Posts

Showing posts from October, 2024

স্বৈরাচার

Image
রাজনৈতিক, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তৎপর ও সফল প্রগতিশীল অনেক মানুষের ২০২৪ এর বিপ্লবে ভূমিকা আমার মনে দৃঢ় বিশ্বাসের জন্ম দিয়েছিল যে অন্ধ বিশ্বাসের মত অন্ধ ঘৃণাও ধ্বংসের পথ সুগম করতে পারে। তারপরেও আশা ছিল ইতিহাস আমাদের শিক্ষা দেবে। সোভিয়েত ইউনিয়নে মানুষ ছিল অনেক বেশি শিক্ষিত, দেশ শিল্পে, শিক্ষা দীক্ষায় অনেক বেশি উন্নত। কিন্তু অল্প কিছু মানুষ অল্প কিছু সময়ের মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়নের সব অর্জনকে নাই করে দিয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বার বার বাংলাদেশ সম্পর্কে আশংকার কথা লিখেছিলাম। এখন যে বিভিন্ন দিবস বাতিল হচ্ছে এটা ১৯৯১ পরবর্তী সময়ে সোভিয়েত ইতিহাস মুছে দেবার মত - শুধু ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। সেখানেও অর্থনীতিবিদরা ছিল প্রধান ভূমিকায় আর এসব হয়েছিল আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্বের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে। ১৭ বছর লেগেছিল ঘুরে দাঁড়াতে। এখনও সেটা সম্পন্ন হয়নি। তখন এদেশের মানুষ পাছে কমিউনিস্ট বলে গালি দেয় এই ভয়ে মুখ খোলে নাই। দেশে ভয় পায় পাছে স্বৈরাচারের দোসর বলে। কিন্তু না দেশে, না এখানে কোথাও জনগণ এদের ইতিহাস পরিবর্তনের ম্যান্ডেট দেয়নি, দিয়েছিল দুর্নীতি দমন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্ট

মতিয়া আপা

Image
আজ ঘুম থেকে উঠে ফেসবুকে বেগম মতিয়া চৌধুরীর মৃত্যু সংবাদ পেলাম। মতিয়া আপা, বাংলাদেশের অগ্নিকন্যা, এক সময়ের ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি - সেই হিসেবে আমাদের অনেক কিছুই এক সূতায় বাঁধা। পরবর্তীতে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। কৃষি মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। যত দূর জানি তাঁর নাম দুর্নীতি বা এসব কেলেঙ্কারিতে জড়িত ছিল না। তিনি একজন সফল রাজনৈতিক নেতা যিনি চেষ্টা করেছেন মানুষের জন্য কিছু করার। সবাই মানুষের জন্য রাজনীতি করে বলে দাবি করে কিন্তু আদর্শের প্রতি অন্ধ বিশ্বাস থেকে অনেকেই অনেক সময় ছোট খাটো যে সুযোগ আসে মানুষের পাশের দাঁড়ানোর, সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে কিছু একটা করার - ভবিষ্যতে অনেক বড় কিছু করার আশায় সেই সুযোগ হেলায় সরিয়ে দেয়। কিন্তু সবার জীবনে জ্যাক পট আসে না। তাই অনেকেই সারা জীবন মানুষের জন্য রাজনীতি করেও, হাজারো ত্যাগ স্বীকার করেও মানুষের জন্য কিছু না করেই একদিন চির শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েন। মতিয়া আপা ছিলেন ব্যতিক্রম। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হয় তাঁর প্রয়াণ হবে নিরবে নিভৃতে। তবে আমার বিশ্বাস কোন দিন যদি বাংলাদেশের আন্দোলনের নিরপেক্ষ ইতিহাস লেখা হয় তবে

অপেক্ষা

Image
দেশের অধিকাংশ মানুষের ধারণা ইউরোপ আমেরিকায় জীবন খুবই বিলাসবহুল। কাজ কর। ডলার পাউন্ড ইউরো উপার্জন কর। আর এসব মানেই তো অনেক টাকা। এত টাকা রাখবে কোথায়? ফুর্তি করে জীবন কাটাও। আর তাই এসব দেশে বসবাসের প্রতি আমাদের আকর্ষণ অনেকটা স্বর্গ বাসের মত। হালের নেতা মন্ত্রীরা চালাক। তাই তারা আর স্বর্গের লোভে দেখায় না (অপছন্দের মানুষকে সরাসরি স্বর্গে চালান করে দেয়) দেশকে ইউরোপ আমেরিকা বানানোর কথা বলে। আজকাল ফেসবুকে কিছু ভিডিওতে জিনিসপত্রের উচ্চ মূল্য নিয়ে মানুষের অসন্তোষ দেখি। কেন রে বাবা! এটাই তো ইউরোপ আমেরিকা হওয়ার সহজ পথ। আমরা তো ওদের ডলার পাউন্ড ইউরো-ই গ্রহণ করি, শিক্ষা দীক্ষা সংস্কৃতি এসব পাশে সরিয়ে রেখে। তবে এটা স্বাভাবিক। মানুষ খারাপটা সহজেই হজম করতে পারে। যে লোক দুই অক্ষর ইংরেজি বলতে পারে না সেও বেশ কয়েকটি ইংরেজি গালি জানে। এখন অপেক্ষা করুন কবে বেতনটাও ঐ রকম হবে। একদিন নিশ্চয়ই হবে। সবচেয়ে বড় কথা সেই দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকা।  মস্কো, ১৩ অক্টোবর ২০২৪

মস্কোর দূর্গা পূজা

Image
পূজা মানে ভার্সিটি জীবনের বন্ধুদের সাথে বছর গড়িয়ে আরও একবার দেখা হওয়া। পূজা মানে কয়েক ঘন্টা মনখুলে আড্ডা। পূজা মানে ঢাকের বাজনা, কাসের শব্দ, ধূপের গন্ধ, আরতি। পূজা মানে কেমন আছ? অনেক দিন দেখা নেই? ক্যামেরা আন নি? গতকাল কেন এলে না? বাঙালি মেয়েদের অভিযোগ। পূজা মানে বিশ্বরূপ, সুমিতদের সাথে দেখা। ছাত্রজীবনের স্মৃতিচারণ, কারো কারো পিণ্ডি চটকানো। এবারও ব্যতিক্রম ছিল না।  মস্কো, ১২ অক্টোবর ২০২৪

হুকুমদার

Image
আমাদের শাসন ব্যবস্থাই স্বৈরাচারী। আগের সরকার নির্দেশ জারি করত ঢাকা শহরে রিকশা চলবে না।‌ বর্তমান সরকার বলছে ২০ বছরের পুরানো গাড়ি ও ২৫ বছরের পুরানো মাল গাড়ি চলবে না। এই দু'টো উদ্যোগ ভালো তাতে সন্দেহ নেই। এসব গাড়ি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর, জনজীবনের জন্য ক্ষতিকর। তবে এসবই আবার অতি প্রয়োজনীয়। এছাড়া এসব গাড়ির সাথে জড়িত হাজার হাজার মানুষের জীবিকা। পুরানো গাড়ি সরাতে হলে আগে নতুন গাড়ির ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার যদি এসব ব্যবস্থা করে গাড়ি সরিয়ে নেয় তাহলে সমস্যা নেই। তবে দেশের ইতিহাস বলে সরকার বিভিন্ন অজুহাতে কারখানা বন্ধ করতেই বেশি পারদর্শী, কর্মস্থল তৈরিতে তারা হয় অপারগ অথবা অনিচ্ছুক। আচ্ছা যারা গাড়ি চালায় তারা তো চাকরি চায় না, বরং উদ্যোগী হয়ে দু চারজনকে চাকরি দেয়। তাই না? সব দেখে মনে হয় সরকার তো নয় হুকুমদার।  মস্কো, ০৬ অক্টোবর ২০২৪

কৌশল

Image
রুশরা বলে পবিত্র স্থান কখনও খালি থাকে না। রাজনীতি এর ব্যতিক্রম নয়। একটা সময় ছিল যখন কমিউনিস্টরা ন্যাপ, আওয়ামী লীগ ইত্যাদি দলের কর্মী হয়ে রাজনীতি করত, এসব দলের রাজনীতি প্রভাবিত করত। এবং সেটা করত সাফল্যের সাথেই। সেই সময়ের আওয়ামী লীগের চরিত্র দেখলেই তা বোঝা যায়। প্রকাশ্য রাজনীতি করার ক্ষেত্রে বাঁধা সৃষ্টি হলে জামাত শিবির আওয়ামী লীগে সম্পৃক্ত হয়ে রাজনীতি করেছে, আওয়ামী লীগকে জামাতি চেহারা দিয়েছে। যেটা কমিউনিস্টরা করতে ব্যর্থ হয়েছে জামাত শিবির সেই সুযোগ নিয়ে নিজেদের শক্তিশালী করেছে, সুযোগ বুঝে সামনে এসেছে। যতদিন কমিউনিস্টরা আওয়ামী লীগের ভেতরে থেকে কাজ করছে তারা আওয়ামী লীগকেই শক্তিশালী করতে চেয়েছে। জামাত শিবির করেছে উল্টো - তারা আওয়ামী লীগকে জনবিচ্ছিন্ন করতে চেয়েছে, করেছে। এটা আবারো বলে রাজনীতিতে বন্ধু বলে কিছু নেই, আছে দলীয় স্বার্থ, আছে রণকৌশল। কোন দলের সাথে কখন মিত্রতা, কখন মিত্রতার ভান আর কখন শত্রুতা করতে হবে সেটাও রণকৌশলের অঙ্গ। এর উপর নির্ভর করে সাফল্য। দুবনা, ০৫ অক্টোবর ২০২৪

রিসেটের ক্ষুদ্র ঋণ

Image
এবারের কোটা সংস্কার আন্দোলন কোন অবস্থাতেই মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী আন্দোলন ছিল না। এটা ছিল মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে দলীয় বলয় থেকে বের করে আনার আন্দোলন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ হলেও সেটা করেছে দেশের সাধারণ জনগণ, এদেশের কৃষক, শ্রমিক, খেটে খাওয়া মানুষ। আর ফসল উঠেছে অন্যের ঘরে। স্বাধীনতার অর্জনের হিস্যা নিতেই ছাত্র জনতা মাঠে নেমেছিল। এই অবস্থায় রিসেট বাটনের বয়ান দেশের মানুষকে তাদের অধিকার থেকে আবারো বঞ্চিত করা, নতুন ব্যাঙ্ক খুলে জনগণকে নতুন করে নতুন স্বাধীনতার ক্ষুদ্র ঋণের জালে আটকানো। ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের ও দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ তার চলার পথ ১৯৭১ সালেই সেট করেছে। এটা আর রিসেট করার অপেক্ষা রাখে না। জনগণের জন্য সত্যিই কিছু করতে চাইলে একাত্তরের প্রতি সম্মান জানিয়েই করতে হবে। ১৯৭১ জনগণের রায়। এটা জাতির সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। তাই নো ধানাই পানাই, নো রিসেটের ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্প। দুবনা, ০৪ অক্টোবর ২০২৪

প্রশ্ন

Image
হিজাব না পরায় ঢাকায় এক বিদেশি মহিলাকে হেনস্থা করার ভিডিও দেখলাম ফেসবুকে। প্রথম আলো জানাল ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য পর্দা বাধ্যতামূলক করা হবে। কেউ একজন বলল পূজা করতে চাইলে কোলকাতা গিয়ে করুন। স্বৈরাচারের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল অন্যের উপর নিজের মতামত চাপিয়ে দেয়া। বর্তমানে যে পরিস্থিতি দেশে বিদ্যমান সেটা যদি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় তাহলে সেই স্বৈরাচার বিগত দিনের সব রেকর্ড ম্লান করে দেবে। নিজেদের প্রগতিশীল, শিক্ষিত, মুক্তমনা বলে দাবি করেন এমন যেসব মানুষ এই মধ্যযুগীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম হওয়ার পথ সুগম করে দিলেন তারা জনগণকে কী বলবেন? দেশের জনগণ কিন্তু এমনটি কখনোই চায়নি। বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষ যাদের সংসারে দুবেলা অন্ন মেয়েদের কাজের উপর অনেকাংশে নির্ভর করে। আপনারা না হয় ইউরোপ আমেরিকায় পাড়ি জমাবেন বা সেখানেই বসে আছেন। দেশের কোটি কোটি মানুষ যারা এখনও জারি সারি গায় তাদের কথা কি ভেবেছেন কখনও? একদল ঈশ্বরের দোহাই দিয়ে নিজেদের খায়েশ মেটায় আর আপনারা সেটা করেন জনগণের দোহাই দিয়ে। কিন্তু না ঈশ্বর না জনগণ কেউই আপনাদের তাদের জন্য কিছু করতে বলেনি। বরং তারা চায় আপনারা তাদের নিজেদের মত

কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়

Image
২০০৭ সালে আমার সোলো ফটো এক্সিবিশনের ছবিগুলোর বেশিরভাগ ছিল বাসা থেকে অফিসে যাওয়ার পথের ধারের ফুল, পাতা, ঘাস ইত্যাদির। যখন লোকজন শুনল এসব তাদের চলার পথের ধারে তোলা, বিশ্বাস করতে চাইল না, বলল - আমিও তো ওপথে গেলাম, দেখিনি তো। http://bijansaha.ru/albshow.html?tag=75 ২০১৬ সনে আমার এক বন্ধুর পোস্ট ছিল, আমি, আমার বন্ধুরা, ছেলেমেয়ে, ওদের বন্ধুরা, কলিগরা কেউই ট্রাম্পকে সমর্থন করে না। ও এত ভোট পায় কোত্থেকে? দেশে থাকাকালীন যখন ছাত্র ইউনিয়ন, খেলাঘর, কমিউনিস্ট পার্টি ইত্যাদির সাথে জড়িত ছিলাম তখন আশেপাশের সবাই শুধু সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ইত্যাদির কথা বলত। কিন্তু কোন ভোটেই আমাদের টিকির দেখা মিলত না। এক বিপ্লবী বন্ধু দেশে বেড়াতে গিয়ে লিখল কয়দিন ধরে সারা দেশ চষে বেড়ালাম। একটাও জামাত শিবিরের দেখা মিলল না। সব মিথ্যা কথা। অথচ হিজাব না পরায় মহিলারা আক্রান্ত হচ্ছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে মূর্তি ভাঙা হচ্ছে, মাজার ভাঙা হচ্ছে, আগের মতই মিছিলে গুলি চলছে। এসবের প্রামাণ্য ভিডিও আছে। এমনকি প্রধান উপদেষ্টা সেটা স্বীকার করেছেন। আমরা সাধারণত নিজেদের ভুল দেখি না কারণ সেটা ভুল মনে করি না। ছাত্রলীগ