Posts

Showing posts from May, 2025

অনুভূতি

Image
আন্তোয়ান দে এক্সুপেরি তাঁর ছোট্ট রাজপুত্রকে দিয়েছিলেন - যাদের তুমি বশ করেছ তাদের কাছে তুমি দায়বদ্ধ। বাংলাদেশের হাজার হাজার তরুণ তরুণী মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের ডাকে রাজনীতিতে এসেছে। তিনি এতদিন সবাইকে কমিউনিজমের ওয়াজ শুনিয়েছেন। গতকাল তাঁকে দেখলাম প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে গিয়ে মৌলবাদী ও স্বাধীনতা বিরোধীদের ভীড়ে হারিয়ে যেতে। অথচ বন্দুক হাতে তরুণ মুক্তিযোদ্ধা - সেই ছবি শুধু তাঁকেই নয় মুক্তিযুদ্ধকেও ধারণ করেছে এতকাল। এই যাওয়া পার্টির অনুমোদনে হয়েছিল নাকি ব্যক্তিগত উদ্যোগে - সেটা ভিন্ন প্রশ্ন। তবে বিগত দিনগুলোয় সরকার ও তার চ্যালা চামুন্ডারা যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের সব অর্জনকে ধুলিস্যাত করেছে তাতে এই যাওয়াটা বিভিন্ন মহলে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। পার্টি ভাঙার পর পার্টি থেকে বেরিয়ে যাওয়া নেতাদের প্রতি আপনাদের একটাই বয়ান ছিল - সংশোধনবাদী। তবে এটা তো অস্বীকার করার উপায় নেই যে তারা পার্টির নাম ভাঙ্গিয়ে নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলেননি। যখন দেখেছেন আগের বিশ্বাস নিয়ে পার্টি করতে পারবেন না তখন হয় রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছেন অথবা ভিন্ন নামে রাজনীতি করেছেন। কাউকে ধোঁকা দেননি। এটাই ছিল পার্টির প্রতি তাদের সততার প্রকাশ...

বাইপাস

Image
দীর্ঘদিন বিদেশে থেকে একটি বিষয় খেয়াল করেছি - বাংলাদেশী যেখানেই থাকুক না কেন, সে আজীবন বাংলাদেশী থেকে যায়, বিশেষ করে বাংলাদেশী কমিউনিটির মধ্যে। ব্যতিক্রম যে নেই তা কিন্তু নয়, তবে সেটা ধর্তব্যের মধ্যে নয়।  আমাদের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়রা শুধু দেশের বাইরেই আন্তর্জাতিক‌। দেশের ভেতরে আবার যে লাউ সেই কঁদু। ক্ষমতালোভী, অর্থলোভী, ধান্দাবাজ। এটা আমাদের জাতিগত বৈশিষ্ট্য।  ডঃ ইউনুসকে নিয়ে অনেকেই স্বপ্ন দেখে, অনেকেই তাঁকে দেশের ত্রাণকর্তা মনে করে, একজন সহজ, সরল, কর্মঠ ও সৎ লোক মনে করেন যার নিজের কিছু নেবার নেই দেবার জন্য আছে সব - সর্বহারার ঠিক উল্টো রূপ। অবাক লাগে ভেবে যে তিনি জীবনে কখনোই নিজেকে ক্ষমতা বা অর্থের প্রতি নির্লোভ প্রমাণ করতে পারেননি। গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধানের পদ আঁকড়ে রাখার, ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে মানুষের অবস্থা পরিবর্তনের কথা থাকলেও হাজার হাজার সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কারণ হওয়া, এমনকি ক্ষমতায় এসে তড়িঘড়ি করে নিজের প্রতিষ্ঠানের শত শত কোটি টাকা ঋণ মওকুফ, নিজের ব্যাংকের জন্য বিশেষ সুবিধা গ্রহণ করা - এসব আর যাই করুক না করুক তাঁর সততা নিয়ে, তাঁর নির্লোভ চরিত্র নি...

