বিবাহ চুক্তি
মানুষ যখন নিজের সমকক্ষ কারো সাথে বন্ধুত্ব করে সে তখন নিজের স্বকীয়তা বজায় রেখে সেটা করতে পারে। নিজের চেয়ে উঁচু অবস্থানের কারোও সাথে বন্ধুত্ব করলে স্বকীয়তা এমনকি স্বাধীনতা হারানোর সম্ভাবনা থাকে।
ইউক্রেন যখন রাশিয়ার সাথে বন্ধুত্ব করত তখন সে নিজে বর্তমানের চেয়ে অনেক বেশি স্বাধীনতা ভোগ করত, রাশিয়ার কাছ থেকে প্রচুর আর্থিক সাহায্য পেত স্বল্প মূল্যের তেল গ্যাস আকারে। রাশিয়ার একটাই চাহিদা ছিল - ইউক্রেনের জোট নিরপেক্ষতা। কারণ রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন। তাছাড়া ইউক্রেনের প্রায় অর্ধেক আদি রুশ ভূমি যেখানে জাতিগত রুশরা বাস করে এবং যেসব অঞ্চল রুশদের দ্বারা গঠিত। তাই এই বিশাল জনগোষ্ঠীর প্রতি রাশিয়ার কিছু নৈতিক দায়িত্ব আছে বিশেষ করে ১৯৯১ সাল থেকে শুরু করে সমস্ত নির্বাচনে যখন খারকভ থেকে ওদেসা পর্যন্ত দক্ষিণ পূর্ব ইউক্রেনের জনগণ বিপুল ভাবে সেই মনোভাব ব্যক্ত করেছে।
আমেরিকার সাথে চুক্তি অনেকটা অপেক্ষাকৃত গরীব স্বামীর ঘর ছেড়ে বড়লোকের ঘরে ঢোকার মত। বড়লোকের দাসী হয়তো গরীবের স্ত্রীর চেয়ে অর্থনৈতিক ভাবে অনেক স্বাচ্ছন্দ্যে থাকে তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বন্ধু হয় না।
কিছু মানুষের রাজনৈতিক অদূরদর্শিতা ও ক্ষমতার লোভে ইউক্রেনের মানুষ এখন আমেরিকার হল। মীর জাফরের ক্ষমতালিপ্সা ভারতকে বৃটিশ সাম্রাজ্যের অংশ করলেও ভারতবাসীদের বৃটিশ করেনি। ইউক্রেনের মানুষও তেমনি আমেরিকান হবে না। শুধু কয়েক প্রজন্ম ধরে আমেরিকার দাস হয়ে থাকবে।
আমেরিকাই বলি আর ন্যাটোই বলি কেউ অন্য দেশের মানুষের সুখের জন্য বা গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য যুদ্ধ করে না। তারা যুদ্ধ করে এসব দেশ নিজেদের পদানত করার জন্য। নিজেদের ভূরাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের জন্য। ইরাক আফগানিস্তান লিবিয়া, এখন ইউক্রেন তার জ্বলন্ত প্রমাণ। কিন্তু এটা ভবিষ্যতের উইপোকাদের রক্ষা করবে সেই গ্যারান্টি কম।
দুবনা, ০২ মে ২০২৫
Comments
Post a Comment