Posts

Showing posts from January, 2025

উন্নয়ন

Image
সামাজিক ভালোমন্দের ধারণা খুবই সাবজেক্টিভ। কথায় বলে এক দেশের বুলি আরেক দেশের গালি মানে এক সমাজে যা ভালো অন্য সমাজে তা খারাপ। তবে শুধু দেশ ভেদেই নয় সময়ের সাথে একই সমাজে এই ধারণা পালটায়। এক সময়ে বাল্য বিবাহ বিভিন্ন সমাজে অনুমোদন পেলেও এখন তা পায় না, কারণ সেটা বিজ্ঞানের পরিপন্থী। আর বিজ্ঞান বিরোধী মানেই প্রকৃতি বিরোধী। যুক্তিবাদী ও বিজ্ঞান নির্ভর সমাজ তাই বিভিন্ন সময়ে ভালোমন্দের সামাজিক ধারণা বা নর্ম বদলায়, বদলায় বিজ্ঞানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে। সমাজে যদি এই ভালোমন্দের ধারণা মানবিক না হয় তবে অন্তত উন্নত সমাজ সেটা প্রত্যাখ্যান করে। আমাদের দেশেও বিভিন্ন রাজের সময় ভালোমন্দের সংজ্ঞা বদলায়। বিগত সরকারের সময় উন্নয়ন বলতে বোঝাতো অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি। টাকা কামাই যখন ছিল মানুষের সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি তাই উপার্জন কি পথে হচ্ছে সেটা অনেক সময়ই এড়িয়ে যাওয়া হত। ফলে সামাজিক ভাবে সফল হতে একদল মানুষ যে কোনো ধরণের অপরাধ করতে তারা দ্বিধা করত না। বর্তমানে ক্ষমতাসীনরা মনে হয় এক বিশেষ ধরণের নৈতিকতা সামাজিক উন্নয়নের মানদণ্ড হিসেবে গ্রহণ করেছে। আর সেই নৈতিক উচ্চতায় পৌছানোর জন্য শুরু হয়েছে নাটক, মাজার, বাউল, নারী...

কুকুর ও মানুষ

Image
গতকাল যখন সোফায় বসে ডাকের অপেক্ষা করছি, পাশে এক ভদ্রলোক বসে জিজ্ঞেস করলেন আপনি ভারতীয়? আমি বাংলাদেশ থেকে। আচ্ছা। আসলে ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান - আপনাদের সবাইকে দেখতে এক রকম লাগে তো তাই ভাবলাম ভারতীয়। আমারও এরকম হয়। রাশিয়ার তো বটেই, সোভিয়েত ইউনিয়নের বিভিন্ন রিপাবলিকের লোকদের প্রথমে ঠিক চিনে উঠতে পারি না কে কোন জাতির যেমন পারিনা ইউরোপের বা আফ্রিকার মানুষদের দেশ হিসেবে ঠিক ঠিক চিনতে। অনেকক্ষণ কথাবার্তা হল, মানে মিনিট পনেরো, যতক্ষণ ডাকের অপেক্ষায় বসে ছিলাম। ভদ্রলোক কুবান এলাকার, অনেক দিন কাটিয়েছেন সাইবেরিয়ায়, এখন দ্মিত্রভের পাশে এক গ্রামে থাকেন, সেখানে আঙ্গুর ফলান নিজের দাচায়। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য দুবনায় এসেছেন। আমি সময় পেলেই ভোলগার তীরে হাঁটি। গ্রীষ্মে এখানে অসখ্য মানুষ কুকুর নিয়ে হাঁটতে যায়। কত রকমের যে কুকুর। কে যেন বলেছিল এক বিকেলে ও চল্লিশ জাতির কুকুর দেখেছে। আমি নিজেও কখনও কখনও কুকুর নিয়ে ঘুরতে যাই। অন্য কুকুরদের দেখলে আমাদের কুকুরেরা হাই হ্যালো করে, কখনও চুমু দেয়, কালেভদ্রে ঘেউ ঘেউ করে। কখনোই মনে হয়নি কুকুররা একে অন্যকে জিজ্ঞেস করে ও চিহুয়াহুয়া নাকি আইরিশ সেট্টার নাই অন...

