Posts

Showing posts from December, 2024

মোশতাক

Image
ইদানিং কালে ফেসবুকে কিছু কিছু পুরানো ভিডিও দেখা যায় যেখানে সমন্বয়ক ও উপদেষ্টাদের কেউ কেউ বঙ্গবন্ধুর জয়গানে বিশেষণ ব্যবহারের কার্পণ্য করে নাই। আবার এরাই এখন মুজিববাদ তথা শেখ মুজিবের নাম বাংলার ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছে। আগে আমরা এধরণের লোকদের মীর জাফর বলতাম। কিন্তু বাস্তবে এদের কাজকর্ম খোন্দকার মোশতাকের কার্বন কপি যে শেখ মুজিবের পিতার মৃত্যুতে সবচেয়ে বেশি কান্নাকাটি করেছিল আর মৃত্যুর আগের দিন নাকি নিজের হাতে রান্না করে শেখ মুজিবকে খাইয়েছিল। সব দেখে মনে হয় দেশে মোশতাকরা পুনর্জন্ম লাভ করছে। সদ্য শহীদরা যেখানে সশরীরে ফিরে আসছে মোশতাকের ফিরে আসতে বাধা কোথায়? দুবনা, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

উত্তর

Image
গতকাল থেকে ফেসবুক ভরে গেছে ৩১ ডিসেম্বরে আসন্ন ঘোষণার খবরে। বলা হচ্ছে সেদিন বাহাত্তরের সংবিধানের কবর রচিত হবে। জুলাই আগস্টের এই আন্দোলনে দলহীন ও দলছুট এসব সমন্বয়ক ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন উপস্থিত ছিল যারা বাহাত্তরের সংবিধানে অথবা বিভিন্ন সংস্কার সহ এই সংবিধানে আস্থা রাখত এবং এর উপর ভিত্তি করেই তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাত। বাহাত্তরের সংবিধানের কবর দেয়া সম্পর্কে তাদের মতামত জানা জাতির জন্য জরুরি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পর আওয়ামী লীগ এককভাবে সেই বিজয় কুক্ষিগত করে। আজ বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা কি সেই একই পথে চলছে না? জনতার বিজয়কে কেন বার বার কোন না কোন গোষ্ঠী কুক্ষিগত করতে পারছে সে প্রশ্নের উত্তর রাজনৈতিক দলগুলোকে খুঁজতে হবে।  দুবনা, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

বয়স

Image
ডঃ ইউনুস বলেছেন বাংলাদেশের মানুষের ১৭ বছর বয়স থেকেই ভোটাধিকার থাকা উচিৎ। ডঃ আলী রিয়াজ মনে করেন একুশ বছর বয়সী মানুষ সংসদ সদস্য হতে পারেন আর রাজনৈতিক দলগুলোর উচিৎ এক তৃতীয়াংশ প্রার্থী তরুণদের মধ্য থেকে দেয়া। তারা দুজনেই আমেরিকার সমর্থক। আমেরিকার গণতন্ত্র আমাদের দেশে প্রতিষ্ঠা করতে চান বা সেই গণতন্ত্রের জয়গান করেন। তবে দেখা যায় আমেরিকায় কংগ্রেসম্যানদের গড় বয়স ৫৮ বছর, সিনেটরদের ৬০। সেখানে প্রায় ৯০% প্রতিনিধিদের বয়স ৪০ থেকে ৮০ মধ্যে। ডঃ আলী রিয়াজ অ্যামেরিকান নাগরিক হিসেবে এ ধরণের সংস্কার আমেরিকা থেকে শুরু করলেই পারতেন। অবশ্য হতে পারে তারা তাদের বসদের নির্দেশে এসব করছেন। আমেরিকায় এখন শিশুরা পর্যন্ত নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারে তারা ছেলে না মেয়ে না অন্য কোন লিঙ্গের। সমস্যা হল রাজনীতি শুধু ব্যক্তি স্বার্থের জন্য নয়, এর ফলাফলের উপর সমষ্টির, দেশের স্বার্থ নির্ভর করে। তারুণ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তবে অভিজ্ঞতা কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। অভিজ্ঞতা শুধু পুঁথিগত বিদ্যা দ্বারা অর্জন করা যায় না, অর্জন করতে হয় জীবন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। এ জন্যেই বয়স এখানে ফেলনা নয়। বয়সের পরিবর্তে তারা যদি ন্যুনতম শিক্ষার ...

