তুমি কে?
এই প্রশ্ন আমার কাছে সব সময়ই আরও কিছু প্রশ্নের সাথে জড়িত ছিল, এখনও আছে
আমি কে? কেন জন্ম? কিসে বা কল্যাণ?
কোন ক্লাসে পড়েছিলাম মনে নেই। খুব সম্ভব স্বামী বিবেকানন্দের বাণী। এটা "নিজেকে জান" - সক্রেটিসের সেই অমর বাণীর আধুনিক রূপ।
কিছু দিন আগে কোটা আন্দোলনের সময় "তুমি কে? আমি কে?" এই প্রশ্নের এক ব্যঙ্গাত্মক উত্তর মিলেছে "রাজাকার" শব্দে। এর বিপরীতে "বাঙালি" ফিরে এসেছে বাংলাদেশে।
ফেসবুকে কোটা আন্দোলন প্রশ্নে বন্ধুরা দ্বিধাবিভক্ত। কোটা সংস্কারের দাবিতে এবং সেই সমস্যার হ্যান্ডলিং নিয়ে সরকারের ব্যর্থতার ব্যাপারে একমত হলেও এর পেছনে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির যে মদদ রয়েছে এবং এরাই যে এখন কলকাঠি নাড়াচ্ছে সে ব্যাপারে সবাই একমত হতে পারেনি। অন্ধভাবে একদল হাসিনা সরকারকে দায়ী করছে, আরেক দল বিএনপি জামাত শিবিরকে। সত্যটা মনে হয় মাঝামাঝি। সরকারের ভুল বিরোধীরা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে। কিছু প্রশ্নের উত্তর যা এড়িয়ে যাওয়া যেত বা আবেগ বর্জিত ভাবে দেয়া যেত সেটা করার ব্যর্থতাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভোকেশন নাকি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের ফল - তবে ফলাফল প্রমাণ করে যে এটা রাজনৈতিক ধৃষ্টতা। এই ঘটনায় দু পক্ষেই প্রচুর হতাহত হয়েছে, জাতীয় সম্পদ নষ্ট হয়েছে ব্যাপক পরিমাণে। আমার কেন যেন মনে হয় এক তরফা ভাবে কোন দলকে দায়ী করার আগে আমাদের নিজের কাছে "আমি কে" এই প্রশ্নের উত্তর পরিস্কার করে নিতে হবে। আন্দোলনের আবেগের সময় যে যে উচ্চারণই করুক না কেন এখন শান্ত মাথায় এর উত্তর হবে লিটমাস টেস্ট। এই উত্তরের উপর নির্ভর করবে উত্তর দাতার অবস্থান। উত্তর যদি "বাঙালি" হয় সে কোন পক্ষকে অন্ধভাবে সমর্থন না করে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করবে এবং পক্ষ নির্বিশেষে যারাই এত মৃত্যু, এত ধ্বংসের জন্য দায়ী সবাইকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাবে বলেই আমার বিশ্বাস। সাদা ও কালোর মাঝে অসংখ্য শেড বা ছায়া থাকে। সেই শেড কে কতটা দেখতে পারে তার উপর নির্ভর করে ঘটনার মূল্যায়নের নিরপেক্ষতা।
দুবনা, ২৪ জুলাই ২০২৪
Comments
Post a Comment