স্যার সমাচার
স্যার শব্দের আক্ষরিক অর্থ জনাব বা মহাশয়। যেকোন অপরিচিত মানুষকে জনাব বা মহাশয় বলে যেমন সম্বোধন করা যায় তেমনি সম্বোধন করা যায় স্যার বলে। আমাদের সমস্যা হল স্যার শব্দটি আমাদের দেশে এসেছে ইংরেজদের হাত ধরে আর যেহেতু তখন ওরা ছিল রাজার জাতি আর আমরা প্রজা তাই এ শব্দটির শ্রেণি চরিত্র গেছে বদলে। ফলে আমাদের দেশে স্যার সম্বোধনের মধ্যে এক ধরনের রাজা প্রজা সম্পর্ক থাকে। অথচ ইংরেজি ভাষাভাষী দেশে একজন মানুষ একজন উচ্চপদস্থ কর্মচারীকে যেমন স্যার বলে সম্বোধন করে একই ভাবে একজন ভিখিরি বা গৃহহীন মানুষকে স্যার বলে সম্বোধন করে। তাই যারা স্যার ম্যাডাম এসব সম্বোধন শোনার জন্য হাপিত্যেশ করে বসে থাকে এটা তাদের মূর্খতা প্রকাশ করে।
রাশিয়ায় সবাইকে নাম ধরে ডাকার নিয়ম। তবে এদেশে যেহেতু প্রত্যেকের নামের সাথে বাবার নাম যুক্ত থাকে তাই সম্বোধন করে নাম ও বাবার নাম সহ, যেমন ভ্লাদিমির ইলিচ নামের ইলিয়ার পুত্র ভ্লাদিমির। আমার মত যাদের নামের সাথে বাবার নাম নেই তাঁদের নিয়ে সমস্যা, বিশেষ করে আমরা যদি পড়াই। তবে প্রথম প্রথম একটু অস্বস্তি বোধ করলেও পরে ঠিক হয়ে যায়। আমার ছাত্রছাত্রীরা আমাকে বিজন নামেই ডাকে। কিন্তু সমস্যা হয় আমাদের এলাকার ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে। ওরা স্যার বলে ডাকতে চায় যেটা আমার পছন্দ নয়। দুবনায় এ রকম কেউ এলে আর বাঙালি হলে আমি বলি বিজন দা বলে ডাকার জন্য। এখন মস্কোয় আমার এক ছাত্র ভারতীয়, তবে আমেরিকান পাসপোর্টধারী। মহারাষ্ট্র থেকে। ও স্যার বলে ডাকতে শুরু করলে আমি বললাম নাম ধরে ডাকতে। কিন্তু সে রাজি নয়। এখন ডাকে প্রফেসর বলে। সে এক মহা সমস্যা। আসলে এসব রীতিনীতি আমাদের অস্থিমজ্জায় এমন ভাবে ঢুকে গেছে যে সহজে মুক্তি নেই। কেউ চায় করে স্যার, ম্যাডাম এসব ডাক শুনতে চায়, কেউ না চাইলেও শুনতে বাধ্য হয়।
যতদূর জানি বঙ্গবন্ধুকে সবাই মুজিব ভাই বলত, শেখ হাসিনাকে আপা। স্যার ম্যাডামের পুনরোত্থান হয়েছে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার হাত ধরে। হয়তোবা এর মধ্য দিয়ে অনেকেই তাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে। কে জানে?
দুবনা, ২৪ মার্চ ২০২৩
রাশিয়ায় সবাইকে নাম ধরে ডাকার নিয়ম। তবে এদেশে যেহেতু প্রত্যেকের নামের সাথে বাবার নাম যুক্ত থাকে তাই সম্বোধন করে নাম ও বাবার নাম সহ, যেমন ভ্লাদিমির ইলিচ নামের ইলিয়ার পুত্র ভ্লাদিমির। আমার মত যাদের নামের সাথে বাবার নাম নেই তাঁদের নিয়ে সমস্যা, বিশেষ করে আমরা যদি পড়াই। তবে প্রথম প্রথম একটু অস্বস্তি বোধ করলেও পরে ঠিক হয়ে যায়। আমার ছাত্রছাত্রীরা আমাকে বিজন নামেই ডাকে। কিন্তু সমস্যা হয় আমাদের এলাকার ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে। ওরা স্যার বলে ডাকতে চায় যেটা আমার পছন্দ নয়। দুবনায় এ রকম কেউ এলে আর বাঙালি হলে আমি বলি বিজন দা বলে ডাকার জন্য। এখন মস্কোয় আমার এক ছাত্র ভারতীয়, তবে আমেরিকান পাসপোর্টধারী। মহারাষ্ট্র থেকে। ও স্যার বলে ডাকতে শুরু করলে আমি বললাম নাম ধরে ডাকতে। কিন্তু সে রাজি নয়। এখন ডাকে প্রফেসর বলে। সে এক মহা সমস্যা। আসলে এসব রীতিনীতি আমাদের অস্থিমজ্জায় এমন ভাবে ঢুকে গেছে যে সহজে মুক্তি নেই। কেউ চায় করে স্যার, ম্যাডাম এসব ডাক শুনতে চায়, কেউ না চাইলেও শুনতে বাধ্য হয়।
যতদূর জানি বঙ্গবন্ধুকে সবাই মুজিব ভাই বলত, শেখ হাসিনাকে আপা। স্যার ম্যাডামের পুনরোত্থান হয়েছে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার হাত ধরে। হয়তোবা এর মধ্য দিয়ে অনেকেই তাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে। কে জানে?
দুবনা, ২৪ মার্চ ২০২৩
Comments
Post a Comment