স্বৈরাচার
রাজনৈতিক, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তৎপর ও সফল প্রগতিশীল অনেক মানুষের ২০২৪ এর বিপ্লবে ভূমিকা আমার মনে দৃঢ় বিশ্বাসের জন্ম দিয়েছিল যে অন্ধ বিশ্বাসের মত অন্ধ ঘৃণাও ধ্বংসের পথ সুগম করতে পারে। তারপরেও আশা ছিল ইতিহাস আমাদের শিক্ষা দেবে। সোভিয়েত ইউনিয়নে মানুষ ছিল অনেক বেশি শিক্ষিত, দেশ শিল্পে, শিক্ষা দীক্ষায় অনেক বেশি উন্নত। কিন্তু অল্প কিছু মানুষ অল্প কিছু সময়ের মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়নের সব অর্জনকে নাই করে দিয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বার বার বাংলাদেশ সম্পর্কে আশংকার কথা লিখেছিলাম। এখন যে বিভিন্ন দিবস বাতিল হচ্ছে এটা ১৯৯১ পরবর্তী সময়ে সোভিয়েত ইতিহাস মুছে দেবার মত - শুধু ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। সেখানেও অর্থনীতিবিদরা ছিল প্রধান ভূমিকায় আর এসব হয়েছিল আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্বের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে। ১৭ বছর লেগেছিল ঘুরে দাঁড়াতে। এখনও সেটা সম্পন্ন হয়নি। তখন এদেশের মানুষ পাছে কমিউনিস্ট বলে গালি দেয় এই ভয়ে মুখ খোলে নাই। দেশে ভয় পায় পাছে স্বৈরাচারের দোসর বলে। কিন্তু না দেশে, না এখানে কোথাও জনগণ এদের ইতিহাস পরিবর্তনের ম্যান্ডেট দেয়নি, দিয়েছিল দুর্নীতি দমন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে যেমন সোভিয়েত ইউনিয়নে দিয়েছিল সামাজিক অর্জন বজায় রেখে অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে। মানুষের মৌনতা এদের শক্তিশালী করবে। বর্তমানে যা চলছে সেটা বাংলাদেশের ইউক্রেনীকরণ। যত দ্রুত জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলো এর প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ হবে তত দ্রুত এই অরাজনৈতিক স্বৈরাচারের হাত থেকে মাতৃভূমি মুক্ত হবে। মনে রাখবেন স্বৈরাচার সংক্রামক রোগ। যারাই ক্ষমতায় যায় এই রোগ তাদেরই
আঘাত করে।
দুবনা, ১৭ অক্টোবর ২০২৪
Comments
Post a Comment