রাশিয়া

কথায় বলে "রাশিয়াকে বুদ্ধি দিয়ে বোঝা যায় না"। সেটা করতে গেলে সেই বোঝা বোঝা হয়ে ওঠে।

প্রায় চল্লিশ বছর আগে যখন সোভিয়েত ইউনিয়নে আসি তখন মনে হয়েছিল যেন একেবারে ভিন্ন জগতে, ভিন্ন সভ্যতায় পড়লাম। সেটা ভালো বা মন্দ নয়। ভিন্ন। মানুষের চলাফেরা, তাদের চিন্তাভাবনা, দৈনন্দিন জীবনের টুকিটাকি। অনেক ক্ষেত্রেই অবাক হতাম আর ভাবতাম এটা সমাজতন্ত্রের কারণে। সমাজতান্ত্রিক সমাজ ভাবনা তাদের এমন করেছে। 

সমাজতন্ত্র দেশত্যাগ করে সন্ন্যাসী হয়েছে তা-ও ৩০ বছরের বেশি হল। গড়ে উঠেছে নতুন প্রজন্ম - নতুন ভাবনা, নতুন বাস্তবতা, নতুন অভিজ্ঞতার মানুষ। সোভিয়েত মানুষ নয় - একেবারেই ভিন্ন। কিন্তু এখনও দেখি এরা আমাদের চেয়ে কত ভিন্ন। এবং এটা শুধু জাতিগত ভাবে রুশরা নয়, যারা এই বিশাল দেশে গড়ে উঠেছে, এই দেশের আলোবাতাসে বেড়ে উঠেছে তারা প্রায় সবাই। এমনকি যারা জীবনের একটা সময় এদেশে কাটিয়েছে তাদের অনেকের মধ্যেও এদেশের আলো হাওয়া নিজস্ব ছাপ রেখে যায়।

ইউক্রেনের যুদ্ধ রুশদের চরিত্র নতুন করে প্রকাশ করল। এটা ঠিক যুদ্ধ শুরুর পর পাঁচ থেকে দশ লাখ মানুষ দেশত্যাগ করেছে, কিন্তু ইউক্রেনের ৬০ থেকে ৭০ লাখের তুলনায় সেটা বড় কিছু নয়। অন্যদিকে যে পরিমাণ লোক স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে দনবাসের মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে সেটা দেখার মত। 

এতদিন স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলতেন, এখন অনেক পশ্চিমা বিশ্লেষকও বলতে শুরু করেছেন যে "রাশিয়া প্রকৃত অর্থেই ভিন্ন সভ্যতা"।

দুবনা, ১১ মার্চ ২০২৩

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা