Posts

Showing posts from February, 2025

নাটক

Image
লেরমন্তভের কবিতার দুটো লাইন এরকম  এসবই ছিল হাস্যকর যদি তা না হত এত কষ্টকর  ওভাল অফিসে ট্রাম্প-ভেন্স-জেলেনস্কি পথ নাটকে ভরে গেছে গতকালের ফেসবুকের পাতা। আসলে প্রথম দৃষ্টিতে এটা একটা কমেডি মনে হলেও বাস্তবে কি তাই? প্রথমেই যেটা মনে আসে তা হল জো বাইডেন থাকলে এমন নাটকীয় পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটত না। তবে সেটা ইউক্রেনের যুদ্ধে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির লয়্যালিটির কারণে নয়, জো বাইডেন হান্টার বাইডেনের অবাধ্যতা দেখে এতটাই অভ্যস্ত যে জেলেনস্কির এই আচরণ গায়ে মাখতেন না। তবে আমার মনে হয় আসল বিপদটা অন্য জায়গায়। ভালো মন্দ যাই হোক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুদ্ধ বন্ধের কিছু বাস্তব পদক্ষেপ নিচ্ছেন। অন্যদিকে ইউরোপ যুদ্ধ চালিয়ে যাবার পক্ষে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ও বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী ট্রাম্পকে তাঁর শান্তির ট্র্যাক থেকে বিচ্যুত করতে ব্যর্থ হয়েছেন। জেলেনস্কির এই আচরণ আসলে প্রায় সম্মিলিত ইউরোপের মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। তাই ছোট্ট এই কমেডির ফলাফল সারা বিশ্বের জন্য প্রচন্ড ট্র্যাজিক হবার সম্ভাবনা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি। দুবনা, ০১ মার্চ ২০২৫

উপলব্ধি

Image
সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙ্গনের পর থেকে গত দশকের শুরু পর্যন্ত সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়া রাশিয়ায় সম্মানজনক ছিল না। সবাই চেষ্টা করত কোন না কোন অজুহাতে বাধ্যতামূলক ভাবে সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়া থেকে বিরত থাকতে। যোগ না দেবার বিভিন্ন আইনি ও বেআইনি উপায় ছিল। বেআইনি উপায়ের একটি ছিল মিথ্যা মেডিক্যাল সার্টিফিকেট কেনা। আইনির মধ্যে পড়ত ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়া। সেক্ষেত্রে আর্মি থেকে পুরোপুরি মুক্তি না পাওয়া গেলেও কয়েক বছর সময় পাওয়া যেত। এই সময়ের মধ্যে যদি কেউ দুটো বাচ্চার বাবা হত তাহলে আর আর্মিতে যাওয়া বাধ্যতামূলক ছিল না। আমি তখন দুবনা ইউনিভার্সিটিতে কিছুদিন পড়িয়েছিলাম। কেউ ছাত্রদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে অভিজ্ঞতার আলোকে বলতাম - ছেলেরা পড়াশুনা করতে চায় না, তবে আরও বেশি করে চায় না আর্মিতে যেতে। আজকাল কেউ সরকারের সঠিক সমালোচনা করলেও অনেকেই তাকে স্বৈরাচারের দোসর বলার চেষ্টা করে। আমার ধারণা এরা কেউই স্বৈরাচার চায় না তবে আরও বেশি চায় না বর্তমানের অরাজকতা, আইনহীনতা আর বাংলাদেশের পাকিস্তানিকরণ। দুবনা, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

নরক

Image
গত ২২ ফেব্রুয়ারি আমরা অনলাইনে একুশের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করলাম। অনেকেই এসেছিলেন, আবার অনেকেই আসতে পারেননি। যারা আসতে পারেননি তাদেরই একজন ফোন করল - আসলে সারা রাত কাজে ছিলাম, তাই আর যোগ দেয়া হয়নি। - কোন সমস্যা নেই। এর পরে যোগ দিলেই হবে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলাপ। কথা হল সংগঠন সম্পর্কে। এক সময় বলল - প্রায়ই ভাবি সংগঠন করা ছেঁড়ে দেই। তবে কেন যেন হয়ে ওঠে না। - এমনিতেই কি আর বলে ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে। - তা যা বলেছেন। তাও আজকাল প্রায়ই এসব বাদ দিতে ইচ্ছে করে। - কয়েক দিন পরে নরকে যাবে। যে কয়দিন আছ এখানেই আনন্দ করে যাও না হয়। - কেন? নরকে এসব নেই? - সারা দিন যদি গরম তেলে ডুবে থাকতে হয় সংগঠন করার সময় কোথায়? - আর যদি স্বর্গে যাই? - তাহলে এসব করতে দেবে না। সংগঠন করা মানেই তো কারো না কারো আদেশ অমান্য করা। আদমের কথা ভুলে গেলে? - কিন্তু আমি নরকে যাব সেটা আপনাকে কে বলল? - কেউ না। আমি এমনিতেই বললাম। তবে দুই ধরণের মানুষ যে নরকে যাবে সেটা গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি। - তারা আবার কারা? - সমকামী আর ডায়াবেটিকসের রোগী। - কেন, তারা কি এতটাই পাপী? - প্রশ্ন পাপে পুন্যে নয়। প্রশ...

যার শেষ ভালো না

Image
ছোটবেলায় বাবা কাকাদের মুখে শুনতাম ব্রিটিশ আমলেই ভালো ছিল। না না, তাঁরা ব্রিটিশদের ভক্ত ছিলেন না। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা সেই সময়ের আইন শৃঙ্খলা আর নিরাপত্তার কথা বলতেন। মানুষ সব সময়ই চায় নিশ্চয়তা - তার কাজের নিশ্চয়তা, ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা, ঘরে ফেরার নিশ্চয়তা, নিরাপদে ঘুমানোর নিশ্চয়তা। আমার প্রায়ই মনে হয় সোভিয়েত আমলের কথা যখন রাস্তাঘাটে, ট্রেনে বাসে সবাইকে দেখেছি নিশ্চিন্ত মনে বই বা খবরের কাগজ পড়তে। এখন বুঝি - এর কারণ ছিল আগামী দিনের নিশ্চয়তা। সবাই জানত আগামী কাল সে কাজে যাবে, তার ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাবে, আগামীকালও রুটির দাম আজকের মতই থাকবে, মাংসের দাম বাড়বে না, অসুখ হলে হাসপাতালে চিকিৎসা পাবে। অনেক না থাকার মধ্যেও এই যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর নিশ্চয়তা - সেটাই বা কম কিসে? গত জুলাই আগস্টে দেশের মানুষ নিশ্চয়ই একটি উন্নততর বাংলাদেশ চেয়েছিল। তারা দুর্নীতিমুক্ত ও স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশ চেয়েছিল। কিন্তু সেটা কোন মতেই নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্খলার বিনিময়ে নয়। ফেসবুকে মাঝে মধ্যে ভিডিও দেখি - অল্পবয়সী ছেলেরা কিরিচ হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর যাত্রীরা অসহায় ভাবে বসে আছে। মানুষ কি এজন্যেই রাস্তায় নেমেছিল? যারা ...

প্রশ্ন

Image
ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাসে দেখলাম প্রধান উপদেষ্টা ডঃ ইউনুস বলেছেন "কথায় কথায় বিশ্ববিদ্যালয় করে ফেলি আমরা। এর সাথে একটি করে নার্সিং কলেজ করে দিলেই আমরা অনেক নার্স পেতে পারি। বিশ্বে নার্সের চাহিদা কোনদিন শেষ হবে না।" সব ঠিক আছে। নার্সের দরকার আছে। কিন্তু বিশ্বে কোনদিন নার্সের অভাব হবে না এর মানে কি মানে আমরা দেশে হাসপাতাল তৈরি করব না? মানুষকে দেশের খরচে লেখাপড়া শিখিয়ে বিদেশে পাঠাবো? উনি উদ্যোগী হতে বলেন কিন্তু চাকরি করতে উৎসাহিত করেন না। তার মানে কি সরকার চাকরি সৃষ্টিতে আগ্রহী নয়। আগ্রহী শ্রমিক রপ্তানিতে। আমার কেন যেন মনে হয় আমাদের উন্নয়নের ধারণায় কোথাও একটা ভুল আছে। দেশের মধ্যে যদি বাজার তৈরি না হয়, দেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা যদি বাড়ানো না যায় তাহলে আমরা শুধু খড়কুটো হয়ে জ্বলে বিদেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পারব। এতে দেশের কী লাভ হবে সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না। দুবনা, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

