রাজনীতি

প্রায় চল্লিশ বছর রাশিয়ায় থেকে দেখেছি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা থাকা সত্ত্বেও এরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়নে ধর্ম আজকের মত প্রকাশ্যে না থাকলেও বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে রাষ্ট্রের সম্পর্ক ছিল। এখনও রাষ্ট্র থেকে ধর্ম আলাদা হলেও রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে সরকার উচ্চ পর্যায়ে এদেশের চার মূল ধর্ম রুশ অর্থডক্স চার্চ, ইসলাম, জুডাইজম ও বৌদ্ধ কমিউনিটির প্রধানদের সাথে আলোচনা করে, তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেয়। যদিও জারের আমলে ইহুদিদের উচ্চশিক্ষা লাভে বিভিন্ন বাধানিষেধ ছিল, সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশেষ করে ইহুদিদের সম্পর্কে বিভিন্ন রিজার্ভেশন আছে তার পরেও এখন সরকারি ভাবে কেউ তেমন ডিসক্রিমিনেশনের শিকার হয় বলে মনে হয় না। যেকোন সরকারি প্রতিষ্ঠানে বা মন্ত্রণালয়ে কর্মরত মানুষের নামের দিকে তাকালেই সেটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আর এখন যুদ্ধক্ষেত্রের দিকে তাকালে বোঝা যায় কিভাবে বিভিন্ন জাতি ও ধর্মের লোকেরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের জন্য লড়াই করছে। এই ঐক্য পশ্চিমা বিশ্বের জন্য শুধু পাজল নয়, মাথা ব্যথার কারণ। "ডিভাইড এন্ড রুল" থিওরিতে বিশ্বাসী এঙ্গলোস্যাক্সরা বিভিন্ন সময় চেষ্টা করেছে এই ঐক্যে ফাটল ধরাতে। ভোলগাগ্রাদে তাদের এক এজেন্ট কোরআন পুড়িয়ে ধরা পড়ে ইউক্রেনের সাথে যোগসাজশের কথা স্বীকার করেছে। উদ্দেশ্য ছিল এর মধ্য দিয়ে ইসলামী বিশ্বের সাথে রাশিয়ার সম্পর্ক খারাপ করা আর সম্ভব হলে সাম্প্রদায়িক টেনশন তৈরি করা। ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার পেছনে যে সিআইএ ও মি-৬ এর হাত আছে সেটা বলাই বাহুল্য। যেহেতু কোরআনের অবমাননায় সবচেয়ে বেশি মানসিক কষ্ট পেয়েছে চিচনিয়ার লোকজন তাই তাদের অনুরোধে এই লোকের বিচার হবে সেখানে আর শাস্তি ভোগ করবে (এরকম অপরাধের শাস্তি ২০ বছর পর্যন্ত জেল) মুসলিম জনসংখ্যা প্রধান কোন এক প্রদেশে। কিভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে হয় সে ব্যাপারে উপমহাদেশের দেশগুলো রাশিয়ার কাছ থেকে শিক্ষা নিতে পারে।

দুবনা, ২৩ মে ২০২৩

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

স্মৃতি