অপেক্ষা

প্রেসিডেন্ট মুবারক যখন ক্ষমতাচ্যুত হন তার আগে মিশরে শক্তির তিনটি কেন্দ্র ছিল – তাঁর ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি, সেনাবাহিনী ও মুসলিম ব্রাদারহুড। কোন কোন গবেষকের ধারণা সেনাবাহিনী বহুদিন ধরে মুবারক ও তাঁর ছেলের হাত থেকে মুক্তি চাইছিল। রাস্তার বিক্ষোভ তাদের সেই সুযোগ করে দেয়। যদিও তাৎক্ষণিক ক্ষমতা গ্রহণ করে মুসলিম ব্রাদারহুড কিন্তু অচিরেই সেনাবাহিনী তাদের ক্ষমতাচ্যুত করে। মৌলবাদী ব্রাদারহুডকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য সেনাবাহিনীকে পশ্চিমা বিশ্বের রোষে পড়তে হয়নি। কয়েকদিন আগে ফেসবুকে একটি পুরানো ভিডিও দেখলাম যেখানে এক উচ্চ পদস্থ সেনা কর্মকর্তা শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন সেনাবাহিনীতে ব্যাপক পজিটিভ পরিবর্তনের জন্য। এটা তো অস্বীকার করার উপায় নেই যে বিগত ১৫ বছরে দেশে যারা সবচেয়ে বেশি সুযোগ সুবিধা পেয়েছে সেনাবাহিনী তাদের অন্যতম। মিশরের ঘটনা আর জুলাই আগস্টের সেনাবাহিনীর ভূমিকা দেখে মনে প্রশ্ন জাগে তারা নিজেরা তো হাসিনাকে ক্ষমত্যাচুত করার জন্য রাস্তার প্রতিবাদকে উস্কে দেয়নি? আর ক্যু না করে বেসামরিক প্রশাসনের হাতে ক্ষমতা দিয়ে এবং দেশের বর্তমান অরাজকতায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে তেমন কোন ভূমিকা না রেখে তারা নিজেদের ক্ষমতায় আসার পথ সুগম করছে না তো? আজকাল প্রায়ই ২০ তারিখের কথা শুনি। একজনকে জিজ্ঞেস করায় বলল, ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প শপথ নেবেন। বাংলাদেশের মানুষ সেদিকে তাকিয়ে আছে। হায়রে স্বাধীনতা! নিজেদের ভাগ্যের জন্য যদি ওয়াশিংটন, দিল্লি, ইসলামাবাদ, পিকিং, মস্কো – এসব দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় – কি লাভ এই স্বাধীনতায়? এটা তো অনেকটা ডিগ্রি পাওয়ার মত – ডিগ্রি আছে কিন্তু জ্ঞান নাই। অপেক্ষা, এখন শুধুই অপেক্ষার পালা।

দুবনা, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

Comments

Popular posts from this blog

প্রশ্ন

সিপিবি কংগ্রেস

রিংকু