স্বাধীনতা

গতকাল এক স্ট্যাটাসে লিখেছিলাম 

গরীবের স্বাধীনতা ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার স্বাধীনতার মত - লাফানোর স্বাধীনতা আছে তবে খাওয়ার স্বাধীনতা নেই।

এর প্রেক্ষিতে কেউ কেউ প্রশ্ন করেছেন স্বাধীনতা কি মানুষকে কিছুই দেয়নি?

সেই প্রশ্নের উত্তর দেবার আগে দুটো কথা বলি।

এক অর্থে ভবিষ্যৎ সব সময়ই অনিশ্চিত। আমাদের বর্তমান ক্ষণস্থায়ী, অতীত প্রায় এক জীবন দীর্ঘ আর অতীত থেকে শিক্ষা নিতে পারলে সেটা আরও অনেক লম্বা, ভবিষ্যৎ - শুধু আশা আর স্বপ্ন দিয়ে গড়া। তারপরেও মানুষ স্বপ্ন দেখে, নিশ্চয়তা চায়। সে চায় নিজে বাঁচুক বা নাই বাঁচুক, আগামীকালও ভাত মাংসের দাম একই থাকবে, তার চাকরিটা বহাল তবিয়তে থাকবে, অসুস্থ হলে সে হাসপাতালে সেবা পাবে, ছেলেমেয়েরা ঠিকই পড়াশুনা করে নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারবে। হয়তোবা এসব আমেরিকান ড্রিম নয়, কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নে প্রায় প্রতিটি মানুষের এই নিশ্চয়তা ছিল বলেই তাদের চেহারায়, চলায় বলায় এক ধরনের প্রশান্তি ছিল।

উপরের কথাটি বলার উদ্দেশ্য এই যে মানুষের সব চাওয়া পাওয়ার মূলে রয়েছে নিশ্চয়তা। যদিও সেটা শুধুই সম্ভাবনা তত্ত্ব দ্বারা পরিচালিত তারপরেও এই নিশ্চয়তার মধ্যে সে দেখে তার নিরাপত্তা।

সমস্যা হোল একদল ভাবে ভাত আর কাপড়ের দাবিতে বিক্ষোভ করার অধিকার বা "আমি ক্ষুধার্ত" বলার বাক স্বাধীনতা প্রকৃত স্বাধীনতা। আরেক দল মনে করে সবার জন্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা মানে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষার গ্যারান্টির নাম স্বাধীনতা। 

গণিতে নেসেসারি ও সাফিসিয়েন্ট কন্ডিশন বলে দু'টো কথা আছে। অনেক কিছুই এই দু'টোর একটা পূর্ণ হলেই টিকে থাকে, তবে পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য চাই দুটো শর্ত পূরণ হওয়া।

পেটে ভাত আর মুখে কথা দুটো মিলেই আসে স্বাধীনতা।

মস্কো, ২৭ মার্চ ২০২৩

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা