Posts

Showing posts from January, 2023

দ্বিচারিতা

Image
শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য জ্ঞানার্জন করা। জ্ঞান কী? সত্য সন্ধান। কোন কোন ধর্মে শুধু ঈশ্বরের কাছে আত্মসমর্পণের কথাই বলা হয় না, বলা হয় ঈশ্বরকে জানার কথা। আর যারা বিশ্বাসী তাদের জন্য ঈশ্বরই পরম সত্য। অন্যদিকে বিজ্ঞানের দিক থেকে দেখলে জ্ঞানার্জন হল প্রকৃতির রহস্য উদ্ঘাটন করা, সত্যকে জানা। তাই সে অর্থে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হল সত্য জানা ও অন্যদের সেটা জানানো। এমনকি বিবর্তনবাদ যদি সত্য নাও হয় সেটা এখনও কেউ প্রমাণ করেনি, যেমন কিনা প্রমাণ করেনি ধর্ম ভিত্তিক সৃষ্টির বিভিন্ন ন্যারেটিভ। তাই পাঠ্যসূচী থেকে বিবর্তনবাদ বাদ দেয়া আসলে কোন এক মতকে আগে থেকে যাচাই না করেই মেনে নেওয়া, আদালতে সাক্ষী প্রমাণ ছাড়াই কোন রায় দেয়া। বিজ্ঞান পড়েও হাজার হাজার মানুষ যেমন বিশ্বাসী থেকে যায় তেমনি বিজ্ঞান না পড়েও হাজার হাজার মানুষ অবিশ্বাসী হয়। এই বিশ্বাস আর অবিশ্বাস আসলে কিছুই নয় - কোন কিছু অন্ধভাবে মেনে নেওয়া অথবা জেকন কিছু মেনে নেবার বা না নেবার আগে প্রশ্ন করা, যাচাই করা। যেকোন মনোপলি দিনের শেষে মানের অবনতি ঘটায়। তাই শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান উঠিয়ে দিলে সেটা হবে শিক্ষা ব্যবস্থাকেই পঙ্গু করা। বিভিন্ন বৈ...

অজুহাত

Image
সোভিয়েত ফেরৎ অনেকেই বলে তারা তো সোভিয়েত ইউনিয়নে পড়াশোনা করেছে। রাশিয়া এখন পুঁজিবাদী দেশ। তাই রাশিয়ার পক্ষে কথা বলার কোন দায় দায়িত্ব তাদের নেই। একথা অনেক বামপন্থী লোকজনও বলে। রাশিয়ার ভালোমন্দ সবকিছু চোখ বন্ধ করে সমর্থন করার দায়িত্ব কারোই নেই। সোভিয়েত ইউনিয়নের অনেক ব্যর্থতার মধ্যে সাফল্য কম ছিল না। সব সমাজের মত সেখানেও বর্জনীয় ও শিক্ষনীয় অনেক কিছুই ছিল। তাই অন্ধভাবে সোভিয়েত বিরোধী কাজ কর্মের বিরুদ্ধে কথা বলার দায়িত্ব আমাদের আছে। ইয়েলৎসিনের রাশিয়ায় আর বর্তমানে ইউক্রেন, মলদাভিয়া, বাল্টিকের দেশগুলোয় অনবরত সোভিয়েত ইউনিয়নের সমস্ত কিছু ধ্বংস করেছে, করে যাচ্ছে। বিশেষ করে পুঁজিবাদের উপর সমাজতন্ত্রের সত্যিকারের বিজয়গুলো। আর সেটা হচ্ছে বিশ্ব পুঁজিবাদের ইন্ধনে ও নির্দেশনায়। ইউক্রেনের বর্তমান সমস্যার শুরুতেও আছে সোভিয়েত ইউনিয়নের সবকিছু অস্বীকার করা আর ফ্যাসিবাদকে রাষ্ট্রীয় আইডোলজিতে পরিণত করা।  অবশ্য এই সব সোভিয়েত প্রেমীদের এসবের বিরুদ্ধে বলার কোন দায় দায়িত্ব নেই। নিজেদের সুবিধা অর্জনে এরা সবসময়ই স্বাধীন। দুবনা, ২৬ জানুয়ারি ২০২৩

সততা

Image
দেশে বেশির ভাগ লোককেই দেখি কেমন আছে জানতে চাইলে বলে উপরওয়ালার কৃপায় ভালোই আছে। তবে অনেকেই সৎ পথে খুব একটা ভালো থাকা যায় না সে কথা শুনিয়ে দেয়। যারা খারাপ থাকার পেছনে বা বলা চলে খুব একটা ভাল না থাকার পেছনে সততাকে দোষ দেয় তাদের আমার কেন যেন সৎ বলে মনে হয় না বা বলা চলে তাদের সততা নিয়ে সন্দেহ জাগে। আচ্ছা তাদেরকে তো কেউ জোর করে সৎ থাকতে বলছে না। যেহেতু তাদের চারিদিকে অসৎ লোকের ছড়াছড়ি তার মানে অসৎ ভাবেও থাকা যায়। অন্তত আশেপাশে যারা ভাল থাকে তাদের তারা অসৎ মনে করে। তাহলে প্রশ্ন জাগে সৎ থাকা তো তাদের নিজেদের চয়েস আর তাই যদি হয় তবে অভিযোগ কেন? যে লোক অসৎ পথে চলে এটা তার চয়েস, এ জন্যে সে অভিযোগ করে না, নিজের মনের সাথে মিলিয়ে সে সেভাবে চলে। আর যারা সৎ থাকে আর সৎ থাকার ফলে ভাল নেই বলে অভিযোগ করে তারা আসলে অসৎ - কেননা তার সততা তাকে খুশি বা সুখী করছে না। সে নিজেকে ধোঁকা দিচ্ছে। এটা অনেকটা লোক দেখানো ধর্ম পালনের মত। এরকম দেখি প্রায় সব ক্ষেত্রেই। যেমন অনেকেই রাজনীতি বা সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। এবং তা তারা করে মনের টানে। তারা যৌক্তিক ভাবেই বিশ্বাস করে যে তারা মানুষের মঙ্গলের জন্য নিজেদের সব কিছু ...

গণতন্ত্র

Image
খবরে প্রকাশ সুইডেনে কারা যেন কোরআন পুড়িয়েছে। এ নিয়ে তুরস্ক সহ বিভিন্ন দেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। সুইডেন সরকার এটাকে গণতান্ত্রিক অধিকার বলে পাশ কাটিয়ে গেছে।  অনেকের ধারণা সেখানে যদি কেউ এলজিবিটি কমিউনিটিকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলত বা তাদের প্রতীক পুড়িয়ে প্রতিবাদ করত তবে এটা সরকারের দৃষ্টি এড়িয়ে যেত না। এটা ভাবার বাস্তব ভিত্তি আছে। যখনই সমাজে এ ধরনের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড দেখা দেয় সেখান থেকে গণতন্ত্র পালাতে বাধ্য। গণতন্ত্র সরকার নির্বাচনে সবার অধিকার নিশ্চিত করে, তবে বাস্তবে সেটা কখনোই ঘটে না, কারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানে সবাই নয়। ভোটাধিকার সমস্যার আংশিক সমাধান। মানুষ অন্তত নিজের মত করে সরকার গঠনের চেষ্টা করতে পারে। পক্ষান্তরে সত্যিকারের গণতন্ত্র সবার জন্য ন্যায় না হলেও একই ধরণের বিচারের নিশ্চয়তা দেয়। "আইনের চোখে সবাই সমান" এই নীতি যখন সমাজ থেকে উধাও হয়ে যায় সেই সমাজকে গণতান্ত্রিক বলা কষ্টসাধ্য তা সে রাশিয়া হোক, আমেরিকা হোক, সুইডেন হোক আর ভারত বা বাংলাদেশ বা অন্য যে কোন দেশ হোক।  দুবনা, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩

নকল নকল

Image
কয়েক দিন ধরে ফেসবুকে সপ্তম শ্রেণীর বিজ্ঞান বইয়ে নকল নিয়ে তান্ডব বয়ে যাচ্ছে। যতদূর বুঝলাম তাতে সপ্তম শ্রেণীর বিজ্ঞানের পাঠ্য পুস্তকে দু'টো প্যারাগ্রাফ ন্যাশনাল জিওগ্রাফি (অন্য কিছুও হতে পারে, তবে রেসপেক্টেবল প্রকাশনা) থেকে হুবহু তুলে দেয়া হয়েছে। আর তাই নিয়ে এই লঙ্কা কাণ্ড। তবে অধিকাংশ লেখা পড়ে মনে হয়েছে মানুষ বকার জন্য বকেছে বা সুযোগ পেয়ে বকেছে। এই ঘটনা কতটুকু ক্ষতিকর বা আদৌ ক্ষতিকর কি না সেটা নিয়ে আলোচনা নেই বললেই চলে। ভুল করা অন্যায়, তবে ভুলের সমালোচনা করার সময় যদি সেই ভুলের পরিণতি সম্পর্কে ধারণা না থাকে বা সেটা নিয়ে ভাবার ইচ্ছে না থাকে তাহলে সমালোচনা তার মূল উদ্দেশ্য হারায় যদি না উদ্দেশ্য হয় সুযোগ পেয়ে এক হাত নেয়া। কারণ সমালোচনার মূল লক্ষ্য ভুল সংশোধন। তবে অনেক সময় ভুল আশাতীত ফল বয়ে আনে। এরকম ঘটনা অনেক যুগান্তকারী আবিষ্কারে সাহায্য করেছে। আমি নিজে বিজ্ঞানের ছাত্র, গবেষণা করি, পড়াই। নিয়মিত গবেষণা পত্র লিখি। তাই কিছুটা হলেও অভিজ্ঞতা আছে। আমি অবশ্য শুধু পদার্থবিজ্ঞানের কথা বলতে পারব। এখন বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখা এতটাই সুদূর বিস্তৃত যে অধিকাংশ গবেষক কোন এক বিষয় নিয়ে বছরের ...

দরদ

Image
গত শতাব্দীর আশি ও নব্বইয়ের দশকে একটা কথা চালু খুব ছিল বাজারে। যদি সোভিয়েত ইউনিয়ন বা রাশিয়া নিজ দেশেও সব পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় তাহলেও পৃথিবীতে মানব জাতির অস্তিত্ব থাকবে না।‌ কথাটা এ কারণেই উঠেছিল যে তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন বা রাশিয়ার অর্থনীতির অবস্থা খুবই করুণ ছিল আর তাই পারমাণবিক বোমা বহনের জন্য রকেট বা প্লেনের যে জ্বালানী দরকার হয় সেটা সংগ্রহ করার অবস্থা তখন এ দেশের ছিল না বলেই ধরা হত। হিসেবে ভুল ছিল নাকি ইতিমধ্যে রাশিয়া কিছুটা হলেও যুক্তিশীল হয়ে উঠেছে যে সেই সম্ভাবনা এখন আর কেউ ধর্তব্যের মধ্যে নিচ্ছে না। কেউ এটাও ভাবছে না যে ইউক্রেন তো বটেই কন্টিনেন্টাল ইউরোপে পারমাণবিক হামলার বিরূপ প্রতিক্রিয়া রাশিয়ার উপর পড়বে। সেটাই যদি হয় তাহলে তারা কোন দুঃখে ইউক্রেনে পারমাণবিক বোমা ফেলবে। আর ফেলতে যদি হয় তাহলে তাদের অপশনগুলোই বা কী হতে পারে? অনেকের ধারণা ইউক্রেনের হাত দিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে গেলে রাশিয়ার কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকবে না অন্য দেশে পারামনাবিক হামলা চালানোর। কিন্তু প্রশ্ন যখন অস্তিত্বের তখন মানুষ যুক্তি খোঁজে না। তাই রাশিয়াকে পরাজিত করার মধ্য দিয়ে পারমাণবিক বিপর্যয় এড়ানোর কথা ...

প্রতিবেশী

Image
  কিছুদিন আগে এক প্রতিবেশীর সাথে পরিচয় নিয়ে লিখেছিলাম। লিখেছিলাম যে আমাদের দেশ এমনকি পাড়ায় কেউ এলে দু'দিন পর সবাই তার হাঁড়ির খবর জানে আর এখানে বছরের পর বছর এক বিল্ডিংএ থেকেও লোকজন একে অন্যকে চেনে না, জানে না। এরপর থেকেই মনে প্রশ্ন জাগল, কেন এমন হয়। কৌতূহলের অভাব? মনে হয় না। এরাও খুবই কৌতূহলী, তবে এদের কৌতূহল ভিন্ন ব্যাপারে। পরনিন্দা পরচর্চা এখানে কেউ করার জন্য করে না। অর্থাৎ যদি কারো সাথে কারো সমস্যা থাকে তাহলে হয়তো বন্ধুদের সাথে এ নিয়ে আলাপ করতে পারে কিন্তু নিন্দা করার জন্য কারো নিন্দা করা অথবা অযথা অন্যদের ব্যাপারে কথা এদের তেমন বলতে দেখি না। কারণ মনে হয় এদের আমাদের মত টি স্টল বা মাছের বাজার নেই। আমাদের দেশে সবাই টি স্টলে আড্ডা দেয় আর সেখানে একের পর এক মানুষ এসে জড়ো হয়। রাজনীতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন আলাপ আলোচনা করে। কিন্তু এখানে সেই সিস্টেম নেই। ক্যাফে বা কোথাও গেলে কয়েকজন লোকই যায় আর যায় সময়টা এঞ্জয় করার জন্যে। অন্যকে নিয়ে আলোচনা করে সময় নষ্ট করার সময় কোথায়? পরনিন্দা পরচর্চা এটাও একটা সংস্কৃতি। দুবনা, ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ 

অতিকায় অতি

Image
আমরা যখন "মা আম আন" দিয়ে স্কুলে বাংলা শিখতে শুরু করি তখন আসলে পরিচিত এই ছবির মধ্য দিয়ে ভাষার বিশাল জগতে প্রবেশ করি। একই কথা বলা যায় অন্য যেকোনো ক্ষেত্রে। পরিচিত উদাহরণ আমাদের প্রবেশ পথটা ভয়ভীতি মুক্ত করে, কিন্তু শিখি আমরা এই সব উদাহরণের ভেতরে লুকিয়ে থাকা কোন পদ্ধতি, কোন নিয়ম কানুন। এই নিয়মগুলো সিনেমার ২৫ তম ফ্রেমের মত। একই ভাবে আমরা যখন কাউকে বিধর্মী, বিদেশি বা ভিন্ন মতের কোন লোককে ঘৃণা করতে শেখাই সে আসলে ঘৃণা করতে শেখে। ফলে সে শুধু উদাহরণের মানুষদের ঘৃণা করে না, ঘৃণা করে তাদের যাদের সে পছন্দ করে না। এই ঘৃণার সংস্কৃতি এক সময় সমাজের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনে। কারণ সে সব সমাজে মানুষ হয় সন্দেহবাতিকগ্রস্ত। প্রশ্ন উঠতে পারে তাহলে কি আমরা কাউকে কোন কিছু ঘৃণা করতে শেখাব না? শেখাব, তবে মানুষকে নয়, অন্যায়কে। পাপীকে নয়, পাপকে ঘৃণা করতে শেখাব। কারণ তখন আমাদের কোনটা ন্যায় আর কোনটা অন্যায় সেটা শেখাতে হবে। সেটা শিখলে একজন অন্যজনের ধর্ম, বর্ণ, জাতি এসব দেখে তাকে ঘৃণা করবে না, ঘৃণা করবে তার খারাপ কাজ বা অন্যায়ের জন্য। একইভাবে চাটুকারিতা, ভক্তি বা অতিভক্তি, তৈলমর্দন এসবও সংক্রামক। যদিও মান...

সোভিয়েত ইউনিয়ন

Image
বর্তমান আমেরিকা ও ইউরোপের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখে অনেকেই তাদের আশির দশকের সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে তুলনা করে। এটা মূলত ভিন্ন মতের প্রতি অসহিষ্ণুতা ও শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় প্রোপাগান্ডার কারণে।‌ তবে এর বাইরেও বেশ কিছু অর্থনৈতিক মিল দেখা যায়। বিশেষ করে আমেরিকার সাথে।  বর্তমানে আমেরিকার আয়ের প্রধান উৎস কি? ইউরোপে গ্যাস রপ্তানি আর বিশ্বের দেশে দেশে অস্ত্র সরবরাহ। ঠিক যেমন ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নে। আশির দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নে পেরেস্ত্রোইকা শুরু হয়। আমেরিকায় এখন পুরা দমে চলছে রাজনৈতিক পুনর্নির্মাণ। আরও একটা মিল হচ্ছে পেরেস্ত্রোইকার শুরুতে বিশ্ব অর্থনীতিতে সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল ১৫%। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে প্রায় দুই দশক আমেরিকার অর্থনীতি ছিল বিশ্ব অর্থনীতির ৫০%। নিয়তির পরিহাসে এখন আমেরিকার অর্থনীতি বিশ্ব অর্থনীতির ১৫%। আশির দশকের শেষ দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের আভ্যন্তরীণ সমস্যা এত প্রকট ছিল যে বিশ্ব রাজনীতিতে তার প্রভাব ক্রমশ কমতে শুরু করেছিল। এখন ইউরোপ তো বটেই, এমনকি আমেরিকা বিভিন্ন ধরণের আভ্যন্তরীণ সমস্যায় জর্জরিত আর বিশ্ব রাজনীতিতে তাদের প্রভাব ক্ষয়িষ্ণু। যা আছে তা মূলতঃ অর্থনৈতি...

পুরানো নববর্ষ ও কিছু প্রশ্ন

Image
আজ পুরানো নববর্ষ। জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী। এ উপলক্ষ্যে গতরাতে রুশ টিভি চ্যানেলগুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। আমরা দেখলাম রাশিয়া -১ এ গলুবই আগানিয়ক বা নীল আলো। সোভিয়েত ইউনিয়নে প্রচন্ড জনপ্রিয় ছিল এই প্রোগ্রাম। নতুন রাশিয়ায় এই নামে প্রোগ্রাম হলেও আগের সেই আমেজ আর ছিল না। পশ্চিমা হাঙ্গর সংস্কৃতির খপ্পরে পড়ে যতটা না সংস্কৃতি তারচেয়ে বেশি অপসংস্কৃতির প্রচার হত বেশি কী গানে, কী পোশাকে, কী কৌতুকে। জৌলুশ ছিল, প্রাণ ছিল না, বিশেষ করে রুস্কায়া দুশা। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে স্পেশাল মিলিটারি অপারেশন শুরু করার পরে পশ্চিমপন্থী যারা বিশেষ করে এত দিন রুশ মঞ্চের একচ্ছত্র অধিপতি ছিল তাদের এক বিরাট অংশ দেশত্যাগ করে। ফলে ধীরে ধীরে মঞ্চে ফিরে আসে সোভিয়েত ও রুশ দেশপ্রেমিক ধারার শিল্পীরা। আসলে ফেব্রুয়ারি থেকেই পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। কিন্তু নীল আলো মনে হয় সব কিছু ছাড়িয়ে গেছে। নতুন করে পুরানো গান, কবিতা ফিরে এসেছে। মনে হচ্ছিল আমরা যেন আবার আশির দশকের এটমোস্ফেয়ারে চলে গেছি। দেখি গুলিয়ার চোখে জল।  "পেরেস্ত্রোইকা আমাদের জেনারেশনের সব স্বপ্ন, আমাদের ভবিষ্যৎ চুরি করে নিয়েছে, ধ্...

দৃষ্টিভঙ্গি

Image
গতকাল দৃষ্টিভঙ্গির উপর একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। বলেছিলাম আমেরিকা নিজের কুকুর ছানা পছন্দ করে, আর অন্যদেশ বা সমাজ কুকুর শাবক অপছন্দ করে। আসলে সেটা সামোসা সম্পর্কে রুজভেল্টের উক্তির সূত্র ধরে লেখা। কথিত আছে প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট নাকি বলেছিলেন "হতে পারে সামোসা কুকুরের বাচ্চা, কিন্তু সে আমাদের কুকুরের বাচ্চা"। আসলে এটা সেই দেশ বা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি। বলা হয় এই আমেরিকাতেই সমাজের চোখে "যদি কেউ এক ডলার চুরি করে সে চোর, কিন্তু মিলিয়ন ডলার চুরি করলে সে মিলিয়নিয়ার"। এটাও সেই একই দৃষ্টিভঙ্গি। কারণ একজন লোক যখন এক ডলার চুরি করে সে সেটা খেয়ে ফেলে, একান্তই ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করে। কিন্তু কেউ মিলিয়ন ডলার চুরি করে সেটা খায় না। তা দিয়ে শিল্প ও বাণিজ্য গড়ে তোলে, নিজের তো বটেই আরও দশ জনের উপার্জনের ব্যবস্থা করে, সমাজের উপকার করে। তাই শুনতে খারাপ লাগলেও এসব কথার অনেক পজিটিভ মেসেজ পাওয়া যায়। তবে এটা শুধু তাদের জন্য যারা নিজের সমাজের জন্য কিছু করে। যারা দেশের টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করে তাদের ক্ষেত্রে এটা মোটেই প্রযোজ্য নয়। একই ভাবে একজন দুই জনকে খুন করে খুনী আর লাখ ...

রায়

Image
মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ। কিন্তু মানুষ তো শুধু মানুষ নয়, সে বিভিন্ন দোষ গুণের সমন্বয়ে গঠিত। তাই আমরা যখন কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির কথা ভাবি তখন তার বিভিন্ন দোষ গুণের কথাই ভাবি। এভাবেই আমাদের চোখে কেউ যুক্তিবাদী, কেউ মৌলবাদী, কেউ বামপন্থী, কেউ ডানপন্থী। গতকাল থেকে ফেসবুকে ওয়াসার এমডির যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বাড়ি নিয়ে লেখালেখি হচ্ছে। সত্যমিথ্যা বলতে পারব না। তবে বর্তমানে সাংবাদিকরা নিজেরাই যে রকম তিলকে তাল করে আর সত্যতা যাচাই না করে কোন দল বা ব্যক্তির স্বার্থে রিপোর্ট করে তাই চোখ বন্ধ করে তাদের রিপোর্টের সত্যতায় বিশ্বাস করা বোকামি। জবাবদিহিতা যেখানে অনুপস্থিত সেখানে খুব কম লোকই অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করতে আগ্রহী। তবে অবাক লাগছে দেখে যে অনেক যুক্তিবাদী মানুষও এই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে রায় দিতে শুরু করেছে। এদের অনেকেই বিভিন্ন ভাবে ওয়াসার এমডির সতীর্থ, সহযাত্রী। এটা কি ঈর্ষা থেকে? ব্যক্তিগত কোন হিসাব নিকাশ থেকে? কারণ যদি ন্যায় বিচারের দাবি থেকে এসব করা হয় তাহলে অন্তত বিচারের রায় বেরুনো পর্যন্ত অপেক্ষা করা ভালো। নন্দিত কাউকে নিন্দিত বানানো সহজ, উল্টোটা করতে অনেক ঘষামাজা করতে হয়। আসু...

নয়া জমানা

Image
ছাত্রও জীবনে আমরা গাইতাম ‘ও দুনিয়ার মজদুর ভাইসব আয় এক মিছিলে দাঁড়া। ঐ নয়া জমানার ডাক এসেছে এক সাথে দে সাড়া।’ আমি নিয়মিত বিভিন্ন গবেষণা প্রবন্ধ রিভিউ করি। এসব মূলত কসমোলজি আর গ্র্যাভিটির উপরে। এবছরের প্রথম প্রবন্ধ এল ইউরোপের এক নামকরা প্রকাশনী থেকে। রিভিউ করতে পারব সেই সম্মতি জানানোর পরে এই প্রথম একটা ফর্ম ফিল আপ করতে হল। একবার ভেবেছিলাম ডিক্লাইন করব, তবে কিউরিওসিটি জাগল কি আছে এই ফর্মে সেটা দেখা জন্য। না ফিজিক্সের সাথে জড়িত নয় এসব। নীচের তিনটে প্রশ্নের উত্তর দিতে হল আপনি নিজেকে কোন লিঙ্গের মনে করেন? আপনার এথনিক অরিজিন কি? আপনি কোন রেসের? সাথে উত্তর। বেছে নিতে হবে। আমি জানি না এসব কি কারণে? এর সাথে কোন পেপার রিভিউ করার সম্পর্ক কি? তবে এটা জানি এই চাপটা আসছে পশ্চিমা বিশ্বের সরকারগুলো থেকে। এভাবেই বিভিন্ন লিঙ্গের ধারণা একটু একটু করে পুশ করা হচ্ছে। এটা ঠিক সেখানে উত্তর না দেবার অপশন আছে। কিন্তু আমার কেন যেন মনে হয় এ ধরণের প্রশ্নই এখানে অপ্রাসঙ্গিক। এই নয়া জমানাই ই আমরা চেয়েছিলাম? দুবনা, ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ 

আগুন

Image
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে এই যুদ্ধে ইউক্রেন প্রচুর লোক হারাচ্ছে। ঠিক কত লোক সেটা না বললেও সেই সংখ্যা অনেক। এভাবেই' ইউক্রেন পশ্চিমা বিশ্বের জয়ের জন্য আত্মোৎসর্গ করছে। এখন পশ্চিমা বিশ্বের সামনে সম্ভাবনার দুয়ার খুলে গেছে। বিশ্বে খুব কম জাতিই আছে যারা এত জীবন, এত ভূমি, এত সময় উৎসর্গ করতে পারে শত্রুর বিরুদ্ধে জয়ের জন্য। ইউক্রেনের আরেক নেতা বলেছেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্বের এই যুদ্ধে আমরা জীবন দিচ্ছি। জানি পশ্চিমা সাহায্য ছাড়া আমাদের টিকে থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু এটা ওদের যুদ্ধ। আমরা সেই যুদ্ধের কাঁচামাল সরবরাহ করছি। ওরা আমাদের অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করতে দায়বদ্ধ। ওরা এই সুযোগে নিজেদের অস্ত্রের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে নিতে পারে। এসব কথা শুনে আমার একটা উপমা মনে এলো। ধরুন আপনার প্রতিবেশীর বাড়িতে আগুন লাগলো। আপনি সেটা নেভাতে সাহায্য না করে নিজের ঘরের সব আবর্জনা সেই আগুনে পোড়ালেন। এতে আপনাকে কষ্ট করে কোথাও আবর্জনা বয়ে নিয়ে নষ্ট করতে হল না। ফলে খরচ বেঁচে গেল। পশ্চিমা বিশ্ব এখন সেটাই করছে। দীর্ঘ দিনের জমে থাকা অস্ত্র যা ধ্বংস করতে হত আর সেজন্য...

ভাইরাস

Image
প্রকৃতিতে বিপরীত ধর্মী বস্তুর প্রতি আকর্ষণ খুব প্রচলিত। ধনাত্মক চার্জ ঋণাত্মক চার্জকে আকর্ষণ করে, চুম্বকের উত্তর মেরু দক্ষিণ মেরুকে আকর্ষণ করে, নারী পুরুষকে আকর্ষণ করে। তবে মানব সমাজে অনেক ক্ষেত্রেই উল্টো ঘটে। ভিন্নধর্মী মানুষ আকর্ষণের চেয়ে বিকর্ষণ করে বেশি বিশেষ করে যারা ধর্মে অন্ধবিশ্বাসী হয়। একই ঘটনা ঘটে রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে। তবে ইদানিং প্রায়ই দেখি স্বার্থ উদ্ধারের জন্য মানুষ একেবারে বিপরীত আদর্শ ব্যবহার করে। লক্ষ্য অর্জনে সমস্ত পদ্ধতিই ভালো - স্তালিনের বিখ্যাত ফর্মুলা অনুসরণে। যারা সমাজতন্ত্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নকে দুই চোখে দেখতে পারে না তারাই আজ সোভিয়েত ইউনিয়নের সবচেয়ে খারাপ দিকগুলো অনায়াসে নিজেদের দেশে আরোপ করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন যেমন পশ্চিমা প্রোপাগান্ডা অপবাদ দিয়ে ওদের সংবাদ মাধ্যম এ দেশে নিষিদ্ধ করত, একই অজুহাতে পশ্চিমা বিশ্ব এখন এদের সংবাদ মাধ্যম নিষিদ্ধ করছে। ওরা বলে ভালো রুশ মানে মৃত রুশ। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় মৃত সোভিয়েত ইউনিয়নও ওদের কাছে ভালো, অনুকরণীয়। যত খারাপ তত ভালো - লেনিনের এই স্ট্র্যাটেজি অনেকেই এখন মহা উৎসাহে গ্রহণ করে। আর এই সূত্র ধরে ওরা ১১ হা...

মাতাল ড্রাইভার

Image
মাত্র তিন দিন আগে তাপমাত্রা হঠাৎ করেই শূন্যের উপরে চলে গেছিল। বেচারা বরফের সে কি কান্না।‌ শীত তো নয় যেন বর্ষা কাল। দুপুরে তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ৯। বনে গেলাম ঘুরতে।‌ গতকাল সারাদিন বরফ পড়ার পর বেশ লাগছিল। ছোট ছোট ক্রিস্টমাস গাছেরা বরফের ওভারকোট গায়ে দিয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়েছিল। বেশ লাগছিল ওদের দেখতে। সবচেয়ে অবাক ব্যাপার এত শীতেও কৃষ্ণ নদী কখনোই জমে না। ঠিক কলকল ছলছল শব্দে বয়ে যায়। রাতে ক্রিস্তিনা এলো। ওকে মিট করতে বাইরে গেলাম। সাথে কেক, ওয়াইন এসব কেনা। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই হাড্ডি জমে পাথর। দেখি তাপমাত্রা আরও বিনয়ী হয়েছে। মাইনাস ২০। মনে হয় প্রকৃতির ড্রাইভার এখনও নববর্ষ উদযাপন করছে। তার মাতলামি এখনও শেষ হয়নি। শনিবার শুনেছি মাইনাস ২৫ থেকে ৩০ এর মধ্যে দৌড়ঝাঁপ করবে শীতমাত্রা। শীত এল। দুবনা, ০৫ জানুয়ারি ২০২৩

জ্ঞান

Image
মানুষ যত বেশি জানে সে তত বেশি উপলব্ধি করে নিজের অজানার গভীরতা। এটা যেমন সত্য তেমনি সত্য যে জ্ঞান মানুষকে বিভিন্ন শর্তে আবদ্ধ করে। জ্ঞান - এটা অভিজ্ঞতা - নিজের অথবা অন্যের যেটা সে গ্রহণ করে। মানুষ নতুন কিছু গ্রহণ করতে চায় তার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে, জ্ঞানের আলোকে। কিন্তু সেটা সব সময় অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য নাও করতে পারে। কখনও কখনও পূর্ব অভিজ্ঞতা, কোন বিষয়ে আমাদের জ্ঞান নতুন কিছু গ্রহণ করার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। জ্ঞান আমাদের এক ধরণের সংস্কার থেকে মুক্তি দেয় আবার একই সঙ্গে নতুন সংস্কারে আবদ্ধ করে। কখনও কখনও তাই পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে নিজেকে মুক্ত করা নতুন কিছু জানার জন্য খুব জরুরি। দুবনা, ০৫ জানুয়ারি ২০২২

প্রশ্ন

Image
ফেসবুকে পাশাপাশি দুটি ছবি - ঢাকা ভার্সিটির মেয়েদের। একটা স্বাধীনতার আগের। শাড়ি পরা চুল খোলা মেয়েরা মাথা উঁচু করে হেঁটে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। আরেকটা স্বাধীনতার ৫১ বছর পরের। কালো কাপড়ে আচ্ছাদিত মেয়েরা। সেটাও ঢাকা ভার্সিটির চত্বরে। কয়েকটি প্রশ্ন মনে জাগল ১) এরা কি স্বাধীনতা পূর্ববর্তী মেয়েদের ভূত? ২) এটা কি কোন শোকের পোশাক?  ৩) একাত্তরের চেতনার অশরীরী আত্মা? ৪) পরাজিত স্বাধীনতা? ..….… ........ দুবনা, ০৪ জানুয়ারি ২০২২

আমাদের লেখাপড়া

Image
পুঁথিগত বিদ্যা আর পর হস্তে ধন নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন। আমাদের অঞ্চলে মুখস্থ বিদ্যার উপর বেশি জোর দেয়া হয়। বোঝাটা অনেকেই বোঝা মনে করে। অথবা বুঝলেই প্রশ্ন করবে এই ভয় থেকেও হতে পারে। মুখস্থ - এটা বিশ্বাস, এটা অন্যের মতামতকে গ্রহণ করা। বোঝা তার বিপরীত। প্রশ্ন না করে মুখস্থ করার মূলে রয়েছে আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাস। যা কিছু ধর্ম গ্রন্থে লেখা আছে তা প্রশ্নাতীত, তা সত্য। মানে আমরা পুরানোকে আঁকড়ে থাকি, নতুনকে বরণ করতে দ্বিধাবোধ করি। কারণ ধর্ম যা কিছু অনেক আগে বলা বা লেখা হয়েছে সেটাকেই একমাত্র সত্য মনে করে। বিজ্ঞান নতুন সত্য খোঁজে। হয়তোবা এ জন্যেই ধরে নেয়া হয় যে বয়সে বড় সে সঠিক, ছোটরা বড়দের মানবে, বড়রা নিজেদের ইচ্ছা ছোটদের উপর চাপিয়ে দেবে। এটা আমাদের সংস্কৃতির অঙ্গ। এই যে ভাষা না জেনেও সংস্কৃত বা আরবি ভাষায় মন্ত্র বা কোরআন পাঠ এসবই প্রমাণ করে আমরা যতটা না ধর্মের মর্ম বুঝতে চাই তার চেয়ে বেশি চাই ধর্মের প্রতি নিজেদের আনুগত্য প্রকাশ করতে। আর এই মনোভাব শুধু ধর্মে নয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে বিদ্যমান। একারণেই মুজিববাদ আমাদের কাছে মুজিবের দর্শন নয়, তাঁর কোট।‌ সমস্যার গভীরতা মহাসাগরের...

সোভিয়েত

Image
ইউক্রেনে রুশ অর্থডক্স চার্চ বন্ধের পাঁয়তারা চলছে খুব জোরেশোরে। এটা ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সম্প্রদায়। ভিন্নমতাবলম্বীদের জীবন সেখানে করে তুলছে দুর্বিষহ। অন্য দিকে এই ইউক্রেন আলোর বেগে সোভিয়েত উত্তরাধিকার ধ্বংস করছে। শুনেছি বিপ্লব পরবর্তী রাশিয়ায় একই ভাবে ধর্ম ও ভিন্ন মত নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এটা অনেকটা বিষ দিয়ে বিষ কাটানোর মত। সোভিয়েত উত্তরাধিকার ধ্বংস করতে আরো বেশি করে সোভিয়েত ইউনিয়নের মত হওয়া। এটাই মনে হয় এক্স সোভিয়েত রিপাবলিকগুলোর প্রধান বৈশিষ্ট্য। সোভিয়েত সব কিছু ধ্বংস করতে মূলতঃ সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করছে, বিশেষ করে তার সবচেয়ে খারাপ দিকগুলো। তা সে ক্ষমতায় হোক, আমলা তন্ত্রে হোক অথবা পরমতসহিষ্ণুতার অভাবে হোক। এই মিছিলে যোগ দিয়েছে এখন পশ্চিমা বিশ্ব। হায়রে সোভিয়েত ইউনিয়ন। মরেও শান্তি নেই।  দুবনা, ০২ জানুয়ারি ২০২৩

জন্মদিন

Image
আমাদের প্রজন্মের অনেকের অফিসিয়াল আর বায়োলজিক্যাল জন্মদিন ভিন্ন। জন্মের দিন তারিখ অধিকাংশ বাবা মা সঠিক ভাবে লিখে রাখতেন না। এমনকি যাদের কুষ্ঠি ছিল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ সেসবের তোয়াক্কা না করে সব ছাত্রদের নিজেদের খেয়াল খুশি মত জন্ম তারিখ বসিয়ে দিতেন। এ ক্ষেত্রে তারা সরকারি চাকরির বয়সটাই মাথায় রাখতেন, তারিখ বছরের যে কোন একটা দিন হলেই হল। যেহেতু এসব হত বাবা মার অনুপস্থিতিতে আর পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীদের এ নিয়ে তেমন কোন ধারণা ছিল না তাই ঘটনাটা ঘটে যেত অনেকটা অগোচরেই। আমি জানতাম আমার জন্মদিন ২৫ ডিসেম্বর। ছোট মাষ্টার মশাই যখন সেটাকে ০২ জানুয়ারি লিখলেন আমি তাঁকে সঠিক তারিখ বলার পরেও তিনি শুধু বললেন এ নিয়ে এত ভাবার কিছু নেই। হয়তোবা বাড়ি ফিরে বাবা মা'কে বললে এর একটা সুরাহা হত, তবে নিজে এ নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য করিনি। হাই স্কুলে ভর্তি হবার সময় আবার যখন জন্মের সঠিক তারিখ বললাম সেখানে বলা হল আপাতত কিছুই করার নেই। অষ্টম শ্রেণী বা মেট্রিকুলেশনের ফর্ম ফিল আপ করার সময় সঠিক তারিখ লিখলেই হবে। পরে বুঝলাম এটা ছিল একান্তই শান্তনা। কলমের কালি একবার ডকুমেন্টে লেগে গেলে সেটা সারা জীবন...

নববর্ষে

Image
আজ সূর্যের প্রথম আলো যখন  পৃথিবীর ঠোঁটে আলতো করে চুমু দিল আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম কেমন লাগছে নতুন বছরের নতুন সূর্য? বোকা, জানিস না গোলাকার কোন কিছুর  কোন শুরু নেই কোন শেষ নেই?  আমাদের পথ চলা অন্তহীন দাঁড়ি, কমা, সেমিকোলন ছাড়া চিঠির মত প্রতিটি মূহুর্ত যেখানে নতুন  সেখানে বছরের হিসেব করে কি লাভ? আমরা তো লাভ লোকসানের হিসেব করে এসব করি না করি নিজেদের সুবিধার জন্য যাতে অযাচিত ভাবে কাউকে শুভেচ্ছা জানানো যায় পরিচিত অপরিচিত মানুষদের জন্য শুভকামনা করা যায়।  হ্যাঁ, এটাও তোদের আরেকটা চাল, আরেকটা পলিটিক্স পরকালের জন্য তোরা যেমন ঈশ্বর সৃষ্টি করেছিস ইহকালের জন্য করেছিস এই পঞ্জিকা পঞ্জিকা মূলত শোষণের হাতিয়ার খাজনা আদায়ের দিনপঞ্জি  তারপরেও সবাই কি উৎসাহ নিয়েই না এসব দিবস পালন করে ভাবখানা এই যেন দাসত্বের নয়  মুক্তির উৎসবের বার্তা বয়ে এনেছে এরা  তোদের সৃষ্টির ক্ষমতা দেখে স্বয়ং ঈশ্বর পর্যন্ত ঈর্ষান্বিত হতেন যদি তিনি সত্যিই থাকতেন। দুবনা, ০১ জানুয়ারি ২০২৩