জিজ্ঞাসা

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি আমাকে বছর দশেক আগের ইউক্রেনের কথা মনে করিয়ে দেয়। ভিকি ন্যুল্যান্ডের প্রত্যক্ষ সমর্থনে উগ্র জাতীয়তাবাদী ও হিটলারের দোসর বান্দেরার অনুসারীরা তখন সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। লেখক হোক, বুদ্ধিজীবী হোক, রাজনৈতিক নেতা বা সাধারণ রুশ ভাষাভাষী কেউ হোক সবার উপর নেমে আসছে আঘাত। মানুষ আর মানবতাকে অপমান করা হচ্ছে যত্রতত্র। এমনকি ওদেসার ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রে পুড়িয়ে মারা হয়েছে একদল ভিন্নমতাবলম্বী মানুষকে। সে সময় রাশিয়ার বাজার ছিল তাদের জন্য খোলা, তেল গ্যাস ট্র্যানজিটের ও ব্ল্যাক সীর পোর্ট ব্যবহারের জন্য রাশিয়া মোটা দাগে টাকা দিচ্ছে, দিচ্ছে তেল গ্যাসে বিশাল ভর্তুকি। কিন্তু মানুষের ধারণা তারা আরও বেশি পাওয়ার যোগ্য। তাদের সমস্ত সমস্যার মূলে রয়েছে রাশিয়া। এরপর যুদ্ধ। দেশের অস্তিত্ব এখন প্রশ্নের সম্মুখীন। আর সেটা হয়েছিল সরকারের সমর্থনে। একই ঘটনা এখন ঘটছে বাংলাদেশে। কোন প্রতিবাদ নেই, প্রতিরোধ নেই। দেশ ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে ধ্বংসের পথে। আওয়ামী স্বৈরাচারের প্রতি অন্ধ ঘৃণায় এখনও অনেক আপাতদৃষ্টিতে প্রগতিশীল মানুষ এসব সমর্থন করে যাচ্ছে। বিপ্লব করতে নেমে এরা দিন দিন প্রতিক্রিয়াশীল প্রতিবিপ্লবী বনে যাচ্ছে। হারছে বাংলাদেশ। ইউক্রেনে যেমন এন্টি রুশ বাংলাদেশেও তেমনি এন্টি ইন্ডিয়ান ন্যারেটিভ তৈরি করা হয়েছে সবক্ষেত্রে। যদিও দিনের শেষে এরাই আমাদের প্রতিবেশী থাকবে, এদের নিয়েই আমাদের থাকতে হবে। ইউক্রেনের পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আমাদের তাই যুদ্ধ, শান্তি, পারস্পরিক সম্পর্ক বিষয়ে গভীর ভাবে ভাবতে হবে। চীন, আমেরিকা, রাশিয়া বা অন্য কোন দেশ কারোও হয়ে যুদ্ধ করবে না, তারা দেখবে নিজেদের স্বার্থ। ইউক্রেন সেটা না বুঝে খেসারত দিচ্ছে। আমরা কি সে পথেই হাঁটছি না?

মস্কো, ০৫ মে ২০২৫

Comments

Popular posts from this blog

রিসেটের ক্ষুদ্র ঋণ

প্রশ্ন

রিংকু