বাস্তবতা
বাংলাদেশ জ্বলছে। কোথাও পুড়ছে সংবাদপত্র, কোথাও বাদ্যযন্ত্র আবার কোথাও বা হিন্দু শ্রমিক। যারা ভাবছেন এটা মতিউর রহমান বা মাহফুজ আনাম - তাদের বলব, এমনকি এই মব অপসংস্কৃতি উস্কে দেবার পরেও তাদের ঠ্যাঙানোয় আনন্দিত হবার কিছু নেই। কারণ সেখানে পুড়ছে আমার, আপনার বাকস্বাধীনতা। জাতীর জীবনে মৌণতার চেয়ে অপ্রিয় কথাও ভালো। ছায়ানট পুড়ছে বলে যদি কেউ নিজেকে নিরাপদ ভাবেন তাদের মনে রাখা দরকার যে শুরুটা হয়েছিল বাউল দিয়ে। ছায়ানট শেষ নয়। একসময় ধান কাটতে কাটতে আপনার গাওয়া গানটিও রেহাই পাবে না। গান তো বটেই একদিন কথা বলারও অধিকার থাকবে না। যদি কেউ ভাবেন যাকে পুড়িয়ে হত্যা করা হল সে তো হিন্দু শ্রমিক। না, সেও একজন মানুষ। আপনি যদি মানুষ হন, তাহলে আপনিও নিরাপদ নন।
এসবই হচ্ছে সরকারের প্রচ্ছন্ন সমর্থনে। সব করা হচ্ছে নিজেদের ক্ষমতায় থাকাটাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য। ইউক্রেনেও ঠিক এভাবেই ফ্যাসিবাদী শক্তি দেশ জুড়ে মবের শাসন কায়েম করেছিল। আজ জেলেনস্কি দেশবাসীর জীবন বিক্রি করে নিজের সম্পদ বৃদ্ধি করছে। যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে যাতে নির্বাচন দিতে না হয়। আমরাও কি সে পথেই হাঁটছি? ইউক্রেনের মত বাংলাদেশেও বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার পাঁয়তারা চলছে। অবশ্য বিরোধী দল কি খুব দরকার? যে দেশে এরকম সরকার সেদেশে বিরোধী দলের দরকার আছে কি?
এতদিনে মনে হয় জুলাই চেতনা মুখোশ উন্মোচন করে মুখ দেখাচ্ছে। কি সেটা? জ্বালাও পোড়াও। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করার জন্য সমস্ত দেশটাকে এক বিশাল বধ্যভূমিতে পরিণত করা। যারা এখনও জুলাইয়ের চেতনায় বুঁদ হয়ে আছেন সেই সব সাবেক বামপন্থীদের বলব একে একে বন্ধু হীন হয়ে অসহায় আত্মসমর্পণ করার আগে একবার ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা করুন, খুব বেশি দেরি হবার আগেই প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। হাসিনা এখন অনেক দূর। ঘাড়ের উপর খড়্গ হাতে দাঁড়ানো ইউনূসকে থামান।
দুবনা, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
Comments
Post a Comment