কী গাব আমি কী শুনাব

 

আমি গান গাই। রাস্তায়, মাঠে ঘাটে। নিজের অজান্তেই গুণ গুণ করে গেয়ে উঠি যদিও জানি গানটা আমার ঠিক আসে না। ছাত্রজীবনে আমাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গাইতাম - আসলে তখন গাওয়ার মানুষ তেমন না থাকায় যাকে বলে আওয়াজ তুলতাম। এখন এমনকি ঘরোয়া আড্ডায় কেউ বললেও হয়তো সাহস করে গাইব না। কারণ জানি আর যাই হোক অন্যকে গান শোনানো আমার কর্ম নয়। এর পরেও যদি আমাকে কেউ গাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে তা আমাকে প্রতিবাদী করবে।

কয়েকদিন আগে হিরো আলমের গানের একটা ক্লিপ কার সৌজন্যে যেন ফেসবুকে এলো। এটা ঠিক চাইলেই সেটা অভারলুক করে চলে যেতে পারতাম যেটা ফেসবুকের অধিকাংশ লেখার প্রতিই করি, তারপরেও কি মনে করে যেন দুলাইন শুনলাম। না শুনলেই ভাল হত। মনে হয়েছে ও গানটা আপলোড না করলেই ভাল করত কেননা আমরা তো নিজেদের সবল দিকটাই অন্যদের দেখাতে চাই, দুর্বলতা নয়। তারপরেও মনে হয়নি ওর গান করার অধিকার কেঁড়ে নিতে হবে। তাহলে? জানি না বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটা কতটুকু প্রযোজ্য তবে আমাদের কিন্তু পাবলিক প্লেসে পায়খানা পেচ্ছাব করার অধিকার নেই। এর মানে এই নয় আমাদের আইন করে পায়খানা পেচ্ছাব করা বন্ধ করে দিতে হবে। বলতে হবে ওটা তুমি টয়লেটে গিয়ে কর। এখানেও তাই। গান তো কথা, সুর অনেক কিছুর সমন্বয়। সেখানে কবি আর সুরকারের নামও থাকে, জড়িয়ে থাকে তাদের মান সম্মান। ফলে আমার গাওয়া যদি কবি ও সুরকারের অধিকার খর্ব করে, তাদের মান হানি করে আমাকে অবশ্যই সেটা ভাবতে হবে। সেদিক থেকে বিচার করলে হিরো আলমকে গান গাইবার অধিকার বঞ্চিত করা যাবে না যদিও সেটা পাবলিক প্লেসে সে করতে পারবে কি না বা সেই গান সে অনলাইনে বা অফলাইনে সম্প্রচার করতে পারবে কি না সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে অধিকার আর দায়িত্ব পাশাপাশি চলে।

দুবনা, ২৭ জুলাই ২০২২




Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা