যদি

শেষ পর্যন্ত বুদ্ধিও আমার ঘরে বেড়াতে এলো। অন্তত সেটাই মনে হচ্ছে আপাতত। 

এখানে মরিচ খুব একটা পাওয়া যায় না, গেলেও আকাশচুম্বী দাম। আমি অবশ্য খুব যে খাই তাও নয়, তবে কালেভদ্রে খেতে ইচ্ছে করে, বিশেষ করে ডিমের অমলেট। কিছুদিন আগে দেখালাম ৫০ গ্রাম মরিচের দাম ২০০ রুবলের চেয়েও বেশি মানে ৪০০০ রুবলের বেশি কেজি। পরে অবশ্য দাম অনেকটাই কমেছে, তবে কেনা হয়নি। এরপর একদিন বাজারে গেলাম ফল কিনতে, দেখি মরিচ, বেশ বড় তবে দেখে ঝাল মনে হল। এখানে বাজারে সাধারণত মধ্য এশিয়ায় লোকেরা কাজ করে, মূলত আজারবাইজানের। 

মরিচ ঝাল? 

খুব ঝাল। 

তিনটে মরিচ নিলাম ১০০ রুবল দিয়ে, ৫০০ রুবল কেজি। মনে মনে ভাবলাম বেশ লাভ করলাম। বাসায় গিয়ে দেখি মিষ্টি না হলেও এটাকে ঝাল মরিচ বলা যায় না। পানসে মরিচ। তাই দু দিনেই শেষ। অথচ আমি যদি তখন ১২০ রুবল দিয়ে ৫০ গ্রাম মরিচ কিনতাম তাতে এক মাস চলে যেত। ৫০ গ্রামে ১০ থেকে ১৫ মরিচ - অর্ধেক হলেি আমার জন্য যথেষ্ট। তাছাড়া আমি প্রতিদিন মরিচ খাই না। পরে অবশ্য তাই কিনলাম। তাও অনেক দিন হল। এখনও তিনিটে মরিচ পড়ে আছে ফ্রিজে। দেশ থেকে মরিচ আনলে কয়েক দিন পরেই নষ্ট হয়ে যায়। ওরা দিব্যি বেঁচে বর্তে আছে। একেই বলে প্রাণ শক্তি। 

আজ গুলিয়া বলল নার্সারি থেকে একটা লেবুর চারা কিনতে। অফিসে আসার পথে ঢুঁ মারলাম। দেখি ছোট ছোট গাছে বসে মরিচেরা হাসছে।  

এগুলো ডেকোরেটিভ? 

খাওয়াও যায়। 

ঝাল? 

প্রচণ্ড। 

কত করে? 

২০০ রুবল। 

 ৫৫০ রুবল দিয়ে একটা লেবুর চারা আর ২০০ রুবল দিয়ে একটা মরিচের চারা কিনে ওখানে রেখে অফিসে এলাম। ওরা বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কাজ করবে। আন্তন বা গুলিয়া নিয়ে না গেলে কাল নেব।  

অফিসের পথে হাঁটতে হাঁটতে নিজের বুদ্ধি দেখে অবাক হয়ে গেলাম। যদি ওটা বেঁচে যায় আর ঠিক মত দুধ মানে মরিচ দেয় আর মরিচ যদি ঝাল হয় তবে। এতগুলো যদি পেরুতে পারলে আমাকে আর পায় কে? 

দুবনা, ১১ আগস্ট ২০২৩ 

Comments

Popular posts from this blog

রিসেটের ক্ষুদ্র ঋণ

পরিমল

প্রশ্ন