বৈচিত্র্য
বন্ধুদের অনেকেই সব ধর্মের প্রতীক দিয়ে তৈরি কোন ছবি শেয়ার করে বা নিজেদের প্রো পিক হিসেবে ব্যবহার করে। এটা সাধারণত তারাই করে যারা ধর্মে খুব একটা বিশ্বাস রাখে না। হয়তো একারণেই সব ধর্মকে একই টেবিলে বসানো এদের জন্য কোন সমস্যা নয়। এদের অনেকেই ভাবে সব ধরনের মাংস বা বিভিন্ন ধর্মের হারাম হালাল সব খেলেই সব ধর্মকে সমান চোখে দেখা হয়, সবার প্রতি ন্যায় বিচার করা হয়। এরা ভাবে না যে তাতে সব ধর্মের বিশ্বাসীরা ক্ষুব্ধ হতে পারে বা অন্তত ভাবতে পারে যে তাদের অবজ্ঞা করা হচ্ছে। আমার এই বন্ধুরাই কিন্তু একই টেবিলে সিপিবি ও জামাতের বসাটা ভালো চোখে দেখবে না, অনেকেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি অথবা ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান পার্টির দহরমমহরম দেখলে নাক সিঁটকায়।
আসলে গোরু, ঘোড়া, বাঘ, ভালুক, সিংহ, হাতি, নেকড়ে, হরিণ - এদের আমরা পশু হিসেবে একই ক্যাটাগরিতে ফেলে এক ঘরে হয়তো রাখতেই পারি কিন্তু তা যে কারো জন্য পৌষ মাস হবে আর কারো সর্বনাশ ডেকে আনবে সেটা প্রমাণ করার জন্য পরীক্ষা নিরীক্ষা না করাই ভালো। আর যদি পরীক্ষা করতেই হয় তা করতে হবে মানুষের কঠোর নিয়ন্ত্রণে যাতে তারা সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। ঈশ্বরে বিশ্বাস ও ধর্ম পালনের কারণে সবাই ধার্মিক হলেও বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে যে বিশ্বাস, অনুশাসন ও আচরণগত বিভেদ বিদ্যমান সেসব অনেক ক্ষেত্রেই এন্টাগোনাস্টিক, এক ধর্মের পূণ্য অন্য ধর্মের জন্য পাপ। তাই তাদের সবাইকে একত্রে রাখতে হলে দরকার রাষ্ট্রীয় ভাবে কঠোর নিরাপত্তা ও সবার প্রতি আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ। আর এ জন্যেই সেসব দেশে বিভিন্ন ধর্ম বিশ্বাসের মানুষ বাস করে সেখানে ন্যায় বিচারের অন্যতম প্রধান শর্ত হল ধর্মনিরপেক্ষতা।
মস্কো, ২১ জানুয়ারি ২০২৫
Comments
Post a Comment