অদ্ভুত আনন্দ

এবার সত্যিই অবাক করা শীত। নিজেই যেন কাঁথা কম্বল নিয়ে হাজির। এর উপর ফেসবুকে ফুলের ছড়াছড়ি। টিউলিপে ভরে গেছে চারিদিক। আর সেটা নতুন করে প্রমাণ করছে বাঙালির মনস্তাত্ত্বিক ভারসাম্যহীনতার কথা। আমরা সবাই যেন গণি মিয়া। নিজের সুখ দুঃখ নিয়ে যত না চিন্তিত অন্যের সুখে দুঃখে লাফাতে তারচেয়ে বেশি ব্যস্ত। আচ্ছা টিউলিপ সিদ্দিকী বাংলাদেশের কে? তিনি কি কোন ভাবে বাংলাদেশের কাছে দায়বদ্ধ? তার হিসাব নিকাশ, তার দেনা পাওনা সব তো বৃটিশ জনগণ আর ব্রিটেনের আইন আদালতের সাথে। এতে আমাদের সুখের বা দুঃখের কী আছে? যতদূর জানা যায় তিনি বিচার যাতে বিঘ্নিত না হয় সেজন্য পদত্যাগ করেছেন। আমাদের কয়জন মন্ত্রী, কয়জন মানুষের সেই সৎ সাহস আছে? কয়জন দায়িত্ব থেকে অবসর নিয়ে আদালতের সামনে দাঁড়াতে পারবেন? তাকে নিয়ে এই যে বিভিন্ন কথাবার্তা সবাই বলছি, যদি বৃটিশ আদালতে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন তখন আমরা কি তাকে নিয়ে ট্রল করার জন্য এতটুকু অনুতপ্ত হব? আমাদের আরও মনে রাখা দরকার পশ্চিমা বিশ্বের প্রচুর নেতা, এমনকি প্রথম সারির নেতারা, বিভিন্ন অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারির সাথে জড়িত হয়েও নিজ নিজ দেশের আইন না ভাঙার কারণে খালাস পেয়ে যান। আর আমাদের কোন দেশ কখনোই এদের বিচার করতে পারে না। টিউলিপ চৌধুরী যদি দোষী প্রমাণিত হন, এতে আমরা একটু খুশি হয়তো হতে পারি, কিন্তু এটা পশ্চিমা বিশ্বে বসবাসকারী বাংলাদেশী, যারা স্থানীয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে চায়, তাদের জন্য নেগেটিভ বিজ্ঞাপন হিসেবে কাজ করতে পারে আমাদের এই অতি উৎসাহ। অন্যের বিপদে আনন্দিত হওয়া মানসিক ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ। 

দুবনা, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫

Comments

Popular posts from this blog

রিসেটের ক্ষুদ্র ঋণ

পরিমল

প্রশ্ন