দায়বদ্ধতা

Image
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা বুদ্ধিজীবীদের অনুপস্থিতি। তারা হয় সভাকবি না হয় প্রতিপক্ষ। সভাকবিরা রাজার গুণগান গেয়ে বেড়ায়, রাজার ভালো মন্দ সব জায়েজ করে। যারা নিজেদের প্রতিপক্ষ মনে করে তারা সরকারের ভালো মন্দ সব কিছু নাকচ করে দেয়। একই ঘটনা ঘটে বিরোধী দলের ক্ষেত্রেও। ফলে কী সরকারি দল কী বিরোধী দল সবাই নিজেদের উদ্দেশ্যে গঠনমূলক সমালোচনা থেকে বঞ্চিত যা তাদের ভুল সংশোধনের পথে বড় বাধা। স্বাভাবিক ভাবেই সরকারই যেহেতু রাষ্ট্রের ভালো মন্দের জন্য দায়বদ্ধ তাই তাদের কাজই রাডারে থাকে। সরকারের কাজ নিয়েই কথাবার্তা হয়। সমস্যা হল আগে আওয়ামী সরকারের সমালোচনা করলে হয় রাজাকার না হয় আওয়ামী বিরোধী ট্যাগ লাগাত। এখন বর্তমান সরকারের সমালোচনা করলে বলে স্বৈরাচারের দোসর। অথচ এরা শুধুই বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলে, যা দেশের জন্য ভালো মনে করে সেটাই বলে কোন দলের প্রতি দায়বদ্ধতা ছাড়া। ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগের এক বন্ধু বলল তুই সব সময় আওয়ামী লীগের সমালোচনা করিস। কাজটা ভালো করিস না। আমি আর কি করব। বললাম তোরা চুরি করবি আবার চোর বললে মাইন্ড করবি। চুরি করা বাদ দে দেখবি আমার সমালোচনাও বন্ধ হয়ে গেছে। সবাই নিজেদের...

উপলব্ধি

Image
সূর্য কিন্তু জানে না যে সে মানুষকে আলো ও তাপ দিচ্ছে। তবে মানুষ ঠিকই জানে সূর্যের কথা। পেছনে সৈন্য আছে কিনা সেটা সেনাপতিরা জানাটা যত না গুরুত্বপূর্ণ তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেনাদের জানা যে তাদের সামনে সেনাপতি আছে। সেনাদের এই বিশ্বাস যুদ্ধে জয়ের পূর্বশর্ত। শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধ চলছে সেটা জানতেন কিনা তা বড় কথা নয়, বড় কথা দেশের জনগণ বিশ্বাস করত তিনি যুদ্ধের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এই বিশ্বাস ছিল বলেই দেশ স্বাধীন হয়েছিল। বদরুদ্দীন উমর বলেছেন "মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব তো দূরের কথা মুজিব জানতেনই না যুদ্ধ হচ্ছে।" এটা আমাদের হালের বুদ্ধিজীবীদের চিন্তার অগভীরতা প্রমাণ করে। ওনাকে আগে মোটামুটি প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী হিসেবে জানতাম। ইদানিং কালে তার লেখা পড়ে মনে হয় উনার নাম আল বদর উদ্দীন উমর হলেই যথার্থ হত। দুবনা, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আয়না ঘর মুক্তি পেল

Image
আসিতেছে, আসিতেছে আয়না ঘর আসিতেছে - এই বিজ্ঞাপনের পর আয়না ঘর নিয়ে লোকজনের আগ্রহের সীমা ছিল না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যা দেখানো হল তাতে মনে হল এটাও ছিল মেটাক্যুলাস প্ল্যানের একটি অংশ। আয়না ঘর তো আর হাওয়ায় মিলিয়ে যাবার নয়, বলেছে যখন সেটা দেখাতেই হবে। আর যদি না থাকে তাহলে? মিথ্যার এই বিরাট সমস্যা - একটা মিথ্যা ঢাকা দিতে অনবরত মিথ্যা বলে যেতে হয় যাতে সত্য প্রকাশিত না হয়। আয়না ঘর নাটক থেকে একটাই সিদ্ধান্তে আসা যায় ভদ্রলোক রাষ্ট্র চালানোর মতই মিথ্যা বলতেও অকৃতকার্য, অন্ততঃ ট্যাক্সের সাথে জড়িত নয় এমন ব্যাপারে। কপালে দুঃখ আছে। কপালটা কার নিজেরাই ঠিক করে নিন। তাহলে কি আমি আয়না ঘরে বিশ্বাস করি না? আমি কোন কিছুতেই বিশ্বাস করি না। সব কিছুর প্রমাণ চাই, যৌক্তিক প্রমাণ। দেখুন আয়না ঘর যেমন তেমন ঘর নয়, এটা অত্যাচারের প্রতীক, অপরাধের প্রতীক। আর অপরাধ প্রমাণের জন্য কী দরকার? এভিডেন্স। আপনারা ছয়মাস ধরে ধুয়ে মুছে এখন একটি ঘর প্রদর্শন করলেন আর বলছেন এটা খেতে? কেনরে ভাই? আপনাদের তো শেখ হাসিনার অপরাধের এভিডেন্স মুছে ফেলার কথা ছিল না। তাহলে? এ থেকেই প্রশ্ন জাগে আসলে এটা মন গড়া কথা। আর সেটা প্রমাণ করার জন্য তড়...

মুখ ও মুখোশ

Image
চৈত্র মাসে আমাদের এলাকায় চৈত্র পূজা হয়। বিভিন্ন মুখোশ পরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাচে লোকজন। অনেকে একাধিক মুখোশ পরে। লাওস, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড এসব দেশেও মুখোশ পরে নাচার সংস্কৃতি বিদ্যমান। এমনকি দুর্গাপূজার সময় আমরা যে মহিষাসুরের দেখা পাই সেও একের পর এক রূপ বদলিয়ে শেষ পর্যন্ত মহিষের রূপ ধারণ করে। এসব কথা মনে হল সমন্বয়কদের মুখোশ খোলার প্রক্রিয়া দেখে। ছয় মাস আগে যারা শেখ মুজিবের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিল, শেখ হাসিনাকে গণতন্ত্রের মানসকন্যা বলে মুখে ফেনা তুলত আজ তারাই নিজেদের জামাত শিবিরের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে জনসমক্ষে হাজির হচ্ছে। একদিকে তারা একাত্তরকে অস্বীকার করছে, অন্যদিকে বইমেলা আয়োজন, একুশের পদক, স্বাধীনতা পদক এসব দিয়ে যাচ্ছে। এসব দেখে মনে হতে পারে তারা সত্যিকার অর্থেই স্বৈরাচার বিরোধী ও বাংলাদেশের পক্ষের মানুষ। আমার সন্দেহ জাগে যে এরা আবারও নতুন রূপে আবির্ভূত হবে। শুধু সময়ের অপেক্ষা, যখনই নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জিত হবে তখনই পুরানো পোশাক ফেলে নতুন পোশাকে অবতীর্ণ হবে। এটাও এখনও পর্যন্ত যারা বাংলাদেশে বিশ্বাসী তাদের মধ্যে ভাঙ্গন ধরানোর মেটাক্যুলাস প্ল্যান। দিন দিন ওরা শক্তিশালী হচ্ছে আর আম...