সাব পিকনিক

Image
আজ সারাদিন জন্মদিনের শুভেচ্ছার পাশাপাশি আরও যে জিনিসটি আমাকে আকর্ষণ করেছে সেটা হল সাবের পিকনিক। সাব - সোভিয়েত ফেরত বাংলাদেশি গ্র্যাজুয়েটদের প্রাণপ্রিয় সংগঠন। আমরা যারা বাইরে থাকি তারা সাবের অন্যান্য সাংগঠনিক কাজকর্মের সাথে তেমন পরিচিত না হলেও পিকনিকের সাথে পরিচিত। অনেকেই পিকনিকের কথা মাথায় রেখে দেশে যাবার পরিকল্পনা করি। বিগত সাব নির্বাচন নিয়ে অনেক কাঁদা ছুঁড়াছুঁড়ির পরে পিকনিক কেমন হয় তা নিয়ে এক ধরণের আশংকা ছিল। আশংকা এমন নয় যে পিকনিক হবে না, পিকনিকে সবাই আসবে কিনা সেই আশংকা, সাবের ঐক্য টিকে থাকবে কিনা সেই আশংকা। কয়েকদিন আগেও সিরাজের পোস্ট করা লিস্টে বন্ধুদের নাম না দেখে হতাশ হয়েছিলাম। তবে আজ ওরা যখন পিকনিক স্পট থেকে ফোন করে আমাকে জন্মদিনের অভিনন্দন জানালো - যার পর নাই খুশি হয়েছি। যতটা না আমাকে মনে রাখার জন্য, তারচেয়ে বেশি ওরা পিকনিকে গেছে বলে। দিনের শেষে সাব আমাদের সবার সংগঠন। কে ভোটে জিতল আর কে হারল তারচেয়েও বড় কথা যারা কার্যকরী কমিটিতে আছে তারা কতটুকু আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে, কত বেশি সদস্যদের সাবের বিভিন্ন কাজের সাথে সম্পৃক্ত করতে পেরেছে। সেদিক থেকে আমার মনে হয়েছে বর্তমান কমিটি, বি...

চাতক

Image
তোমাকে বধিবে যে গোকুলে বাড়িছে সে - মহামায়া কংসকে উদ্দেশ্য করে এ কথা বলেছিলেন। তবে কংসকে যিনি বধ করেছিলেন সেই শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন কংসের কারাগারে, তাঁরই রাজপ্রাসাদে। সেদিক থেকে দেখলে সবচেয়ে বড় শত্রু বেড়ে ওঠে নিজের ঘরেই। এটা প্রায় সমস্ত আইডোলজির জন্য সত্য। ধার্মিকরাই যে ধর্মের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে এ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। তারাই মন্দির, মসজিদ, গির্জা ভাঙে, তারাই তাদের ভাষায় ঈশ্বরের সৃষ্টিকে অপমান বা খুন করে ঈশ্বরকে অসহায় করে তোলে। স্তালিন, মাও থেকে শুরু করে অনেক সমাজতন্ত্রী সমাজতান্ত্রিক আদর্শের কম ক্ষতি করেনি। এখন গণতন্ত্রীরা উঠেপড়ে লেগেছে গণতন্ত্রের বারোটা বাজাতে। আগে যে করেনি তা নয় তবে এত নগ্ন ভাবে করেনি। কিছুদিন আগে মলদোভার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সান্দো জয়লাভ করেছেন অভিবাসীদের ভোটে যদিও খোদ মলদোভায় হেরে গেছেন। তবে অভিবাসীদের মধ্যে শুধু যারা ইউরোপে তারাই ভোট দেবার সুযোগ পেয়েছে, রাশিয়ায় কর্মরত দশ লক্ষাধিক মলদোভার নাগরিক বলতে গেলে সেই সুযোগ বঞ্চিত হয়েছে যেহেতু এখানে মাত্র হাজার কুড়ি ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছিল। যারা নিজেদের খরচে দেশে গিয়ে ভোট দিতে চেয়েছিল তাদের বি...

প্রতিবাদে হন সৎ

Image
গতকাল বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুকে লাঞ্ছিত করার জন্য প্রতিবাদ হচ্ছে ফেসবুকে। হওয়াটা স্বাভাবিক। যেকোনো আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন মানুষ ও জাতি এটা করবে। তবে একই সাথে এ প্রশ্নও নিজেকে করতে হবে যে আমরা নিজেরাই কি এসব করার সুযোগ করে দেইনি? স্বৈরাচারের পতনের পর যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িত সব ইতিহাস ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠেছিল একদল মানুষ সেটাকে হাসিনার প্রতি ঘৃণার প্রতিফলন বলে আমরাই কি এধরণের ঘটনা প্রমোট করিনি? আওয়ামী লীগের ভুল ও অন্যায় ছিল সীমাহীন। সেটার প্রতিবাদ করা যেকোনো বিবেকবান মানুষের কর্তব্য। ন্যায়ের পক্ষে, সত্যের পক্ষে দাঁড়াতে হবে লাভ ক্ষতির হিসাব না করেই, তবে একই সাথে এটাও মনে রাখতে হবে এই সততা যেন অসৎ আর ভণ্ডদের দ্বারা তাদের স্বার্থ উদ্ধারে ব্যবহৃত না হয়। ইদানিং কালে সেটাই হচ্ছে। এখন থেকে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ শুরু না করলে একদিন প্রতিবাদ করার অধিকার ও শক্তি দুটোই হারাবেন। আর প্রতিবাদ করতে হবে যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে। এখানে যদি সিলেক্টিভ হন তাহলে বুঝতে হবে আপনি ন্যায়ের পক্ষে নন, আপনি সুবিধাবাদী। অন্যায়কারীদের জাত, পাত, ধর্ম, বর্ণ থাকে - অন্যায়ের এসব থাকে না। তাই অন্য...

গরু

Image
কথায় বলে ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়। এক বন্ধু জিজ্ঞেস করল "সবে মাত্র বিপ্লব হল। এখন থেকেই সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখা কি ঠিক?" জানি না, তবে ওই যে রিগ্যান বলেছিলেন - দভেরিয়াইউ নো প্রভেরিয়াইউ - মানে বিশ্বাস করি, তবে পরীক্ষাও করি। যদি বিগত সরকারগুলোর ইতিহাস পর্যালোচনা করি তাহলে দেখব এরা সবাই অতীতমুখী। জাতি হিসেবে আমরা ৫২'র ভাষা আন্দোলনে আটকে আছি, আওয়ামী লীগ ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে, বিএনপি ১৯৭৫ এর বিপ্লবে আর বর্তমান সরকার ২০২৪ এর জুলাই আগস্ট বিপ্লবে। সবার সাফল্য যেমন এসব বছর আবার ব্যর্থতা মানে - এই সব ঘটনার স্মৃতিকে/ সুফলকে নষ্ট করার পাঁয়তারা। তাই যখনই কথায় কথায় জুলাই আগস্টের বিপ্লব উচ্চারিত হয় - তখন ভয় হয় আমরা কি আবারও ভাঙা রেকর্ড বাজিয়ে যাচ্ছি কি না। কারণ এসবের পরিণতি আমাদের অনেক বার দেখা হয়ে গেছে। দুবনা, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪

বিজয়ের বিড়ম্বনা

Image
অদ্ভুত কিছু লেখা দেখছি আছ ফেসবুকে আর বিভিন্ন গ্রুপে। এটার শুরু মনে হয় ভারত সরকার ১৬ ডিসেম্বরের বিজয়কে ভারতের বিজয় বলায়। ব্যাপারটা হচ্ছে ঘটনা মিথ্যে নয়। তবে এর আগে কখনও এ নিয়ে কোন বাকবিতন্ডা হয়নি। মনে রাখতে হবে ১৯৭১ সালের যুদ্ধ আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ছিল। অন্যদিকে নভেম্বরের শেষে পাকিস্তান ভারতের পশ্চিম সীমান্ত আক্রমণ করলে সেটা ভারত পাকিস্তান যুদ্ধে পরিণত হয়। ইতিহাস সেটাই বলে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর শুধু আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে না, ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের অবসান হয় আর পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করে। যতদূর জানি এটা হয় নিয়াজীর উদ্যোগে। কারণ জেনারেল ওসমানী মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক হলেও তার রেগুলার আর্মি ছিল না। সেক্ষেত্রে নিয়াজী অরোরার কাছে আত্মসমর্পন করা সম্মানজনক মনে করেন। তাই ভারত যদি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয় উপলক্ষ্যে এই দিনটি পালন করে এতে আমাদের বিজয় প্রশ্নবিদ্ধ হয় না। বিভিন্ন সময় একাধিক দেশ বিভিন্ন যুদ্ধে জয়লাভ করে এবং প্রতিটি দেশ নিজের নিজের মত করে দিনটি পালন করে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এর রিপাবলিকগুলো নিজের মত করেই ৯ মে বিজয় দিবস ...

বিজয় দিবস

Image
১৬ ডিসেম্বর - বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালে এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করেছে কোটি কোটি মানুষ। বিজয় শুধু জয়ের আনন্দ নয়, ভয়ের শেষ, ‌নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়ানোর দিন শেষ, বাড়ি ফেরার, আবার বন্ধুদের দেখা পাওয়ার, বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আত্মীয় স্বজনদের সাথে মিলিত হবার অপেক্ষার শেষ। নিয়তির কী নির্মম পরিহাস, আজ এই বিজয় দিবসের প্রাক্কালেই আবার প্রশ্ন উঠেছে সেই স্বাধীনতা কি স্বাধীনতা ছিল, সেই বিজয় কি বিজয় ছিল? প্রশ্ন আমাকে হতাশ করে না, কেন না একজন বিজ্ঞানী হিসেবে প্রশ্ন করা ও তার উত্তর খোঁজাই আমার পেশা। গবেষণা করতে গিয়ে আমরা অহরহ আগের অনেক কাজ বাতিল করি, অনেক কাজ উৎকৃষ্ট করার চেষ্টা করি। এটাই বিজ্ঞানের মূল কথা। কিন্তু সেই সাথে আমরা আগের কাজের উল্লেখ করতেও ভুলি না। এজন্যেই আমরা বলি আমরা আরও দূরে দেখি কারণ আমরা বিশাল বিশাল দৈত্যের কাঁধে বসে আছি। এটাই পরম্পরা, এটাই অতীতের সাথে ভবিষ্যৎকে এক সূতায় বাঁধা। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে বৈজ্ঞানিক চিন্তা ভাবনার কদর কখনোই ছিল না। সব নতুন শাসক নতুন করে ইতিহাস লেখে, সবাই হতে চায় শেষ মেসিয়াহ। কিন্তু এতে করে একাত্তরের তিরিশ লক্ষ শহীদে...

ছোট ছোট কথা

Image
কয়েক সপ্তাহ আগে ভোর পাঁচটার দিকে সেভার সাথে গেলাম মস্কো নদীর ধারে বেড়াতে। ও কমবেশি নিয়মিত যায়। আমি কালেভদ্রে যদি আবহাওয়া ভালো থাকে। কারণ আমি যতটা না ঘুরতে যাই তারচেয়ে বেশি যাই ছবি তুলতে। রাস্তা প্রায় ফাঁকা। হঠাৎ দু একটা গাড়ি বা রাতের বাস দেখা যায়। মস্কোর বাস সার্ভিস ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আর বাকি সময়টা থাকে রাতের বাস সার্ভিস যা মূলতঃ এয়ার পোর্ট ও রেল স্টেশনের সাথে সংযুক্ত। মাঝেমধ্যে দলবেঁধে তরুণ তরুণীরা সাঁ করে চলে যায় ইলেক্ট্রো বাইকে। ফুটপাতে ওদের জন্য লাইন মার্ক করা থাকলেও প্রায়ই পথচারীদের গা ঘেঁষে চলে যায়। দুর্ঘটনা ঘটে। ফলে নিয়মিত ওদের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নতুন নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়। সেভা সকালে হাঁটতে বেরোয় মূলতঃ এসব ভীড় এড়ানোর জন্য। দেবিল (মূর্খ, গাধা) - সেভা গজ গজ করে। তুই এসব পছন্দ করলে এভাবেই যেতি। এটা বয়সের কারণে। ওরা কিন্তু তোর বয়সী। তুমি সবসময় এসব এড়িয়ে যাও। ঠিক তা নয়। তবে শত শত ভালোর মধ্যে দুই একটা খারাপ ঘটনা ঘটলে এ নিয়ে খুব বেশি ভাবি না। আর বিশাল সাদা ক্যানভাসে কালো দাগ যেমন চোখে পড়ে, বিশাল কালো ক্যানভাসে সাদা দাগ তেমনি চোখে পড়ে। আমরা ...

আমরা

Image
জানি না ১৯৪৭ সালে ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহারের মধ্য দিয়ে জন্মের কারণে কি না কিন্তু এই ভূখণ্ডের সব কিছুই ধর্মের মত ব্যবহৃত হয়। ধর্মের ব্যবহার কীভাবে হয় এখানে? মূলতঃ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য। অনেকেই বলে আমাদের দেশের মত রাজনীতিতে আবেশিত জনগণ খুব কম দেশেই আছে। হাট, মাঠ, ঘাট, টি স্টল সব জায়গাতেই শুধু রাজনৈতিক আলোচনা। কিন্তু সেটা রাজনীতি সচেতনতা নয়, কোন না কোন দলের প্রতি অন্ধ সমর্থন। ফলে রাজনীতি আজ গুণগত ভাবে ধর্মের রূপ পেয়েছে যেখানে প্রশ্ন করার সুযোগ নেই। আর এর ফলে বিভিন্ন দিবস আজ ধর্মীয় উৎসব পালনের এক একটি দিবসের মত। আমরা একুশ পালন করি। বই মেলা, লেখালেখি কি না হয়? কিন্তু ভাষার উন্নয়নের জন্য, জাতি যাতে মাতৃভাষায় সঠিক ভাবে ভাবতে, বলতে বা লিখতে পারে সেজন্য কিছু করি না। আমরা ঘটা করে স্বাধীনতা দিবস পালন করি কিন্তু নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারি না। আমরা বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে উৎসবের আয়োজন করতে পারি কিন্তু বিজয়ের সুফল সবার কাছে পৌঁছে দেয়া তো দূরের কথা বিজয়ই ধরে রাখতে পারি না। আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করি কিন্তু দেশে মুক্ত চিন্তার মানুষের বসবাস যোগ্য পরিবেশ গড...

জয় বাংলা

Image
ইদানিং জয় বাংলা স্লোগান নিয়ে বেশ লেখালেখি হচ্ছে। আজ এক বন্ধু, যিনি বাংলাদেশের বাম আন্দোলনের একজন সম্মুখ সারির নেতা, লিখলেন - '৭১ সালে এবং এর পরে ন্যাপ-সিপিবি-ছাত্র ইউনিয়ন গেরিলা বাহিনী কি 'জয় বাংলা' স্লোগান দিয়েছে? এই জয় বাংলা স্লোগান দিয়েই বাংলাদেশ ছাত্রও ইউনিয়ন, সিপিবি ও অন্যান্য প্রগতিশীল সংগঠনের উপর হামলা করা হয়েছিল বিভিন্ন সময়। ...... সন্দেহ নেই যে তিনি ঠিক বলেছেন। কিন্তু প্রশ্ন কিন্তু সেখানে নয়। সর্বহারার অধিকার চেয়ে এদেশে কি সন্ত্রাস চলেনি? খেমার রুজ কি সমাজতন্ত্রের কথা বলে লাখ লাখ মানুষ হত্যা করেনি? সিপিবি বা এ ধরণের রাজনৈতিক দলের মূল স্লোগান দুনিয়ার মজদুর এক হও। তারা জয় বাংলা বলবে না অন্য কিছু বলবে সেটা ভিন্ন বিষয়। বয়সে ছোট থাকলেও এখনও মনে আছে একাত্তরের কথা - যখন আমরা গাইতাম জয় বাংলা বাংলার জয় হবে হবে হবে হবে নিশ্চয় ............... আসলে ঐ সময় জয় বাংলা ছিল মন্ত্রের মত। জয় বাংলা আর মুক্তিযুদ্ধ একই সূত্রে গাঁথা। তাই পরে আমরা কি করেছি আর কি করিনি সেই প্রশ্নের সময় এখন নয়। যারা বলেন গত ১৫ বছরে এই স্লোগান দলীয় স্লোগানে পরিণত হয়েছে, তারা তো এটাও স্বীকার করবেন যে এ...

বন্ধুত্ব

Image
সিরিয়া থেকে বিভিন্ন রকমের খবর আসছে। পতনের হাত থেকে শেষ মুহূর্তে আসাদকে বাঁচিয়েছিল রাশিয়া। সেটাও অনেক বছর আগে। এরপর অনেক জল গড়িয়েছে, পৃথিবী নাচতে নাচতে বহু বার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করেছে কিন্তু আসাদ মনে হয় দেশ ও নিজেকে রক্ষার জন্য খুব বেশি কিছু করেননি ইরান আর রাশিয়ার উপর নির্ভর করা ছাড়া। কিন্তু ঈশ্বর তাদের সহায় হন যারা নিজেদের সহায়তা করে। ভাগ্যও এই ফর্মুলা মেনেই চলে। বন্ধু থাকা ভালো তবে বন্ধুর উপর খুব বেশি নির্ভরশীল হলে সেই বন্ধুত্ব হয় প্রভূত্বে পরিণত হয় অথবা নিরাসক্তিতে। কারণ বন্ধুর নিজের অনেক সমস্যা থাকে। তাকে সেসব সমস্যা সমাধানে সময় দিতে হয়।  মস্কোর পথে, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রশ্ন

Image
আজ একটা ছবিতে দেখলাম ডান, বাম, মধ্যম, মৌলবাদী নির্বিশেষে দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করে ভারতের বিপক্ষে সরকারের ভূমিকার প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন। এ ধরণের একাত্মতা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরল। এমনকি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ও তারা সবাই মতৈক্যে পৌঁছুতে পারে নাই। তবে সমস্যা হোল ভারতের বিরুদ্ধে এক হলেও বাংলাদেশের প্রশ্নে তারা এক হতে পারবে কিনা? কারণ বাংলাদেশ শুধু ভূখণ্ড নয়, এটা শুধু জনগোষ্ঠী নয়, এটা রক্ত দিয়ে লেখা একটি সংবিধান। আজ যারা একসাথে ভারত বিরোধী স্লোগান দিলেন তারা কি একই ভাবে একাত্তরে অর্জিত বাংলাদেশের পক্ষে স্লোগান দিতে পারবেন? নাকি সবাই ২০২৪ এর স্বাধীনতাকে অরিজিনাল স্বাধীনতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আগামী দিনে একসাথে চলবেন? দুবনা, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

জাতীয় ঐক্য

Image
সব দেখে মনে হয় দেশে নতুন করে রাজনৈতিক বিন্যাস শুরু হয়েছে। এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে আওয়ামী লীগ ছাড়া জাতীয় ঐক্য হয় কীভাবে? হলে সেটা হবে কাঁঠালের আমসত্ত্ব। ২০০১ সালে যখন বিএনপি নির্বাচনে সবচেয়ে বড় দল রূপে আত্মপ্রকাশ করে তখেন ফেসবুক ছিল না। তবে বন্ধুদের সাথে রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হত। আওয়ামী লীগের বন্ধুদের বলেছিলাম, - তোমাদের উচিৎ বিএনপিকে সরকার গঠন করতে সমর্থন করা। - বলেন কী? এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। - দেখ, আওয়ামী লীগ হেরে গেছে। ভাবমূর্তি এমনিতেই নষ্ট হয়েছে। কিন্তু বিএনপিকে সরকার গঠনে সমর্থন দিলে সেটা মহানুভবতার পরিচয় হবে। কিন্তু আসল কথা হল তাহলে বিএনপিকে জামাতের সাথে আঁতাত করার ক্ষেত্রে দুইবার ভাবতে হবে। করলে বিএনপির সমালোচনা করতে পারবে, না করলে জামাত ক্ষমতা থেকে দূরে থাকবে। কিন্তু তখন কেউ এসবে পাত্তা দেয়নি। এখন আবার আওয়ামী লীগ নিয়ে দুটো কথা বলা যায়। বর্তমান সরকার যদি আওয়ামী লীগকে জাতীয় ঐক্যের জন্য ডাকে তাহলে যেকোনো পরিস্থিতিতেই তারা লাভবান হবে। কারণ - প্রথমত আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে কিছু করলে সেটা সারা বিশ্বে সমালোচনার শিকার হবে। তাই তাদের ডাক দিয়ে সরকার এই সমালোচনা এড়াতে পার...

যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা

Image
এক সময়ে বিশ্বাস করা হত যিনি জ্ঞানী তিনিই ব্রাহ্মণ। পরে অবশ্য এটা পেশা বা পদ হয়ে গেছে - লাভজনক পেশা। ফলে জ্ঞান বিচারে নয়, নিজেদের সুবিধা অসুবিধার কথা চিন্তা করেই ব্রাহ্মণত্বের সার্টিফিকেট দেয়া শুরু হয়। একই ঘটনা ঘটছে এখন গণতন্ত্র, মানবতা - এসব ক্ষেত্রেও। পশ্চিমা বিশ্ব ধরেই নিয়েছে একমাত্র তারাই গণতন্ত্র, মানবতা, বাক স্বাধীনতা এসবের হোল সেলার। তাই যেই একটু স্বাধীন ভাবে চলতে চায় তাকেই স্বৈরাচারী, অগণতন্ত্রী ইত্যাদি খেতাবে ভূষিত করা হয়। জর্জিয়া এক সময়ে রঙিন বিপ্লবের বন্যায় ভেসে গেছিল। ফলাফল - রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ, পরাজয় ইত্যাদি। বর্তমান সরকার এসব থেকে শিক্ষা নিয়ে রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন না করলেও ইউক্রেনকে সাহায্য করা, দ্বিতীয় ফ্রন্ট খোলা - এ ধরণের নীতি থেকে সরে এসেছে এবং জন সমর্থন পাচ্ছে। ফলে কয়েকদিন আগে নির্বাচনে জিতলেও পশ্চিমা বিশ্ব নানা অজুহাতে এই ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকার করছে, সে দেশের প্রেসিডেন্ট, ফ্রান্সের নাগরিক মেয়াদ শেষ হলেও পদত্যাগ করতে অস্বীকার করছেন, এমনকি স্কুলের ছেলেমেয়েদের রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছেন। এভাবেই পশ্চিমা বিশ্ব অ তাদের স্থানীয় দোসররা জর্জিয়াকে ইউক্রেনের পথে ঠ...

নয়া জামানা

Image
কাদেরের ছিল ছাত্রলীগ আর হেলমেট লীগ। ছাত্রলীগের আর কিছু থাক না থাক কমিটি ছিল, অফিস ছিল। মানুষ অন্তত এদের চিহ্নিত করতে পারত। এখন সেই স্থান দখল করেছে মব। মবের কোন কমিটি নেই, নাম নেই, ধাম নেই। এরা বিমূর্ত। ধরাছোঁয়ার বাইরে। ঠিক যেমনটি এক সময় ছিল ক্রসফায়ার। আসলে ক্রসফায়ার বেচারাও বেওয়ারিশ ছিল না। অন্ততঃ পুলিশ বা ব়্যাবকে এ নিয়ে গালি দেয়া যেত। কিন্তু মব! এরাই তো জনতা। একটু ক্ষিপ্ত এই আর কি। তারা একই সাথে ওঝা ও সাপ, শাসক, শোষক এমনকি শোষিত। ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পের বৃহৎ বাস্তবায়ন। ঋণ গ্রহীতা কৃষক শুধু ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ নয়, ব্যাংকের চালকও। শত হলেও নোবেলবিজয়ী বুদ্ধি। একেবারে ধরি মাছ না ছুঁই পানি। ঠিক যেমনটি আমাদের সরকার। মস্কো, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