আয়না ঘর মুক্তি পেল

আসিতেছে, আসিতেছে আয়না ঘর আসিতেছে - এই বিজ্ঞাপনের পর আয়না ঘর নিয়ে লোকজনের আগ্রহের সীমা ছিল না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যা দেখানো হল তাতে মনে হল এটাও ছিল মেটাক্যুলাস প্ল্যানের একটি অংশ। আয়না ঘর তো আর হাওয়ায় মিলিয়ে যাবার নয়, বলেছে যখন সেটা দেখাতেই হবে। আর যদি না থাকে তাহলে? মিথ্যার এই বিরাট সমস্যা - একটা মিথ্যা ঢাকা দিতে অনবরত মিথ্যা বলে যেতে হয় যাতে সত্য প্রকাশিত না হয়। আয়না ঘর নাটক থেকে একটাই সিদ্ধান্তে আসা যায় ভদ্রলোক রাষ্ট্র চালানোর মতই মিথ্যা বলতেও অকৃতকার্য, অন্ততঃ ট্যাক্সের সাথে জড়িত নয় এমন ব্যাপারে। কপালে দুঃখ আছে। কপালটা কার নিজেরাই ঠিক করে নিন।

তাহলে কি আমি আয়না ঘরে বিশ্বাস করি না? আমি কোন কিছুতেই বিশ্বাস করি না। সব কিছুর প্রমাণ চাই, যৌক্তিক প্রমাণ। দেখুন আয়না ঘর যেমন তেমন ঘর নয়, এটা অত্যাচারের প্রতীক, অপরাধের প্রতীক। আর অপরাধ প্রমাণের জন্য কী দরকার? এভিডেন্স। আপনারা ছয়মাস ধরে ধুয়ে মুছে এখন একটি ঘর প্রদর্শন করলেন আর বলছেন এটা খেতে? কেনরে ভাই? আপনাদের তো শেখ হাসিনার অপরাধের এভিডেন্স মুছে ফেলার কথা ছিল না। তাহলে? এ থেকেই প্রশ্ন জাগে আসলে এটা মন গড়া কথা। আর সেটা প্রমাণ করার জন্য তড়িঘড়ি এটা বানানো হয়েছে।

অনেকেই বলছেন যারা আয়না ঘরে বিশ্বাস করে না তারা স্বৈরাচারের দালাল। কিন্তু যা দেখানো হল সেটা বিশ্বাস যারা করে তারা কিসের দালাল? কারণ যে মানুষ যুক্তিতে বিশ্বাস করে, যে প্রশ্ন করতে জানে সে এই নাটকে বিশ্বাস করতে পারে না। তাহলে কি শেখ হাসিনর সময় কোন টর্চার সেল ছিল না? থাকতেই পারে। সব গোয়েন্দা সংস্থার তা থাকে। কিন্তু এটা সেটা নয়।

আয়না ঘর অনেকটা আকাশ থেকে প্রদত্ত বাণীর মত। যদি বিশ্বাস করেন তাহলে আপনি স্বৈরাচার বিরোধী, না করলে নাস্তিক। এ ধরণের ভাবনাই যে স্বৈরাচারী সেটা কি বোঝেন? একটু খেয়াল করে দেখেন - শুধু মানুষগুলো বদলিয়েছে - শাসন সেই আগের মতই আছে। আসল সমস্যা সমাধান না করে এক ইস্যু থেকে অন্য ইস্যুতে লাফাচ্ছে সবাই।

দুবনা, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

Comments

Popular posts from this blog

রিসেটের ক্ষুদ্র ঋণ

প্রশ্ন

পরিমল