সামঞ্জস্য

Image
কোন আইন কখনোই পারফেক্ট বা নিখুঁত নয়, কেননা সময়ের সাথে নতুন নতুন সমস্যার সম্মুখীন হয় মানুষ আর সেই সমস্যা থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য নতুন সমাধান খোঁজে। এটা যেমন সমাজে, তেমনি বিজ্ঞানে, চিকিৎসায়, চলনে বলনে জীবনের সর্বক্ষেত্রে সত্য। জীবনকে পারিপার্শ্বিকতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হলে এদের অবিরাম পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। কোনটা আগে বা কোনটা পরে প্রশ্ন সেখানে নয়, আসল কথা নিজেদের এই পরিবর্তনের জন্য খোলা রাখা এবং সেটা গ্রহণ করা। কোন ভালো আইনও কোন কাজে আসে না যদি সেই আইনের পক্ষপাতদুষ্ট ব্যবহার হয় আর কোন আইন ভালো হতে পারে না যদি না তা সবার জন্য সমান হয়। আজ সংস্কার আগে না নির্বাচন আগে এ নিয়ে অনেক বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে। সংস্কার প্রয়োজন এটা যেমন সত্য তেমনি সত্য যে এমনকি বর্তমান ব্যবস্থার নিরপেক্ষ প্রয়োগ দেশকে একটি গ্রহণযোগ্য সংসদ উপহার দিতে পারে। আর জনগণের রায়ে নির্বাচিত সরকার যদি জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সংস্কার প্রণয়ন করে তাহলে আর ডিম আগে না মুরগি আগে এই নিয়ে বিতর্ক করে চায়ের টেবিলে ঝড় ওঠাতে হবে না। মস্কোর পথে, ২৫ মে ২০২৫

শেকড়

Image
বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে নিয়ে গুজবের অন্ত নেই। বিভিন্ন দেশে সাংবিধানিক সরকারের পাশাপাশি ছায়া সরকার বা শ্যাডো গভর্ণমেন্ট, ডীপ স্টেট ইত্যাদির নাম শোনা যায়। বাংলাদেশে এদের উপস্থিতি নিয়ে তেমন কিছু শোনা যায় না। তবে অন্যান্য যেকোন সরকারের চেয়ে বর্তমান সরকারের একটি পার্থক্য স্পষ্ট  - সামরিক হোক আর বেসামরিক হোক আগের সরকারগুলো জনগণকে আস্থায় আনার চেষ্টা করত, বর্তমান সরকার বিদেশী শেয়ার হোল্ডারদের বিশ্বাসের উপর বেশি গুরুত্ব দেয়। আগের সরকারগুলোর প্রায় সবটাই জনসম্মুখে ছিল, তারা জনগণের কাছে নিজেদের পাতে তোলার মত একটি ভাবমূর্তি তৈরি করতে সচেতন ছিল। এই সরকার বা সরকারের সাথে জড়িত অনেকেই কীভাবে তারা জনগণকে ধোঁকা দিয়েছে, কীভাবে তথ্য ম্যানিপুলেট করেছে, পুলিশ হত্যার মত ফৌজদারী অপরাধ করেছে সেটা বুক ফুলিয়ে জোর গলায় বলে। বর্তমান সরকার আইসবার্গের চূড়া, এর নীচে কী আছে এবং কোথায় আছে সেটা সাধারণ মানুষ তো বটেই এমনকি সরকারের সাথে জড়িত অনেকের দৃষ্টির আড়ালে। যতদিন পর্যন্ত এই শেকড়ের সন্ধান না পাওয়া যায় ততদিন পর্যন্ত জাতি পুরোপুরি মুক্তি পাবে বলে মনে না। দুবনা, ২৪ মে ২০২৫

সংস্কার?

Image
বাংলাদেশে গত প্রায় এক বছর যাবৎ সংস্কার চলছে। এটা মনে হয় ভবিষ্যতে প্রেজেন্ট পারফেক্ট কন্টিনিউয়াস টেন্সের উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করবে শিক্ষার্থীরা অবশ্য যদি ততদিনে শিক্ষার্থী নামক প্রজাতি টিকে থাকে। সারভাইব্যাল অফ দি ফিটেস্ট তত্ত্ব অনুযায়ী ছাত্র প্রজাতি এই মূহুর্তে সবচেয়ে শক্তিশালী হলেও তারা দিন দিন শিক্ষা থেকে দূরে চলে যাচ্ছে। জ্ঞান নয় ক্ষমতা অর্জন হয়ে উঠেছে তাদের জীবনের লক্ষ্য। তাই এদের শিক্ষার্থী না বলে ক্ষমতার কাঙ্গাল বলাই ভালো। তবে এতে ছেলে বুড়ো সবাই এককাট্টা। বাংলাদেশের মানুষ বরাবরই সংস্কারের চেয়ে কুসংস্কারে বেশি বিশ্বাসী। এবারেও ব্যতিক্রম ঘটবে বলে মনে হয় না। যেসব কালা কানুন সবার আগে বাতিল করার কথা ছিল সেগুলোই আজ বেশি বেশি করে প্রয়োগ করা হচ্ছে। সংবিধান থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে যেসব সংস্কার প্রস্তাব করা হচ্ছে তা দেশকে সামগ্রিক ভাবে যতটা না এগিয়ে নিয়ে যাবে পিছিয়ে নেবে তার থেকে শতগুণ বেশি। সংস্কার হচ্ছে সংস্কারের জন্য। দেশের ও জনগণের স্বার্থে নয়, ব্যক্তি বা দলীয় পছন্দ অনুযায়ী বদলে যাচ্ছে ভালো মন্দের সংজ্ঞা। তাই চলমান পরিবর্তনকে সংস্কার না বলে কুসংস্কার বলাই শ্রেয়। ...

চুটকি নয়

Image
বরিস ইয়েলৎসিনের প্রধানমন্ত্রী ভিক্তর চেরনোমীরদিন তাঁর ছোট ছোট বাক্যের জন্য জনপ্রিয় ছিলেন। এসব বাক্যের একাধিক অর্থ সেই দুঃসময়েও মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে। এর দুটো ছিল  চেয়েছিলাম ভালো কিছু করতে কিন্তু ফল পেলাম বরাবরের মতই। জুলাই অভ্যুত্থানের একটা মূল লক্ষ্য ছিল অর্থ পাচার বন্ধ করা। কিন্তু বিগত নয় মাসে দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের সংবাদ শুনে মনে হয় আমাদের চাওয়াটা যাই হোক না কেন পাওয়াটা ঠিক বরাবরের মতই। তাঁর আরেক বিখ্যাত উক্তি ছিল  বাঁচব খুব কষ্টে তবে অল্প কয়েক দিন।  যদিও তিনি কষ্ট দ্রুত কাটবে সেটা বোঝাতে চেয়েছিলেন তবে অল্প দিন বাঁচবে এই অর্থে নিয়ে মানুষ আবার মস্করা শুরু করে। দেশে যেভাবে গণপিটুনি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ভাবে লোক মারা যাবার খবর দেখা ও শোনা যায় তাতে মনে হয় চেরনোমীরদিনের বাণী রাশিয়ায় সত্য হলেও দেশে সত্য হচ্ছে জনগণের আশঙ্কা বা সেসব বাণী নিয়ে জনতার মস্করা। দুবনা, ১৮ মে ২০২৫

সাবধানতা

Image
কেউ যখন ভালো কথা বলে সেই কথাকে প্রচার করে আমরা শুধু সেই ধারণা নয় যে বলে তার পক্ষেও প্রচার করি। দেশের এক নামকরা লেখক ও সাংবাদিককে সেটাই করতে দেখলাম। এমনকি জীবনে যে কখনোই সত্য কথা বলেনি সেও আদালতে দাঁড়িয়ে বলে "যাহা বলিব সত্য বলিব"। যদিও সে নিজেও জানে তার এই প্রতিজ্ঞা ডাহা মিথ্যা তারপরও আদালত এটাকে সত্য বলেই গণ্য করে। এভাবেই ন্যায় ও অন্যায়ের প্রতিনিধিত্বকারী দুই জন নিজ নিজ অবস্থানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে।  "ভুল হলে শিক্ষা নিয়ে এগুতে চাই" - এটা নিঃসন্দেহে মুক্ত মনের বাণী। তবে এই কথা যারা উচ্চারণ করে তারা সবাই যে মুক্তমনা এটা ভাবা ভুল। এক্ষেত্রে কথা নয়, কাজকে প্রাধান্য দেয়াই শ্রেয়। জুলাই অভ্যুত্থানের নায়কদের কথা ও কাজের অসামঞ্জস্য বৈষম্য বিরোধিতা, সাম্য, ন্যায় বিচার ইত্যাদি ধারণার বিষয়ে তাদের আসল মনোভাব সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তাই শুধু মাত্র কথার উপর নির্ভর করে তাদের নতুন করে বিশ্বাস করলে সেটা জনমনে নতুন হতাশার জন্ম দিতে পারে। দুবনা, ১৭ মে ২০২৫

লেখকের সততা

Image
ফেসবুকে বিভিন্ন ধরণের লেখা পড়ি। তবে চেষ্টা করি সেই সব লোকদের লেখা পড়তে যা পরে কিছু জানা যায়। কখনো কখনো দেশ বিদেশের বিভিন্ন ঘটনা জানার জন্যেও পড়ি। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন লেখা পড়ি যাতে একটা ধারণা হয় পরিস্থিতি সম্পর্কে। কয়েক দিন আগে একটা লেখায় পড়লাম কীভাবে বিগত জুলাই আগস্টের আন্দোলন সেক্যুলার পোশাকে শুরু হয়ে পরে তা ধর্মীয় বয়ান পেয়েছে অথবা সেক্যুলার ছদ্মবেশে এসে সবাইকে নিয়ে আন্দোলন করে পরে আন্দোলনের ফসল হাইজ্যাক করে ইসলামী শিবিরে নিয়ে গেছে। এখানে দ্বিমত প্রকাশের তেমন সুযোগ নেই। তবে সেখানেই শেখ হাসিনার পুলিশের গুলিতে নিহত ছাত্র জনতার সংখ্যা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে পুতিনের ১০ হাজার ছাত্র হত্যার উল্লেখ করা হয়েছে। এটা ঠিক যে আন্দোলনে ঠিক কত লোক মারা গেছে এবং কাদের হাতে মারা গেছে সেটা নিয়ে দ্বিমত আছে। বিশেষ করে যখন অনেক সমন্বয়ক নিজে থেকেই বলেছে যে যত মারা গেছে তার চেয়ে বেশি বলা হয়েছে জন সমর্থন আদায় করার জন্য। এছাড়া অনেক শহীদ ইতিমধ্যে ফিরেও এসেছে। কিন্তু শেখ হাসিনা একা এত লোক হত্যা করেনি বা অন্যদের তুলনায় সেটা নগণ্য এটা প্রমাণ করতে গিয়ে কি পুতিন বা অন্যদের টেনে আনা এতই দরকার? এটা শুধু সত...

গণতন্ত্র

Image
আওয়ামী লীগ সহ তার বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন নিষিদ্ধ করা হল। যমুনার সামনে গত কয়েকদিন যে নাটক ঘটল তাতে বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আছে যে সেটা মেটাকুলাসলি ডিজাইন্ড। জনতার চাপের মুখে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে এই ন্যারেটিভ তৈরি করতে এই নাটক। আওয়ামী লীগ যে বিভিন্ন অপরাধে অপরাধী তাতে সন্দেহ নেই। তবে তাকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করলে দেশে আওয়ামী লীগের চেয়েও বেশি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকেও নিষিদ্ধ করে বিচারের আওতায় আনা উচিত। বিচারের আওতায় আনা উচিত তাদের যারা আগে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের হয়ে সন্ত্রাস চালিয়েছে। যারা আজ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ হওয়ায় উল্লাস করছে তাদের আওয়ামী লীগের নিকট অতীত থেকে শিক্ষা নিতে বলব। কারণ এভাবে কোন রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করলে তা দেশের রাজনীতিতে দীর্ঘকালীন প্রভাব ফেলবে। যারা ইউরোপ আমেরিকায় বসে দীর্ঘদিন আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল তাদের উচিৎ হবে এই অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। অবশ্য তারা যদি আওয়ামী বিরোধিতা করার জন্য গণতন্ত্রকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে তাহলে করার কিছু নেই। কিন্তু তারা যদি সত্যিকার অর্থেই গণতন্ত্রের সৈনিক হয়, স্ব...

যুদ্ধ

Image
অনেক আগে এক পরিচিত লোক বলেছিল - মস্কোর বাংলাদেশীরা লাশ দেশে ফেরৎ পাঠানোর জন্য চাঁদা দেয়, অথচ এরচেয়ে অনেক কম টাকায় হয়তো তাঁকে বাঁচিয়ে তোলা যেত।  ফেলানীদের মৃত্যু হলে সারা দেশ উত্তাল, অথচ আগে এই দরদ দেখালে ফেলানিদের হয়তো সীমান্তেই যেতে হত না, কাঁটাতারের বেড়া পার হবার চেষ্টা করতে হত না।  যদি মানুষের প্রতি এতই দরদ তাহলে সীমান্ত সমস্যা কেন সমাধান করা হয় না? আসলে সমস্যা জিইয়ে রাখাই অনেকের জন্য সমাধান - এতে ভোট ভোট খেলা যায়। মানুষের প্রকৃত ও মৌলিক সমস্যার সমাধান না করে এসব সমস্যা সামনে এনে তাদের ভুলিয়ে রাখা যায়।  বার বার যখন সীমান্তে এসব ঘটনা ঘটে তখন শান্তিপ্রিয় মানুষের নিজ নিজ দেশের সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা উচিৎ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে ফেলার জন্য। এসব যুদ্ধে সবাই হারে, জিতে শুধু সাগর পারের বনিক। দুবনা, ১০ মে ২০২৫

উপলব্ধি

Image
হঠাৎ করেই বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে বিভিন্ন উপলব্ধি জাগে মনে। ইদানিং দেশে যা ঘটছে আর যা ঘটার কথা ছিল তার মধ্যে যোজন ফারাক দেখে আজ এরকম এক ভাবনার উদ্রেক হল। ১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে সিরাজের স্বেচ্ছাচারিতা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য ইংরেজদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেয় তার প্রধান সেনাপতি মীর জাফর এই বিশ্বাসে যে মসনদ এরপর তার হবে। ফলাফল - ১৯০ বছরের ইংরেজ গোলামী।  ২০২৪ সালে বিদেশি শক্তির সাথে চুক্তি করে হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখেছিল অনেকেই। আপাত ক্ষমতাসীন হলেও ক্ষমতার চাবিকাঠি বিদেশে।  আগে বিদেশে অর্থপাচার হত, এখন সেখানে ক্ষমতা পাচার হয়। আগে এক মীর জাফর ছিল এখন এরা দলে দলে। তাই যারা ভাবছে ২০২৪ তাদের ১৯৪৭এ ফিরিয়ে নিয়ে গেছে তারা ভুল করছে, তারা আসলে ১৭৫৭ সালের পলাশীর প্রান্তরে ফিরে গেছে আরও কয়েক শ' বছর বিদেশি শাসনের ঘানি টানার জন্য। প্রশ্ন হল সব মীর জাফর কি বুঝছে যে সে মীর জাফর? দুবনা, ১০ মে ২০২৫

আইভী

Image
নারায়নগঞ্জের মেয়র আইভীকে গ্রেফতার করা হল। আইভী পারিবারিক ভাবে আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত হলেও বিভিন্ন বিষয়ে স্বাধীন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করত। ওর আরেকটি পরিচয় - ও সোভিয়েত গ্র্যাজুয়েট। সেই সূত্রে আমাদের পরিচিতি ও কাছের মানুষ। বিগত বছরগুলোতে ও এমনকি আওয়ামী লীগের হাই কমান্ডের বিরোধিতা করতে দ্বিধা করেনি। দেশে যখন ছোট বড় সব ধরণের রাজনীতিবিদদের সততা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সেখানে ও ছিল সৎ, স্বচ্ছ, জনতার কাছের মানুষ। জয় বাংলা স্লোগান দেবার ফলে ওকে গ্রেফতার করে সরকার নিজের দুর্বলতা নতুন করে প্রকাশ করল। আর ওর বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করে সরকার প্রমাণ করল যে স্বৈরাচার, কর্তৃত্ববাদ এসব দিকে সে শেখ হাসিনার সরকারকে ছাড়িয়ে গেছে। যেখানে স্বঘোষিত খুনিরা সরকারের আশেপাশে মুক্ত বিহঙ্গের মত ঘুরছে সেখানে মিথ্যা মামলায় আইভীর গ্রেফতার বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রকেই হাস্যকর করে তুলেছে। দুবনা, ০৯ মে ২০২৫

বিজয় দিবস

Image
পশ্চিমা বিশ্বে এবং রাশিয়ায় যারা পশ্চিমা বিশ্বের বর্তমান দর্শনে বিশ্বাসী - তারা বলে কী দরকার এত জাঁকজমক করে বিজয় দিবস পালন করার? সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর বেশ কিছুদিন কোন জাঁকজমক ছিল না। ১৯৯৫ সালে বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ইয়েলৎসিন আবার বিজয় প্যারেড করতে গেলে পশ্চিমা বিশ্বের অনেকেই এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে, যদিও শেষ পর্যন্ত বিজয় পার্কে জাঁকজমক করে বিজয়ের ৫০ বছর উদযাপিত হয়। সেই ১৯৯১ সাল থেকেই শুরু হয়েছে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বিজয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকা খর্ব করে দেখানোর প্রচেষ্টা। এমনকি কেউ কেউ হিটলার এবং স্তালিন আর সেই সাথে জার্মানি আর সোভিয়েত ইউনিয়নকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর জন্য দায়ী করার প্রয়াস দেখিয়েছে। আর এ জন্যেই দরকার ইতিহাস বিকৃত করতে না দেয়া। ইতিহাসকে যেমন অতিরঞ্জিত করে দেখানোর দরকার নেই তেমনি তাকে অস্বীকার করারও দরকার নেই। আজ বাংলাদেশে আমরা যা দেখছি সেটা বিভিন্ন ভাবে ইতিহাসকে বিকৃত করার ফল। কী সোভিয়েত ইউনিয়নে, কী রাশিয়ায় - একটি বিষয় খেয়াল করেছি - যুদ্ধে জয়ে যতটা না কোন নেতা বা সেনাপতির প্রশংসা করা হয় তারচেয়ে বেশি প্রশংসা করা হয় সাধারণ সেনাদের, সোভিয়েত ইউনিয়ন বা রাশি...

জিজ্ঞাসা

Image
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি আমাকে বছর দশেক আগের ইউক্রেনের কথা মনে করিয়ে দেয়। ভিকি ন্যুল্যান্ডের প্রত্যক্ষ সমর্থনে উগ্র জাতীয়তাবাদী ও হিটলারের দোসর বান্দেরার অনুসারীরা তখন সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। লেখক হোক, বুদ্ধিজীবী হোক, রাজনৈতিক নেতা বা সাধারণ রুশ ভাষাভাষী কেউ হোক সবার উপর নেমে আসছে আঘাত। মানুষ আর মানবতাকে অপমান করা হচ্ছে যত্রতত্র। এমনকি ওদেসার ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রে পুড়িয়ে মারা হয়েছে একদল ভিন্নমতাবলম্বী মানুষকে। সে সময় রাশিয়ার বাজার ছিল তাদের জন্য খোলা, তেল গ্যাস ট্র্যানজিটের ও ব্ল্যাক সীর পোর্ট ব্যবহারের জন্য রাশিয়া মোটা দাগে টাকা দিচ্ছে, দিচ্ছে তেল গ্যাসে বিশাল ভর্তুকি। কিন্তু মানুষের ধারণা তারা আরও বেশি পাওয়ার যোগ্য। তাদের সমস্ত সমস্যার মূলে রয়েছে রাশিয়া। এরপর যুদ্ধ। দেশের অস্তিত্ব এখন প্রশ্নের সম্মুখীন। আর সেটা হয়েছিল সরকারের সমর্থনে। একই ঘটনা এখন ঘটছে বাংলাদেশে। কোন প্রতিবাদ নেই, প্রতিরোধ নেই। দেশ ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে ধ্বংসের পথে। আওয়ামী স্বৈরাচারের প্রতি অন্ধ ঘৃণায় এখনও অনেক আপাতদৃষ্টিতে প্রগতিশীল মানুষ এসব সমর্থন করে যাচ্ছে। বিপ্লব করতে নেমে এ...

প্রশ্ন

Image
কোন কোম্পানির পরিচালক কমিটি যেমন কোম্পানির সব রকম ভালো মন্দের জন্য দায়ী তেমনি কোন দেশের সরকার দেশের সমস্ত ভালো মন্দের জন্য জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। দেশের ভালো মন্দ নির্ধারিত হয় আর্থ-সামাজিক অবস্থা, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ইত্যাদির উপরে ভিত্তি করে। রাজুর ভাস্কর্যের সামনে নারীর পুত্তলিকা ঝুলিয়ে যা করা হল এটা শুধু নারীর অবমাননা নয়, মানবতা ও সভ্যতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো। আর এটা হয়েছে সরকারের প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়ে। বর্তমান সরকার প্রধান পশ্চিমা বিশ্ব দ্বারা লালিত, পালিত ও স্থাপিত। নোবেলজয়ী বিশ্ববরেণ্য প্রধান উপদেষ্টা অন্তত মুখরক্ষার জন্য হলেও এ ধরনের কর্মসূচিতে বাধা দিতে পারতেন কারণ এই কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ও তাঁর নিজের ভাবমূর্তি কালিমা লিপ্ত করে। সেটা না করার মধ্য দিয়ে সরকার বুঝিয়ে দিল তাদের লক্ষ্য আসলে পাকিস্তান নয় দেশকে আফগানিস্তান বানানো। আর কত প্রমাণ পেলে বুদ্ধিজীবীদের মোহ ভাঙবে, তাঁরা ঘুরে দাঁড়াবেন? নাকি আমাদের বুদ্ধিজীবীরা আসলে ভদ্রবেশী তালিবান? শেখ হাসিনার আমলে একদল বুদ্ধিজীবী অন্ধভাবে তাঁকে সমর্থন দিয়েছেন, অন্যেরা করেছেন অন্ধ বিরোধিতা। তখন তাঁরা দেশের চেয়ে দলের স্...

যুদ্ধ

Image
আইনস্টাইন বলেছিলেন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে মানুষ কোন অস্ত্র ব্যবহার করবে তিনি জানেন না, তবে চতুর্থ বিশ্বযুদ্ধে মানুষ যে লাঠি ব্যবহার করবে সে বিষয়ে তাঁর সন্দেহ নেই।  উপমহাদেশে এখন যুদ্ধের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। সবাই যুদ্ধ চাইছে। বিশেষ করে সেই সব মানুষ যারা নিজেরা যুদ্ধে যাবে না কিন্তু অন্যের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করবে। তবে আমাদের লোকজন ও রাজনীতিবিদরা ধ্বংস আর মৃত্যুর কথা ভাবছে না, সবাই জয়ের নেশায় উন্মত্ত। এদের অবশ্য হারানোর কিছু নেই। কেউ চায় মদিনা সনদ, কেউ বৈদিক যুগ কেউবা আদম হাওয়ার আমল। সে হিসেবে আসন্ন যুদ্ধ সবার মনোবাসনা পূর্ণ করার ক্ষমতা রাখে।  যুদ্ধ মানেই অরাজকতা। যুদ্ধ মানেই আইন শৃঙ্খলার অধঃপতন। গত নয় মাসে দেশের মানুষ কমবেশি অরাজকতার বর্ণমালা আত্মস্থ করেছে। কিছু লোক নিজেদের বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি দেখলেও অধিকাংশ মানুষ এটা এড়িয়ে গেছে। যুদ্ধ শুধু বৃহৎ পুঁজি ও ক্ষমতালোভী রাজনৈতিক নেতাদের জন্য লাভজনক। বাকি সবার জন্য কষ্টকর, ক্ষতিকর। ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান, লিবিয়া, ইউক্রেন এই শিক্ষাই দেয়। তাই নিজের ও পরবর্তী প্রজন্মের কথা ভেবে অন্যের যুদ্ধে নিজের জড়িয়ে পড়াকে না বলুন। দুবনা, ০...

বিবাহ চুক্তি

Image
মানুষ যখন নিজের সমকক্ষ কারো সাথে বন্ধুত্ব করে সে তখন নিজের স্বকীয়তা বজায় রেখে সেটা করতে পারে। নিজের চেয়ে উঁচু অবস্থানের কারোও সাথে বন্ধুত্ব করলে স্বকীয়তা এমনকি স্বাধীনতা হারানোর সম্ভাবনা থাকে।  ইউক্রেন যখন রাশিয়ার সাথে বন্ধুত্ব করত তখন সে নিজে বর্তমানের চেয়ে অনেক বেশি স্বাধীনতা ভোগ করত, রাশিয়ার কাছ থেকে প্রচুর আর্থিক সাহায্য পেত স্বল্প মূল্যের তেল গ্যাস আকারে। রাশিয়ার একটাই চাহিদা ছিল - ইউক্রেনের জোট নিরপেক্ষতা। কারণ রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন। তাছাড়া ইউক্রেনের প্রায় অর্ধেক আদি রুশ ভূমি যেখানে জাতিগত রুশরা বাস করে এবং যেসব অঞ্চল রুশদের দ্বারা গঠিত। তাই এই বিশাল জনগোষ্ঠীর প্রতি রাশিয়ার কিছু নৈতিক দায়িত্ব আছে বিশেষ করে ১৯৯১ সাল থেকে শুরু করে সমস্ত নির্বাচনে যখন খারকভ থেকে ওদেসা পর্যন্ত দক্ষিণ পূর্ব ইউক্রেনের জনগণ বিপুল ভাবে সেই মনোভাব ব্যক্ত করেছে।  আমেরিকার সাথে চুক্তি অনেকটা অপেক্ষাকৃত গরীব স্বামীর ঘর ছেড়ে বড়লোকের ঘরে ঢোকার মত। বড়লোকের দাসী হয়তো গরীবের স্ত্রীর চেয়ে অর্থনৈতিক ভাবে অনেক স্বাচ্ছন্দ্যে থাকে তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বন্...