মব

Image
আজকাল মব নিয়ে খুব কথা হচ্ছে। আগে ছিল মগের মুল্লুক এখন দেশ হল মবের মুল্লুক। কিন্তু এটা কি নতুন কিছু? হাটে চোর ধরা পড়লে গণপিটুনি ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। পকেটমারের ক্ষেত্রেও তাই। অন্যান্য দেশে অপরাধী সন্দেহে কাউকে যেখানে পুলিশের হাতে তুলে দেয়, দেশে জনগণ নিজেরাই বিচারক হয়ে শাস্তি নিশ্চিত করে। এর কারণ হয়তো পুলিশ, প্রশাসন, বিচার বিভাগ সব কিছুর প্রতি মানুষের অবিশ্বাস। বিভিন্ন দলের নিজস্ব পেটোয়া বাহিনী থাকলেও সরকার কর্তৃক মবের ব্যবহার এই প্রথম। এতে একদিকে যেমন জনতার সাথে সরকারের সম্পৃক্ততার কথা বলা যায় অন্যদিকে তেমনি জনতার কাঁধে দোষ চাপিয়ে নিজেদের নিরাপদ দূরত্বে রাখা যায়। দীর্ঘ দিন যাবৎ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের কমিটি নির্বাচনে বিভিন্ন গ্রুপের সমর্থকদের শক্তির ব্যবহার আমরা দেখে এসেছি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যদি নিজ নিজ সমর্থকদের পরিবর্তে মবের ব্যবহার দেখা যায় তাতেও অবাক হবার কিছু থাকবে না। শুধু তাই নয় দেশে হয়তো অনেক বেকার যুবক মবের দলে নাম লেখাবে এবং দিন মজুরদের মত অর্থের বিনিময়ে যে যখন ডাকবে তার দলে কাজ করবে। উদীচির নির্বাচনের বিবরণ শুনে মনে হয় ফ্রিল্যান্সিং মবের ভবি...

প্রশ্ন

Image
এক দল লোক আছে যাদের স্বাস্থ্য কখনও ভালো হয় না মানে যারা মোটা হয় না। আগে ভালো স্বাস্থ্যের আরেক নাম ছিল নাদুসনুদুস চেহারা। হাড্ডি চর্মসার বা স্লিম অনেক লোকজন প্রায়ই অভিযোগ করত যে এত ভালো আর দামী খাবার খায় কিন্তু স্বাস্থ্য কিছুতেই ভালো হয় না।  বাংলাদেশের সব সরকার সবসময় দেশের উন্নয়নের ফিরিস্তি দেয়। তেপান্ন বছর ধরে এই যে উন্নয়নের জোয়ার বয়ে গেল দেশটির উপর দিয়ে তারপরেও জনগোষ্ঠীর এক বিশাল অংশের হাড্ডিতে মাংস গজায় না কেন? সমস্যাটা কোথায়? এটা রাজনীতিবিদদের মিথ্যাচার নাকি দেশের আমরণ কোষ্ঠকাঠিন্য?  আমরা আর কবে সুস্থ হব? তেপান্ন বছর কাটলো প্রতীক্ষায়! কেউ কথা রাখে না। সবাই শুধু মিথ্যা স্বপ্ন দেখায়। মস্কো, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বিধি বাম

Image
বত্রিশ নম্বর ভাঙ্গা প্রসঙ্গে বাম জোটের বিবৃতি দেখে একটা কথাই মনে হল - নপুংশক। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে আপনাদের সামনে একটাই পথ খোলা ছিল - প্রতিরোধ গড়ে তোলা, নিদেনপক্ষে তীব্র প্রতিবাদ জানানো। কিন্তু আপনারা এই ঘটনার নিন্দা করার সৎ সাহস পর্যন্ত দেখাতে পারলেন না, আবারো ঐ হাসিনার কাঁধেই দোষ চাপানোর চেষ্টা করে নিজেদের মুখ (প্রাণ) রক্ষা করার অপচেষ্টা করলেন। মাথা হেঁট হয়ে যায়। বিগত ১৫ বছর তো হাসিনার ভুলের সমালোচনা করেই নিজেদের প্রাসঙ্গিক রাখার চেষ্টা করলেন। নিজেদের কাঁধে কবে দায়িত্ব নেবেন, কবে নিজেরা নিজেদের বাঁচাতে শিখবেন। রাজনৈতিক ভাবে আপনারা যে দীর্ঘদিন ধরেই কোমায় আছেন সেটা আপনারা টের না পেলেও সারা বিশ্ব কিন্তু বুঝে গেছে আর তাই তো বাংলাদেশ বিরোধী সমস্ত শক্তি আপনাদের বার বার শিখণ্ডীর মত ব্যবহার করছে? ব্যবহার করছে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের নাম বিশ্বের মানচিত্র থেকে মুছে ফেলতে। অবশ্য সোভিয়েত ইউনিয়ন নামের এক বিশাল স্বপ্নকে আপনারা হারিয়ে যেতে দেখেছেন বাংলাদেশ তো সে তুলনায় নস্যি। ধিক্! মস্কো, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

অন্ধ জনে দেহ আলো

Image
দেশ বিদেশের সব রাজনীতিবিদরা বাইডেন হয়ে গেছে। বাস্তবতা বলে যে একটি ব্যাপার আছে তা নিয়ে কেউ ভাবছে না বা তা নিয়ে ভাবার সাধারণ জ্ঞানটুকু তাদের লোপ পেয়েছে। সবাই নিজের একটা বিশ্ব তৈরি করে আনমনে উন্নয়নের খেলা খেলে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার বক্তব্য শুনে মনে হল তিনি বঙ্গভবন থেকে বক্তব্য রাখছেন জনগণকে নিজের উন্নয়নের ফিরিস্তি দিতে। কিন্তু এই উন্নয়নই যে তাঁকে আবারও ঘরছাড়া করল, তাঁর ভক্তদের রক্তে বাংলার মাটি ভিজিয়ে দিল সে বিষয়ে তাঁর কোন ধারণা আছে বলে মনে হল না। এ এক ভয়াবহ অবস্থা। আমার মনে হয় রাজনীতি, সমাজ ইত্যাদি ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা মাপার জন্য নতুন সিস্টেম ব্যবহার করা উচিৎ - প্রতিটি সাফল্যের জন্য পয়েন্ট যোগ করা আর ব্যর্থতার জন্য বিয়োগ করা। তাহলে হয়তো সাফল্যের ফিরিস্তি দিতে গিয়ে নেতারা ব্যর্থতার কথাও মনে রাখবে আর সেজন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চাইবে। ষড়যন্ত্র যে যতই করুক, আওয়ামী লীগের পতনের মূল কারণ তাদের উপর জনতা আস্থা হারিয়ে ফেলেছিল। আওয়ামী লীগ যে সবার জন্য নিরাপত্তা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারে এই বিশ্বাস মানুষ হারিয়ে ফেলেছিল। কেন মানুষ তাদের পাশে ছিল না সেজন্য ষড়যন্ত্র দায়ী নয়, দায়ী আওয়ামী লীগের নিজের অপ...

কথোপকথন

Image
আপনি তো সব সময় বিজ্ঞান বিজ্ঞান করেন। বলেন বিজ্ঞানে শেষ কথা নেই। তাহলে কি পারফেকশন বলে কিছু নেই?  আছে নিশ্চয়ই। আমরা তো সেটার খোঁজেই অবিরাম যাত্রা করি।  এটা কি ঈশ্বরের খোঁজ? তিনি তো পারফেক্ট।  কে বলল? পারফেক্ট মানে কি? মানে যার কোন ভুল নেই, যিনি কখনও ভুল করেন না। তাই তো?  হ্যাঁ!  আচ্ছা, তোমাদের মতে মানুষ সহ সবকিছু ওনার সৃষ্টি। তাহলে উনি ভুল মানুষ তৈরি করলেন কেন? অথবা তোমরা বল জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে ঈশ্বরের হাতে। তাহলে বিয়ে ভাঙে কেন? কেন তিনি এমনকি সঠিক দুইজন লোককে বিয়ের পিঁড়িতে বসাতে পারেন না? আসলে পারফেক্ট তা যা সব অবস্থায় সঠিক ভাবে চলে, সঠিক ফল দেয়। আমরা বলি ঘড়ি পারফেক্ট টাইম দেয়, মানে কখনও স্লো বা ফাস্ট হয় না। ঈশ্বর যদি পদেপদে ভুল করেন, ভুল মানুষের জন্ম দেন, ভুল মানুষকে সঙ্গ দেন তিনি চাইলেও তো পারফেক্ট থাকতে পারবেন না। সঙ্গীরাই তাঁকে নীচে নামাবে। দেখ তাঁর অনুসারী কারা? সবাই না হলেও এক বিরাট অংশ ঠগ, চোর, বজ্জাত। এরাই তাঁর নাম ধরে সবচেয়ে উচ্চস্বরে ডাকে। এই যদি যদি তাঁর সাঙ্গপাঙ্গ তাহলে তাঁর পারফেকশন নিয়ে আমার প্রশ্ন আছে। মস্কো, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