নির্বাণ
কেউ যখন নিজের চেয়ে অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী কারও উপর কল্পিত নির্ভরতা কাটিয়ে ওঠার নামে তার বিরুদ্ধে অনেক বেশি শক্তিশালী তৃতীয় পক্ষের সাহায্য নিয়ে অপ্ররোচিত লড়াইয়ে নামে তখন সে আসলে অতি শক্তিশালী জনের কাছে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা পড়ে, আগের চেয়েও অনেক বেশি পরনির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ইউরোপের ক্ষেত্রে সেটাই ঘটেছে। রাশিয়ার উপর থেকে নির্ভরতা কাটিয়ে উঠতে তারা আমেরিকার উপর নির্ভরশীল হয়েছে আর সেটা হয়েছে অনেক বেশি মূল্যের বিনিময়ে যা তাদের শিল্পকে প্রতিযোগী হতে দেবে না। যদি তারা অন্য টেকনোলজির মাধ্যমে গ্যাসের ব্যবহার থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পারত সেটা ছিল অন্য কথা। সেটা যেহেতু পারেনি তাই উচিৎ ছিল সব অপশন খোলা রাখা, মানে সব দোকানদারদের নিজেদের জিনিস বিক্রি করার সুযোগ দেয়া যাতে দামাদামি করা যায় আর যার কাছ থেকে কম মূল্যে পাওয়া যায় তার কাছ থেকে কেনা যায়। এটাই মার্কেট ইকোনমির মূল কথা। রাশিয়ার গ্যাস তারা কিনত রাশিয়ার চাপের কারণে নয়, বাজার অর্থনীতির নিয়মে, কেননা রাশিয়ার গ্যাসের দাম কম ছিল। আর বাজার অর্থনীতির স্বাভাবিক নিয়মে হেরে আমেরিকা ভিন্ন উপায়ে ইউরোপিয়ান এনার্জি মার্কেট থেকে রাশিয়াকে তাড়াতে চাইল। যার ফল এই যুদ্ধ। আগে মসলার যুদ্ধ হত, এখন যুদ্ধ তেল গ্যাস নিয়ে। এখন মনোপলি আমেরিকার হাতে। ফলে সামরিক, রাজনৈতিক, পররাষ্ট্রনীতির পাশাপাশি ইউরোপের অর্থনীতিও এখন আমেরিকার উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল হল। আমেরিকা এখন সুলতান আর সারা ইউরোপ জুড়ে তার হারেম। আচ্ছা হারেম কি হারাম? গণতন্ত্রে? সভ্য বিশ্বে? একেই বলে নির্বাণ।
দুবনা, ১৫ মার্চ ২০২৩
দুবনা, ১৫ মার্চ ২০২৩
Comments
Post a Comment