বৈচিত্র্য

Image
বন্ধুদের অনেকেই সব ধর্মের প্রতীক দিয়ে তৈরি কোন ছবি শেয়ার করে বা নিজেদের প্রো পিক হিসেবে ব্যবহার করে। এটা সাধারণত তারাই করে যারা ধর্মে খুব একটা বিশ্বাস রাখে না। হয়তো একারণেই সব ধর্মকে একই টেবিলে বসানো এদের জন্য কোন সমস্যা নয়। এদের অনেকেই ভাবে সব ধরনের মাংস বা বিভিন্ন ধর্মের হারাম হালাল সব খেলেই সব ধর্মকে সমান চোখে দেখা হয়, সবার প্রতি ন্যায় বিচার করা হয়। এরা ভাবে না যে তাতে সব ধর্মের বিশ্বাসীরা ক্ষুব্ধ হতে পারে বা অন্তত ভাবতে পারে যে তাদের অবজ্ঞা করা হচ্ছে। আমার এই বন্ধুরাই কিন্তু একই টেবিলে সিপিবি ও জামাতের বসাটা ভালো চোখে দেখবে না, অনেকেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি অথবা ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান পার্টির দহরমমহরম দেখলে নাক সিঁটকায়।  আসলে গোরু, ঘোড়া, বাঘ, ভালুক, সিংহ, হাতি, নেকড়ে, হরিণ - এদের আমরা পশু হিসেবে একই ক্যাটাগরিতে ফেলে এক ঘরে হয়তো রাখতেই পারি কিন্তু তা যে কারো জন্য পৌষ মাস হবে আর কারো সর্বনাশ ডেকে আনবে সেটা প্রমাণ করার জন্য পরীক্ষা নিরীক্ষা না করাই ভালো। আর যদি পরীক্ষা করতেই হয় তা করতে হবে মানুষের কঠোর নিয়ন্ত্রণে যাতে তারা সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। ঈশ্বরে ব...

পরিবর্তন

Image
আপনি যখন কোন পরিবর্তন চান তার মানে আপনি আর আগের অবস্থায় থাকতে চান না আর একবার পরিবর্তন হয়ে গেলে আগের অবস্থায় থাকতে পারবেন না। যদিও আমরা সবসময়ই আরও ভালো অবস্থানে যাবার জন্য পরিবর্তন চাই, তবে পরিণামে খারাপ অবস্থায় পড়ব যে না এই গ্যারান্টিও কেউ দেয় না। যদিও আমাদের অনেকের ধারণা ছিল বিগত সরকারের আমলে আমরা নৈরাজ্যের তলানিতে অবস্থান করছিলাম, এর চেয়ে খারাপ আর কিছু হতে পারে না, এখন মনে হয় সেটা ছিল ফলস মিনিমাম, মানে দৃষ্টির আড়ালে যে আরও গভীর তলানি ছিল সেটা আমাদের চোখে পড়ে নি। এটা তলানির দোষ নয়, আমাদের দূরদর্শিতার সীমাবদ্ধতা বা অদূরদর্শিতা। এটা অবশ্য আমাদের জাতীয় চরিত্র। সমস্যা হল তলানি যত গভীর হয় সেখান থেকে ভেসে ওঠা তত কষ্টকর ও সময়সাপেক্ষ হয়। তবে এ থেকে বিগত সরকারকে যেমন বুঝতে হবে মানুষ তাদের সেই সময়ের দুঃশাসন আর চায় না, বর্তমান সরকার বা ক্ষমতা প্রত্যাশীদের বুঝতে হবে অবস্থার উন্নতি না ঘটালে তাদের বিতাড়িত হওয়াও সময়ের ব্যাপার। এখন শুধু অপেক্ষার পালা। কী হতে পারে দীর্ঘ অপেক্ষার পর? হয় উজির মরবে, নয় তো গাধা আর ভাগ্য খারাপ হলে হোজা নিজেই মরবে। মানে হয় একাত্তরের পক্ষের শক্তি এদে...

বহু হুর

আলী রিয়াজের প্লুরালিজম বা বহুত্ববাদ আর বেহেশতের বাহাত্তর জন হুর পরীর মধ্যে গুণগত কোন পার্থক্য নেই। দুটোই মিথ্যা আশ্বাস, দুটোই ধরাছোঁয়ার বাইরে। অশিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত জনগণ বহুত্ববাদ বহুমূত্র রোগের সাথে গুলিয়ে ফেলতে পারে বিধায় তাদের সামনে বাহাত্তর জন হুর পরী নামক মূলা ঝুলাতে হয়। শিক্ষিত ও নিজেদের প্রগতিশীল বলে দাবি করা মানুষ গোপনে এসবে বিশ্বাস করলেও হুরদের নামে ঠকতে তাদের আত্মসম্মানে লাগে। তবে তারা বহুত্ববাদ নামক গাল ভরা বুলির কাছে অনায়াসে নিজেদের বুদ্ধি শুদ্ধি বিকিয়ে দিতে রাজি। আলী রিয়াজরা এটা ভালো করেই জানে। শেখ হাসিনা একাত্তরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে মদিনা সনদে পৌঁছুতে চেয়েছিলেন, আলী রিয়াজ একাত্তর থেকে চীনের সমাজতন্ত্র, মার্কিন গণতন্ত্র ঘুরে মদিনা সনদে যাবার পথ খুঁজে বেড়াচ্ছে। আর সমাজে প্রগতিশীল ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বলে পরিচিত অনেক মানুষ ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মত এতে লাফাচ্ছে। অথবা হতে পারে ছাত্র লীগ ও আওয়ামী লীগের মধ্যে লুকিয়ে থাকা জামাত শিবিরের মত এরাও প্রগতিশীলতার পশ্চিমী পোষাকে টুপি দাড়িওয়ালা শিবির, সময়ের অপেক্ষায় আছে আত্মপ্রকাশ করার জন্য। মস্কোর পথে, ...