স্মৃতি

রুশরা বলে প্রত্যক্ষদর্শী সবচেয়ে বড় মিথ্যুক। প্রথম শুনে অবাক হয়েছিলাম। পরে দেখলাম ঠিকই তো। কারণ প্রত্যক্ষদর্শী দেখে কোন নির্দিষ্ট জায়গা থেকে এবং যেহেতু নিজে দেখেছে তাই নিজের ভাষ্যকে একমাত্র সত্য বলে বিশ্বাস করে। এমনকি পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকের ভার্সন মেনে নিতে পারে না। 

কবিগুরুর জন্মদিন উপলক্ষ্যে ৯ মে মস্কোর বন্ধুত্ব পার্কে তাঁর পূর্ণাঙ্গ মূর্তির ছবি দিয়েছিলাম। ছাত্রজীবনে (১৯৮৩ - ১৯৯৪) এর পাশ দিয়ে সামারে পিকনিকে যেতাম বুখতা রাদোস্তি। আনন্দে বুক ভরে উঠত। তখন কে কবে এই স্ট্যাচু তৈরি করল এ নিয়ে ভাবিনি। 

লোকজনের আগ্রহের কারণে উইকিপিডিয়া ঘেটে বের করলাম যে এই স্ট্যাচু ১৯৯১ সালে স্থাপন করা হয়। এটা ছিল ভাঙ্গনের সময়। মনে হয় এ কারণেই খুব একটা আগ্রহ দেখাই নি বা এখানে এসে ছবি তুলিনি। এক বন্ধু ঐ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল বলে দাবি করে লিখল এটা ১৯৮৮ সালে স্থাপিত। আরেক বন্ধু এতে সন্দেহ প্রকাশ করে লিখল ১৯৮৮ সালে ইন্দিরা গান্ধীর মূর্তি স্থাপিত হয় ইউনিভার্সিটি হোটেলের সামনে ইন্দিরা গান্ধী স্কয়ারে। একটু উৎসাহিত হয়ে আবার ইউকিপিডিয়ার শরণাপন্ন হলাম। দেখলাম ইন্দিরা গান্ধীর মূর্তি স্থাপিত হয় ১৯৮৭ সালে। নেহেরুর মূর্তি আছে ভারতীয় দূতাবাসের ভেতরে। তাই ১৯৮৮ সালের রহস্য উদঘাটনে মহাত্মা গান্ধীর সন্ধানে নামলাম। তাঁর পূর্ণাঙ্গ মূর্তি স্থাপিত হয়েছে ১৯৮৮ সালে ইন্দিরা গান্ধী স্কয়ারে রাস্তার উল্টো দিকে। 
যাহোক এই উপলক্ষ্যে বেশ কিছু তথ্য জানা গেল। আশা করি বন্ধুদ্বয় নিজেদের মেমরি ঘষামাজা করে তারিখগুলো ঠিকঠাক করে নেবে। দোষটা ওদের নয়। বয়সের। বুড়িয়ে যাচ্ছিস তোরা। তোদের বিশাল অভিজ্ঞতার ভারে চাপা পড়ে যাচ্ছে সব, অভিজ্ঞতার ভীরে হারিয়ে যাচ্ছে স্মৃতি।

দুবনা, ১১ মে ২০২৩

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

ছোট্ট সমস্যা

প্রায়োরিটি