Posts

Showing posts from April, 2025

ছাত্র ইউনিয়ন

Image
গতকাল ছিল বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। যারা এই সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল বা আছে এটা তাদের জন্য এক বিশেষ দিন। ১৯৫২ সালের ২৬ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি ছাত্র রাজনীতির গন্ডী পেড়িয়ে জাতীয় রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ছাত্র ইউনিয়নের প্রাক্তনীরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে কাজ করেছে করছে। বর্তমানে অবস্থার অবনতি হয়েছে। ছাত্র ইউনিয়ন আগের মত সেই আদর্শবাদী সংগঠন নেই। এটা বাংলাদেশের সার্বিক অপরাজনীতি ফসল নাকি অন্যকিছু? অনেকের ধারণা সিপিবির আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, নেতাদের ব্যক্তিগত উচ্চাভিলাষ, ক্ষমতার মোহ এসবই ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন, উদীচি, খেলাঘর এসব গণসংগঠনে ভাঙন ডেকে আনে। সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতারা ক্ষেতমজুর সমিতি, কৃষক সমিতি, ট্রেড ইউনিয়নে সরাসরি যুক্ত থাকতে পারে বলে সেখানে ভাঙন হয়তো নেই, কিন্তু যেখানেই তারা প্রকাশ্যে কাজ করতে পারে না সেখানে অন্যদের মাধ্যমে ক্ষমতার লড়াই চালাতে গিয়ে সংগঠনের অস্তিত্ব প্রশ্নের সম্মুখীন করে। যদিও আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে পরিবারতন্ত্রের জন্য অভিযুক্ত করা হয় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির বর্ত...

কাশ্মীর সন্ত্রাস - ধর্মীয় না রাজনৈতিক?

Image
কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় আবার অনেক নিরীহ মানুষ প্রাণ হারাল। এই হামলার পেছনে যে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার হাত রয়েছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। সঙ্গত কারণেই ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা সামনে চলে এসেছে। যারা আক্রমণ করেছে তারা সেটাই চায়। মুর্শিদাবাদ, কাশ্মীর এসব আক্রমণের লক্ষ্য ভারতের ভেতরে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে সেখানকার রাজনীতিতে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করা।  যারা শুধুমাত্র ধর্মীয় চশমা চোখে কাশ্মীর সমস্যা দেখে তাদের মৌলানা আবুল কালাম আজাদের ইন্ডিয়া উইন্স ফ্রিডমের একটি ঘটনা উল্লেখ করতে চাই। ব্রিটিশ ভারতে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের যৌথ সরকার গঠিত হয় নেহেরুকে প্রধানমন্ত্রী করে। মুসলিম লীগ চেয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। সর্দারজি প্যাটেল রাজি হননি। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হন। মুসলিম লীগের লিয়াকত আলী খান হন। অর্থমন্ত্রী। মৌলানা আজাদ লিখেছেন এমনকি প্যাটেল একজন চাপরাশি রাখতে চাইলেও তাকে লিয়াকত আলী খানের দ্বারস্থ হতে হয়। আসলে অনেক আগেই বন্দুকের নলের চেয়েও টাকশাল নিজেকে অনেক বেশি শক্তিশালী করতে সক্ষম হয়েছে। ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে কাশ্মীরকে অস্থিতিশীল করা যায় কি...

কারণ

Image
খাদ্যের অপ্রতুলতা নয়, বন্টনের অসামঞ্জস্য দুর্ভিক্ষের কারণ। নির্বাচন বিধির কারণে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয় না, প্রশ্নবিদ্ধ হয় সেই বিধিমালার পক্ষপাতদুষ্ট প্রয়োগের কারণে। সংবিধান যদি সব নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করে তাহলে বৈষম্য সৃষ্টি হয় ধর্ম বর্ণ এসব বিবেচনায় সংবিধানের পক্ষপাতদুষ্ট প্রয়োগে। আইনে ত্রুটি, উৎপাদনে ঘাটতি এসব থাকতেই পারে, সময়ের সাথে সেসব ঘাটতি পূরণ করাই সুস্থ সমাজের কাজ। তবে প্রধান সমস্যা প্রয়োগে, সমস্যা প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশ ও জাতির স্বার্থে কাজ করার ইচ্ছার অভাব। যতক্ষণ না ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতা প্রত্যাশী রাজনৈতিক শক্তি এবং প্রশাসন নিজেদের মানসিকতার পরিবর্তন করে ততদিন সব সংস্কারই হবে আরও একটি ঝলমলে পুস্তক যার একমাত্র কাজ হবে বুক সেলফে বসে গায়ে ধূলো মাখানো। পাঁচ সাত দশ বছরের জন্য নিজের পছন্দের অনির্বাচিত কোন মানুষকে ক্ষমতায় রাখার দাবি অসাংবিধানিক। এর মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা বা রক্ষা কোনটাই করা যায় না। এই দাবি বাংলাদেশের জনগণের প্রতি, তাদের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা। দুবনা, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

উপলব্ধি

Image
কয়েক বছর আগে থেকে অনেকেই জানত ও বলত যে আওয়ামী লীগের ভেতরে জামাত শিবির ঢুকেছে। ফেসবুকের দেয়াল অন্তত সেটাই বলে। অন্যেরা বললেও আওয়ামী লীগ এতে খুব একটা পাত্তা দেয়নি অথবা ওরা লীগে এতটাই শক্তিশালী ছিল যে পাত্তা দিতে দেয়া হয়নি। ফলে বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সাম্প্রদায়িকতা প্রশ্নে আওয়ামী শাসনের শেষের দিকটা অনেকটা জামাত হেফাজতের শাসন বলেই মনে হয়।কিন্তু এরা যে পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বাম প্রগতিশীল মানুষদের মধ্যেও ঢুকে গেছিল সেটা আমরা বুঝতে পারিনি আওয়ামী লীগের সমালোচনায় ব্যস্ত ছিলাম বলে। ফলে আমাদের কাঁধে বন্দুক রেখে তারা শুধু আওয়ামী লীগকেই ধ্বংস করেনি, একাত্তরের পক্ষের সবকিছু ধ্বংস করেছে, করছে। স্বাধীনতার পক্ষের সব শক্তির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে দেশটাকে আবারও একাত্তর পূর্ব অবস্থায় নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা এখনও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিজয়ের আনন্দে ভাসছি, সামনে অন্ধকারাচ্ছন্ন ভবিষ্যত দেখতে পাচ্ছি না। যখন প্রয়োজন ঐক্য তখন আমরা ব্যস্ত বিভাজনের কুচকাওয়াজ চালিয়ে যেতে। দুবনা, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

জন্মদাগ

Image
আমাদের ইনস্টিটিউটে রিয়্যাক্টর, কোলাইডার এসব আছে বলে সেই প্রতিষ্ঠার (১৯৫৬) সময় থেকেই সেখানে খুব কড়াকড়ি। এখন ঢোকার ও বেরুবার সময় আইডি কার্ড ও চেহারা মিলিয়ে তবে সয়ংক্রিয় দরোজা খুলে। আমি ইচ্ছে করেই এই দাড়ি রাখি তো এই গোঁফ। কিন্তু মেশিন ব্যাটা কেমনে কেমনে ঠিক বুঝে যায় এটা আমি। আজ পর্যন্ত জামাকাপড়, হেয়ারস্টাইল বা দাড়ি গোঁফের পরিবর্তন করে ওকে ঠকাতে পারিনি। তাই ধর্ম বা পোশাক নিয়ে যতই মাতামাতি করি না কেন আমাদের বাঙালিত্ব যে চেহারা চরিত্রে, চলনে বলনে প্রতিটি কোষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে লেখা আছে সেটা কিছুতেই লুকানোর উপায় নেই। আর তাই যদি হয় তাহলে বাঙালিত্ব লুকানোর জন্য এত সময় নষ্ট করে কী লাভ? মনে রাখবেন আরবের বা পাকিস্তানের ওরা আমাদের বাঙালি বলেই ডাকে।‌ তাহলে কেন অযথা নিজের আর অন্যদের জীবন বিষিয়ে তোলা? কবে নিজের পরিচয়ে গর্ব বোধ করবে বাংলার মুসলমান? মস্কো, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

আবারো শুভ নববর্ষ

Image
ছোটবেলায় গাছগুলো যখন ছিল অনেক বড় আর আকাশ ছিল অনেক অনেক দূরে, অনেক যোজন উপরে নববর্ষ ছিল একদমই অন্যরকম। হয়তোবা তখন থেকেই এ নিয়েও রাজনীতি ছিল, ছিল নববর্ষ বা বাংলা পঞ্জিকাকে ব্যবহার করে জাতিভেদের চেষ্টা, তবে গ্রাম বাংলায় চিত্র ছিল ভিন্ন। এর নাম ছিল হালখাতা। মূলতঃ ব্যবসায়ী পরিবারগুলো ঘটা করে পালন করত। অন্যেরা ঘরোয়া ভাবে। ঢাকা ও অন্যান্য জায়গায় এটা সেই সাথে ছিল সাংস্কৃতিক মুক্তির আন্দোলন। তবে যেহেতু তখন পঞ্জিকার রাজনীতি শুরু হয়নি তাই তখন চৈত্র সংক্রান্তি আর পয়লা বৈশাখের আসন দখলের প্রতিযোগিতা ছিল না। এমনকি আশির দশকের শুরুতে, যখন দেশ ছেড়ে বিদেশে আসি তখনও এসবের আগমন ঘটেনি। ইদানিং যখন নববর্ষের ঢেউ এসেছে ফেসবুকে আর মানুষের সাথে যোগাযোগ হয়েছে প্রযুক্তিগত দিক থেকে সহজ এসব ঘটনা সামনে চলে এসেছে।  বাংলা পঞ্জিকার ব্যবহার এখন মূলতঃ বাঙালি হিন্দুদের ধর্মীয় ও বিয়ে ইত্যাদি সামাজিক কাজে সীমাবদ্ধ যা হয়ে থাকে কোলকাতা থেকে প্রকাশিত পঞ্জিকা অনুসারে। সমগ্র বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য বাংলা পঞ্জিকা মূলতঃ পয়লা বৈশাখ আর পঁচিশে বৈশাখের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তাই ১৪ এপ্রিলে পয়লা বৈশাখকে পেরেক ঠুকে গেঁথে দে...

অপশন

Image
গতকাল এক বন্ধু স্ট্যাটাস দিল "আমেরিকার নাগরিকত্ব অথবা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা" আপনি কোনটা বেছে নেবেন। আমার ধারণা যদি সত্যি সত্যি এমন অপশন থাকত দেশের অধিকাংশ মানুষ আমেরিকার নাগরিকত্ব বেছে নিত। আমার ধারণা এমনকি ফিলিস্তিনি জনগণের একটা বিরাট অংশ সেটা করত। কারণ স্বাধীনতা একটা আবেগ আর আমেরিকার নাগরিকত্ব ভবিষ্যতের নিরাপত্তা। মানুষ নিরাপত্তা চায়। ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব এমনকি স্বাধীনতা পেলেও শুধু নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারবে, মানুষের সত্যিকারের মুক্তি আনতে পারবে না। এসব আবেগী স্ট্যাটাস আমার ধারণা বিভ্রান্তিকর। আর আমার নিজের কথা বলব আমেরিকার নাগরিকত্ব আমার কখনোই কাম্য ছিল না, চেষ্টাও করিনি। ফিলিস্তিন স্বাধীনতা পেলে খুশি হব যদিও নিশ্চিত নই যে এতে তাদের সমস্যার সমাধান হবে। তৃতীয় বিশ্বের অধিকাংশ দেশের দিকে তাকালে ভিন্ন উত্তর মেলে না। তবে এটাও ঠিক যারা এই লটারিতে আমেরিকার নাগরিকত্ব বেছে নেবে তাদের একটি বিশাল অংশ আমেরিকার প্রতি ভালোবাসা থেকে এসব করবে না। তারা আগের মতই আমেরিকাকে ঘৃণা করবে, মনে মনে ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষে থাকবে। এমনকি এদের একটা অংশ ভেতর থেকে আমেরিকা ধ্বংস করার জন্য সব কিছু ক...

