার বার বলছিলো উপস্থিত থাকতে। কিন্তু ছুটির দিনে আমি মস্কো থাকি, তাই আর যাওয়া হয় না। যাই হোক, ভালোই লাগলো অপ্রত্যাশিত ভাবে ছবির প্রশংসা শুনে।
আমার জামা-কাপড়, চলন বলেন দেখে বৌ প্রায়ই বলে,
- তোমাকে দেখে সারা দুবনা হাসে।
- তা বিনে পয়সায় যদি মানুষকে একটু আনন্দ দিতে পারি তাতেই বা ক্ষতি কি?
অনেক আগে, যখন আমি শীতের রাস্তায় সাইকেল নিয়ে ঘুরতাম আর লোক জন তা দেখে বলতো "হায় ঈশ্বর", আমি সবাইকে শুনিয়ে বলতাম,
- সময় এসেছে পাদ্রীর চাকরি নেবার। বিশ্বাসী না হয়েও যে ভাবে মানুষকে ঈশ্বরের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছি, পাদ্রীর চাকরি নিলে তো আর ভীড় সামলানো যাবে না। যাকগে মস্কো গিয়ে বৌকে বলা যাবে
- শুধু আমাকে দেখেই নয়, আমার ছবি দেখেও এমনকি পিটারের মানুষও খুশী হয়।
দুবনা, ২৩ নভেম্বর ২০১৬
Comments
Post a Comment