যৌবন

মস্কো এলাম এক্সিবিশনের ছবি নিয়ে। ২৬ টি ফ্রেম আর ৩৬ টি ফ্রেম ছাড়া। স্মিতা অপেক্ষা করছিল লাইব্রেরীতে। ওকে সেগুলো পৌঁছে দিয়ে বাসায় যাব আর কাল ছবিগুলো ঝুলিয়ে দুবনা ফিরে যাব। 

বারাভিৎস্কায়া মেট্রো থেকে বেরিয়ে যাচ্ছি মানেঝের দিকে রাস্তা পার হতে। সেখান থেকে রাস্তার উল্টো দিক দিয়ে পেছন ফিরে আসতে হবে। যখন লেনিন লাইব্রেরীর পাশ দিয়ে যাচ্ছি দেখি দ্স্তইয়েফ্স্কি বসে আছেন। বসে ঠিক নেই। উঠবেন না বসবেন সেই ভাবনায় আঁটকে গেছেন। রাস্তা পেরিয়ে মানেঝের ওখানে বেরিয়ে চোখে পড়ল ক্রেমলিনের আলো ঝলমল টাওয়ার। হঠাৎ মনে হল দ্স্তইয়েফ্স্কির দু'শ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাঁর একটা স্ট্যাচু স্হাপন করা হয়েছে মস্কোয়। কিন্তু কোথায় জানি না। ভাবলাম স্মিতাকে জিজ্ঞেস করব। মানেঝ আর ক্রেমলিনের দু'টো ছবি নিয়ে ছবির ব্যাগ দুটি দুহাতে নিয়ে দু'পা এগুতেই দেখি একজন পাঠক বেঞ্চে বসে কি যেন পড়ছেন। এর আগে এই স্ট্যাচু দেখিনি। ব্যাগ রেখে ছবি তুলতে গিয়ে দেখি পেছনে নেমপ্লেট। যদিও দেখে চেনার কোন উপায় নেই তবুও মনে হল "ইনি কি দ্স্তইয়েফ্স্কি?" এগিয়ে গিয়ে পড়ে দেখি ঠিক তাই। যুবক দ্স্তইয়েফ্স্কি পুশকিনের ইয়েফগেনি আনিগিন পড়ছেন। 

যুবক লেনিন বা যুবক রবীন্দ্রনাথের ছবি দেখতে দেখতে এতটাই অভ্যস্ত হয়ে গেছি মনে হয় এঁরা টাক, দাড়ি নিয়েই জন্ম নিয়েছেন‌। দ্স্তইয়েফ্স্কির যৌবনের স্ট্যাচু দেখে ঠিক সেটাই মনে হল।

মস্কো, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা