অনুভূতি

আন্তোয়ান দে এক্সুপেরি তাঁর ছোট্ট রাজপুত্রকে দিয়েছিলেন - যাদের তুমি বশ করেছ তাদের কাছে তুমি দায়বদ্ধ।

বাংলাদেশের হাজার হাজার তরুণ তরুণী মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের ডাকে রাজনীতিতে এসেছে। তিনি এতদিন সবাইকে কমিউনিজমের ওয়াজ শুনিয়েছেন। গতকাল তাঁকে দেখলাম প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে গিয়ে মৌলবাদী ও স্বাধীনতা বিরোধীদের ভীড়ে হারিয়ে যেতে। অথচ বন্দুক হাতে তরুণ মুক্তিযোদ্ধা - সেই ছবি শুধু তাঁকেই নয় মুক্তিযুদ্ধকেও ধারণ করেছে এতকাল। এই যাওয়া পার্টির অনুমোদনে হয়েছিল নাকি ব্যক্তিগত উদ্যোগে - সেটা ভিন্ন প্রশ্ন। তবে বিগত দিনগুলোয় সরকার ও তার চ্যালা চামুন্ডারা যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের সব অর্জনকে ধুলিস্যাত করেছে তাতে এই যাওয়াটা বিভিন্ন মহলে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। পার্টি ভাঙার পর পার্টি থেকে বেরিয়ে যাওয়া নেতাদের প্রতি আপনাদের একটাই বয়ান ছিল - সংশোধনবাদী। তবে এটা তো অস্বীকার করার উপায় নেই যে তারা পার্টির নাম ভাঙ্গিয়ে নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলেননি। যখন দেখেছেন আগের বিশ্বাস নিয়ে পার্টি করতে পারবেন না তখন হয় রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছেন অথবা ভিন্ন নামে রাজনীতি করেছেন। কাউকে ধোঁকা দেননি। এটাই ছিল পার্টির প্রতি তাদের সততার প্রকাশ। কিন্তু আপনারা? হজ্ব করতে গিয়ে আমাদের পাপের জন্য দোয়া চান। পার্টির নাম ভাঙ্গিয়ে রাজনীতি করে স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে আঁতাত করেন। শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিক্রি করতেন, আপনারা কমিউনিজমের আদর্শ বিক্রি করেন। তথাৎ কোথায়? বাঙালি মুসলমান ছাড়া আর কারো নাকি অনুভূতি থাকতে নেই। তাই এদের আঘাত দিতে আপনাদের এতটুকু বাঁধে না। আপনারা এসব করেন, করতেই পারেন। সেই অধিকার আপনাদের আছে, যদিও নেতা হিসেবে আপনি হাজার হাজার কর্মীর কাছে দায়বদ্ধ। আজ যে এক যুদ্ধাপরাধী মুক্তি পেল পারতপক্ষে আপনি সেটাও এন্ডোরস করে এলেন আপনার উপস্থিতি দিয়ে। তাদের কাছে আপনাদের কোনই মূল্য নেই শুধু মাঝে মধ্যে ডেকে হাজিরা খাতায় নাম তোলা আর সেটা দেখিয়ে তাদের কাজের পেছনে জনসমর্থন আছে সেই মিথ্যা জোর গলায় বলা ছাড়া। করেন। তবে ভালো হয় যদি পার্টি থেকে বেরিয়ে গিয়ে করেন। সিপিবির একটা ইতিহাস আছে, ঐতিহ্য আছে। সেই ঐতিহ্য কালিমালিপ্ত করার অধিকার কিন্তু পার্টির ভেতরে আর তারচেয়েও শতগুন বেশি পার্টির বাইরে থাকা সমর্থকরা আপনাদের দেয়নি।

দুবনা, ২৭ মে ২০২৫

Comments

Popular posts from this blog

প্রশ্ন

রিসেটের ক্ষুদ্র ঋণ

নেতা