মঙ্গলানন্দ

Image
সোভিয়েত ইউনিয়ন বা রাশিয়ায় যারা নিজেদের ইহুদি মনে করে এবং রাশিয়ানরা যাদের ইহুদি মনে করে তারাই যখন ইসরাইলে যায় তখন স্থানীয় জনগণের কাছে তাদের পরিচয় হয় রাশিয়ান বলে আর তারাও নিজেদের রাশিয়ান ভেবেই ইসরাইলের সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশের একদল মুসলমানের অবস্থাও অনেকটা সেরকম। তারা নিজেদের যতটা না বাঙালি তারচেয়ে বেশি মুসলমান মনে করে আর মুসলিম দেশে, বিশেষ করে আরব দেশে তাদের পরিচয় হয় ভারতীয় আর ভাগ্য ভালো হলে বাংলাদেশী। এই যে মঙ্গলকে আনন্দে ভাসিয়ে দেয়া এটাও অস্তিত্বের শেকড় সংকটের আরও একটা বহিঃপ্রকাশ। দুবনা, ১২ এপ্রিল ২০২৫

মানুষের পৃথিবী

Image
একসময় ধারণা ছিল শুধু মাত্র বিশ্বব্যাপী বিপ্লবের মধ্য দিয়েই শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করা যাবে। অন্যথায় পুঁজিবাদী ও সামন্ত তান্ত্রিক ব্যবস্থা যাদের মূলে রয়েছে শোষণ তারা নতুন ব্যবস্থা টিকতে দেবে না। লেনিন অনেকটা পরীক্ষামূলক ভাবেই রুশ বিপ্লব করেন। একাত্তর বছর পরে তার পতন ঘটে। এর পেছনে পুঁজিবাদের হাত যেমন ছিল তেমনি ছিল সমাজতান্ত্রিক সমাজের অন্তর্নিহিত দুর্বলতা, সময়ের সাথে পরিবর্তিত হবার ক্ষেত্রে অনমনীয়তা। আজ বিশ্বে সবচেয়ে বেশি দরকার সহমর্মিতা, ন্যায় বিচার। সম্পদের সুষম বন্টন না হলেও কমবেশি ন্যায্য বন্টন ও আইনের সুষম প্রয়োগ। আর এসব সম্ভব যদি সহমর্মিতা, সমবেদনা এসব ক্ষেত্রে মানুষ সিলেকটিভ না হয়। যেকোনো মানুষের মৃত্যু, শিশুর মৃত্যু তা সে প্যালেস্টাইনের হোক, দনবাসের হোক, ইউরোপিয়ান, এশিয়ান, আফ্রিকান, ল্যাটিন বা ইসরাইলি হোক, হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃষ্টান, ইহুদি বা নাস্তিক যেই হোক, যদি সবার মন স্পর্শ করে, মানুষকে ব্যথিত করে। একমাত্র সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই - এই মন্ত্রে দীক্ষিত হলেই আমরা একদিন মানুষের পৃথিবী গড়ে তুলতে পারব। দুবনা, ০৮ এপ্রিল ২০২৫

প্যালেস্টাইন

Image
ইসরাইল প্যালেস্টাইনে যে গণহত্যা চালাচ্ছে তার বিরুদ্ধে অসহায় মানুষ প্রতিবাদ করলেও দুনিয়ার মোড়লরা কমবেশি নিশ্চুপ। বিশেষ করে চোখে পড়ে আরব বিশ্বের মৌনতা। রাজনীতির হিসেব নিকেশে ধর্ম হেরে যায়, হেরে যায় তথাকথিত মুসলিম ভ্রাতৃত্ব। আসলে মানুষ সাধারণত ঐক্যবদ্ধ হয় দুর্বলের বিরুদ্ধে। সবলের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো সহজ নয় বিশেষ করে সবলদের হাতে যদি নিজেদের ক্ষমতার চাবিকাঠি থাকে। আচ্ছা ইসরাইল ছোট্ট একটা দেশ, ক্ষুদ্র তার জনসংখ্যা। ধর্মের ভিত্তিতে গঠিত হলেও সিনাগগ নয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির পেছনে ব্যয় করেছে অঢেল অর্থ। আজ তাদের শক্তির উৎস শুধু আমেরিকার সমর্থন  নয়, মূল উৎস দেশের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত জনসম্পদ।  কয়েকদিন আগে সৌদি যুবরাজের এক সাক্ষাৎকারে দেখলাম সোভিয়েত ইউনিয়নের মোকাবেলা করতে আমেরিকার অনুরোধে তারা দেশে দেশে হাজার হাজার মসজিদ তৈরি করেছে, প্রচার করেছে ওয়াহিবী ইসলাম। কিন্তু এই অর্থ যদি তারা মুসলিম বিশ্বের দেশে দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরির জন্য দিত, আজ যদি প্যালেস্টাইনে তাদের অর্থে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল এসব তৈরি হত, তাহলে সেখানকার মানুষদের বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহাতে হত না। তর...

ট্রাম্পের শুল্ক

Image
ট্রাম্পের শুল্ক নিয়ে বাজার গরম। শুল্ক আর পাল্টা শুল্কে এটা অনেকটা পারস্পরিক নিষেধাজ্ঞার রূপ নিয়েছে। সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পর সোভিয়েত ইউনিয়নের উপর যখন সার্বিক নিষেধাজ্ঞা ছিল তখন এদেশ শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়। বিগত কয়েক বছরে রাশিয়ার উপর যখন ২৩ হাজারের মত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় তখন নব্বইয়ের দশকে ভেঙে পড়া তাদের শিল্প নিজের পায়ে দাঁড়ায়। এখন তাদের প্রবৃদ্ধি যেকোনো পশ্চিমা দেশের চেয়ে বেশি। লোকে বলে আমেরিকায় বিপ্লব না হবার অন্যতম প্রধান কারণ সেখানে আমেরিকার দূতাবাস নেই। আমেরিকা তো নিজের উপর নিজে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে না তাই বিদেশি পণ্যের উপর চড়া শুল্ক আরোপ করে মূলতঃ সেটাই করছে। হিসেব মনে হয় যদি সে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়া নিজেদের শিল্প ঘরে ফেরাতে পারে, নিজের লোকদের জন্য কর্মসংস্থান করতে পারে এবং এর মাধ্যমে রাশিয়ার মত দেশের শিল্প চাঙ্গা করতে পারে। যেন ডলার, রঙিন বিপ্লব আর অস্ত্রের বাইরেও বিভিন্ন জিনিস বাইরে রপ্তানি করা যায়। সত্য মিথ্যা জানি না, তবে চড়া শুল্ক আরোপের পেছনে এমন কারণ থাকলে অবাক হব না। মস্কো, ০৭ এপ্রিল ২০২৫

পোড়া কপালী

Image
আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, ভারত - এসব রাষ্ট্র যাদের জাতীয় স্বার্থ আছে।‌ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কোন রাষ্ট্র নয় তাই তার কোন জাতীয় স্বার্থ থাকতে পারে না। উল্টো বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন জাতীর বিভিন্ন, এমনকি পরস্পরবিরোধী স্বার্থ আছে। যতদিন গ্লোবালাইজেশন, লিবারেল ডেমোক্র্যাসি এসবের বাজার ভালো ছিল ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন রাষ্ট্র না হয়েও দিব্যি চলতে পারত। এখন মন্দার সময়ে তাদের এক করতে পারে ইউক্রেন যুদ্ধ। আর তাই তারা এই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে এত বেপরোয়া। এখন ইউক্রেন যুদ্ধ ইউক্রেনের জন্য নয় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বেঁচে থাকার মহৌষধ। ভারত বিদ্বেষ যেমন পাকিস্তানের অস্তিত্বের সমার্থক, রুশ বিদ্বেষ তেমনি ইইউ এর ঐক্যের সমার্থক, ব্রাসেলসের আমলাদের অস্তিত্বের সমার্থক। তাই যুদ্ধ বেচারা বড়ই বিপদে আছে। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে, এমনকি হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাকে চলতেই হবে। হায়রে যুদ্ধ, তোর কপালে শান্তি নেই, আছে শুধু দুঃখ। দুবনা, ০৬ এপ্রিল ২০২৫

ইতিহাস

Image
বাংলাদেশ কি পরিবারতন্ত্র থেকে ব্যক্তিতন্ত্রের যুগে প্রবেশ করছে? গত পনের বছরে শেখ হাসিনাকে নিয়ে একদল লোকের উচ্ছ্বাস দেখেছি, এখন সেটা দেখছি ডঃ ইউনুসকে নিয়ে। শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া শুধুমাত্র নিজেদের নয়, দু'টো পরিবারের প্রতিনিধি, তারা পারিবারিক সূত্রে রাজনীতির লাইম লাইটে। তবে ডঃ ইউনুস এই সমীকরণের বাইরে। অর্থনৈতিক বিষয়ে ওনার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করার অবকাশ নেই যদিও তাঁর অর্থনৈতিক ধারণা সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। তবে দেশ শুধু অর্থনীতি নয়, দেশ কোন ব্যাংক বা এনজিও নয় যে চাইলেই অপছন্দের লোকদের ছাঁটাই করা যায়। তাই এখানে সাফল্য ও ব্যর্থতা নানামুখী। শেখ হাসিনার পতনের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল কর্মীদের অতি প্রশংসা বা তেল মারা। ডঃ ইউনুসের সমর্থকরা যদি একই ভুল করে তাহলে বুঝতে হবে শিক্ষক হিসেবে ইতিহাস চরম ব্যর্থ। দুবনা, ০৫ এপ্রিল ২০২৫

সাম্য

Image
ইদানিং চীনের সাথে বানিজ্য সুবিধা নিয়ে ফেসবুক সরগরম। বিভিন্ন হিসেবে প্রায় একত্রিশ গুন বানিজ্য ঘাটতির পরেও শুল্ক মুক্ত রপ্তানি সুযোগ পেয়ে আমাদের আনন্দের সীমা নেই। এখন আর অসাম্যের প্রশ্ন নেই। চীন তো ভারত নয়, তাই তার সাথে বানিজ্য ঘাটতি হলেও কোন সমস্যা নেই। তবে বাস্তবতা হল সমস্যা চীন বা ভারতে নয়, সমস্যা আমাদের সেই পণ্যের অভাবে যা আমরা এসব দেশে রপ্তানি করতে পারি। তাই ঘাটতি কমাতে এসব দেশে রপ্তানি যোগ্য পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে হবে। নারী অধিকার, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এসব একান্তই ধারণা যার কোন বস্তুগত রূপ নেই। তাই নারী পুরুষে, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বা গোষ্ঠীর মধ্যে সাম্য থাকুক আর নাই থাকুক এ নিয়ে স্পেকুলেশন করা যায়। পণ্য হল বস্তু, চোখে দেখা যায়। এখানে গলাবাজি করে সমতা আনা যায় না। তাহলে কিভাবে ভারসাম্য রক্ষা করা? এ জন্যেই হয়তো হেন করেঙ্গা তেন করেঙ্গা নামক ক্যারিকেচারের উদ্ভাবন যাতে আর কিছু না হোক আস্ফালন করে মনের জ্বালা একটু কমানো যায়। ছোট্ট মোরগ ঘাড় উঁচু করে স্বপ্ন দেখে....... দুবনা, ০৩ এপ্রিল ২০২৫

শেখ হাসিনা

Image
যে যায় ক্ষমতায় সেই হয় শেখ হাসিনা। সহজে গদি ছাড়তে চায় না। এমনকি ডঃ ইউনুসও না। আচ্ছা যারা তাঁকে বিনা নির্বাচনে আরও ৪-৫ বছর ক্ষমতায় রাখতে চাইছে তাদের আন্দোলনটা কিসের জন্য ছিল - সুস্থ নিরপেক্ষ নির্বাচন নাকি ক্ষমতায় বসে নতুন শেখ হাসিনা সাজা। এ জন্যেই কি গণভবন লুট করে লোকজন শেখ হাসিনার জামা-কাপড় লুট করেছিল - যাতে দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় বসে থাকার কায়দাটা ভালো করে রপ্ত করতে পারে? এখনও মনে আছে যখন আওয়ামী লীগের পরিচিত লোকজন প্রসঙ্গে অপ্রসঙ্গে শেখ হাসিনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠত, ওদের বলতাম তোমরাই শেখ হাসিনার পতনের পথ তৈরি করছ না কারণ তোমাদের কথায় বিশ্বাস করে তিনি বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন। তাছাড়া মানুষ যদি সত্যি সত্যিই ডঃ ইউনুসকে চায়, তিনি তো ভোটে জিতেই ক্ষমতায় থেকে যেতে পারেন। তাহলে একদিকে যেমন তাঁর শত্রুদের মুখ বন্ধ হবে অন্যদিকে তেমনি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাঁকে ছাত্রদের বা জামাত শিবিরের মুখাপেক্ষী হতে হবে না। সমস্যাটা ডঃ ইউনুসের দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা নয়, সমস্যা সাংবিধানিক উপায়ে তাঁকে ক্ষমতায় রাখা। এমনকি কারচুপির নির্বাচনেও অন্য কারো জিতে যাবার ক্ষীণ সম্ভাবনা আছে, কি...