শতবর্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি

প্রাচীন ভারতবর্ষে অন্যতম প্রধান আশীর্বাদ ছিল, "শতায়ু হও!" এ  থেকেই বোঝা যায় এক শ' বছর বেঁচে থাকা সে যুগেও চাট্টিখানি কথা ছিল না।

আজ আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শত বর্ষ পালন করছি। খুব কম লোকই শারিরীক ভাবে নিজের শত বর্ষ পালন করতে পারে। তবে কিছু লোক তাঁদের কর্মের দ্বারা মৃত্যুর সীমানা ছাড়িয়ে যান, নিজেদের কাজের মধ্যে বেঁচে থাকেন শত শত বছর। এরা ক্ষণজন্মা। শেখ মুজিবুর রহমান তাঁদেরই একজন।

আমরা তাঁকে বলি সর্বকালের সর্ব শ্রেষ্ঠ বাঙালী। বঙ্গবন্ধু নিজেও নিজেকে বাঙালী বলেই পরিচয় দিতেন। আর তিনি নিজেকে মনে করতেন সেই বাঙালী জাতীর প্রতিনিধি যেখানে ধর্মের উপরে ছিল ভাষা, ছিল বাঙালী জাতীয়তাবাদ। তাই শেখ মুজিবকে স্মরণ করতে হলে, তাঁকে ধারণ করতে হলে এ কথা আমাদের মনে রাখতে হবে।

অনেকেই, বিশেষ করে যারা বঙ্গবন্ধুর অন্ধ ভক্ত বলেন, "বঙ্গবন্ধুর ব্যাপারে কোন রকম কম্প্রোমাইজ নেই।" আমার সব সময়ই মনে হয়েছে এর মাধ্যমে এরা তাঁদের ভক্তিকে সীমাবদ্ধ করে ফেলেছে। যারা সত্যিকারেই নিঃস্বার্থ ভাবে বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসে, শ্রদ্ধা করে, তারা যত না ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু তার চেয়ে বেশি তাঁর আদর্শকে শ্রদ্ধা করে, তারা তাঁর আদর্শের সাথে কম্প্রোমাইজ করে না। কি সেই আদর্শ? এটা গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ব। সমস্যা হল, আজ যারা জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলে সবচেয়ে বেশি বুক চাপড়াই তাদের একটা বিরাট অংশই তাঁর আদর্শ থেকে বিচ্যুত, অনেকে সেই আদর্শে বিশ্বাসও করি না।

তাই আমরা যদি শত বর্ষে বঙ্গবন্ধুকে সত্যিই শ্রদ্ধা জানাতে চাই, আমাদের বুকে তাঁর ছবি নয়, আদর্শ ধারণ করতে হবে, যে আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে তিনি দেশ স্বাধীন করেছিলেন, সেখানে ফিরে যেতে হবে।  মদিনা সনদ নয়, বাহাত্তরের মুক্তি সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে!

শুভ জন্মদিন! জয় বাংলা! জয় বঙ্গবন্ধু!   

দুবনা, ১৭ মার্চ ২০২০







Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা