লক্ষ্য

যেকোনো যুদ্ধের দুটি মূল কথা হল সেটা কার বিরুদ্ধে ও কিসের লক্ষ্যে। বর্তমান আন্দোলন কার বিরুদ্ধে সেটা পরিষ্কার হলেও কিসের লক্ষ্যে সেটা পরিষ্কার নয়। হাসিনা সরকারের পতন কোন সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য হতে পারে না। হাসিনা সরকারের পতন ঘটলেই অটোম্যাটিক্যালি স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা বিদায় নেবে না, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে না, জনগণের অবস্থার কোন পরিবর্তন হবে না। ভারত ভাগ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত এদেশে বহু আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে, একটা মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে। প্রতিবারই শাসকদের বিরুদ্ধে জয়লাভ করলেও একমাত্র স্বাধীনতা ব্যতীত আর কোন লক্ষ্যই অর্জিত হয়নি। কারণ লক্ষ্যগুলো আন্দোলনের স্বার্থে কখনো কখনো উচ্চারিত হলেও সেটা অর্জনের জন্য কোন বাস্তব সম্মত পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এখনও আন্দোলনকারীদের অবস্থান স্পষ্ট নয়। উল্টো আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে ইসলামী শাসনের কথা কেউ কেউ বলছে আর যারা বলছে তারা যে আন্দোলনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পেছন থেকে ব্যবহার করেছে সেটা আজ স্পষ্ট। বাংলাদেশের দেড় কোটির বেশি বিভিন্ন ধরণের সংখ্যালঘুদের ভাগ্য কোন ভাবেই হিসেবে আসছে না। তাই নামে বৈষম্য বিরোধী হলেও সবার স্বার্থ এখানে সমান ভাবে দেখা হচ্ছে না। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা সাম্যের আশা জাগায় না। দুই এক জায়গায় উগ্রপন্থীদের হাতে বামপন্থী নেতাদের হত্যার খবর পাওয়া গেছে। তাই যারা নিজেদের প্রগতিশীল বলে জাহির করেন তাদের আন্দোলনের আগুনে কেরোসিন ঢালার আগে এসব প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তার কথা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ভেবে দেখা উচিৎ।

দুবনা, ০৫ আগস্ট ২০২৪

Comments

Popular posts from this blog

পরিমল

নেতা

শুভ নববর্ষ ১৪৩১