Posts

Showing posts from 2024

মোশতাক

Image
ইদানিং কালে ফেসবুকে কিছু কিছু পুরানো ভিডিও দেখা যায় যেখানে সমন্বয়ক ও উপদেষ্টাদের কেউ কেউ বঙ্গবন্ধুর জয়গানে বিশেষণ ব্যবহারের কার্পণ্য করে নাই। আবার এরাই এখন মুজিববাদ তথা শেখ মুজিবের নাম বাংলার ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছে। আগে আমরা এধরণের লোকদের মীর জাফর বলতাম। কিন্তু বাস্তবে এদের কাজকর্ম খোন্দকার মোশতাকের কার্বন কপি যে শেখ মুজিবের পিতার মৃত্যুতে সবচেয়ে বেশি কান্নাকাটি করেছিল আর মৃত্যুর আগের দিন নাকি নিজের হাতে রান্না করে শেখ মুজিবকে খাইয়েছিল। সব দেখে মনে হয় দেশে মোশতাকরা পুনর্জন্ম লাভ করছে। সদ্য শহীদরা যেখানে সশরীরে ফিরে আসছে মোশতাকের ফিরে আসতে বাধা কোথায়? দুবনা, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

উত্তর

Image
গতকাল থেকে ফেসবুক ভরে গেছে ৩১ ডিসেম্বরে আসন্ন ঘোষণার খবরে। বলা হচ্ছে সেদিন বাহাত্তরের সংবিধানের কবর রচিত হবে। জুলাই আগস্টের এই আন্দোলনে দলহীন ও দলছুট এসব সমন্বয়ক ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন উপস্থিত ছিল যারা বাহাত্তরের সংবিধানে অথবা বিভিন্ন সংস্কার সহ এই সংবিধানে আস্থা রাখত এবং এর উপর ভিত্তি করেই তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাত। বাহাত্তরের সংবিধানের কবর দেয়া সম্পর্কে তাদের মতামত জানা জাতির জন্য জরুরি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পর আওয়ামী লীগ এককভাবে সেই বিজয় কুক্ষিগত করে। আজ বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা কি সেই একই পথে চলছে না? জনতার বিজয়কে কেন বার বার কোন না কোন গোষ্ঠী কুক্ষিগত করতে পারছে সে প্রশ্নের উত্তর রাজনৈতিক দলগুলোকে খুঁজতে হবে।  দুবনা, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

বয়স

Image
ডঃ ইউনুস বলেছেন বাংলাদেশের মানুষের ১৭ বছর বয়স থেকেই ভোটাধিকার থাকা উচিৎ। ডঃ আলী রিয়াজ মনে করেন একুশ বছর বয়সী মানুষ সংসদ সদস্য হতে পারেন আর রাজনৈতিক দলগুলোর উচিৎ এক তৃতীয়াংশ প্রার্থী তরুণদের মধ্য থেকে দেয়া। তারা দুজনেই আমেরিকার সমর্থক। আমেরিকার গণতন্ত্র আমাদের দেশে প্রতিষ্ঠা করতে চান বা সেই গণতন্ত্রের জয়গান করেন। তবে দেখা যায় আমেরিকায় কংগ্রেসম্যানদের গড় বয়স ৫৮ বছর, সিনেটরদের ৬০। সেখানে প্রায় ৯০% প্রতিনিধিদের বয়স ৪০ থেকে ৮০ মধ্যে। ডঃ আলী রিয়াজ অ্যামেরিকান নাগরিক হিসেবে এ ধরণের সংস্কার আমেরিকা থেকে শুরু করলেই পারতেন। অবশ্য হতে পারে তারা তাদের বসদের নির্দেশে এসব করছেন। আমেরিকায় এখন শিশুরা পর্যন্ত নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারে তারা ছেলে না মেয়ে না অন্য কোন লিঙ্গের। সমস্যা হল রাজনীতি শুধু ব্যক্তি স্বার্থের জন্য নয়, এর ফলাফলের উপর সমষ্টির, দেশের স্বার্থ নির্ভর করে। তারুণ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তবে অভিজ্ঞতা কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। অভিজ্ঞতা শুধু পুঁথিগত বিদ্যা দ্বারা অর্জন করা যায় না, অর্জন করতে হয় জীবন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। এ জন্যেই বয়স এখানে ফেলনা নয়। বয়সের পরিবর্তে তারা যদি ন্যুনতম শিক্ষার ...

সাব পিকনিক

Image
আজ সারাদিন জন্মদিনের শুভেচ্ছার পাশাপাশি আরও যে জিনিসটি আমাকে আকর্ষণ করেছে সেটা হল সাবের পিকনিক। সাব - সোভিয়েত ফেরত বাংলাদেশি গ্র্যাজুয়েটদের প্রাণপ্রিয় সংগঠন। আমরা যারা বাইরে থাকি তারা সাবের অন্যান্য সাংগঠনিক কাজকর্মের সাথে তেমন পরিচিত না হলেও পিকনিকের সাথে পরিচিত। অনেকেই পিকনিকের কথা মাথায় রেখে দেশে যাবার পরিকল্পনা করি। বিগত সাব নির্বাচন নিয়ে অনেক কাঁদা ছুঁড়াছুঁড়ির পরে পিকনিক কেমন হয় তা নিয়ে এক ধরণের আশংকা ছিল। আশংকা এমন নয় যে পিকনিক হবে না, পিকনিকে সবাই আসবে কিনা সেই আশংকা, সাবের ঐক্য টিকে থাকবে কিনা সেই আশংকা। কয়েকদিন আগেও সিরাজের পোস্ট করা লিস্টে বন্ধুদের নাম না দেখে হতাশ হয়েছিলাম। তবে আজ ওরা যখন পিকনিক স্পট থেকে ফোন করে আমাকে জন্মদিনের অভিনন্দন জানালো - যার পর নাই খুশি হয়েছি। যতটা না আমাকে মনে রাখার জন্য, তারচেয়ে বেশি ওরা পিকনিকে গেছে বলে। দিনের শেষে সাব আমাদের সবার সংগঠন। কে ভোটে জিতল আর কে হারল তারচেয়েও বড় কথা যারা কার্যকরী কমিটিতে আছে তারা কতটুকু আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে, কত বেশি সদস্যদের সাবের বিভিন্ন কাজের সাথে সম্পৃক্ত করতে পেরেছে। সেদিক থেকে আমার মনে হয়েছে বর্তমান কমিটি, বি...

চাতক

Image
তোমাকে বধিবে যে গোকুলে বাড়িছে সে - মহামায়া কংসকে উদ্দেশ্য করে এ কথা বলেছিলেন। তবে কংসকে যিনি বধ করেছিলেন সেই শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন কংসের কারাগারে, তাঁরই রাজপ্রাসাদে। সেদিক থেকে দেখলে সবচেয়ে বড় শত্রু বেড়ে ওঠে নিজের ঘরেই। এটা প্রায় সমস্ত আইডোলজির জন্য সত্য। ধার্মিকরাই যে ধর্মের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে এ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। তারাই মন্দির, মসজিদ, গির্জা ভাঙে, তারাই তাদের ভাষায় ঈশ্বরের সৃষ্টিকে অপমান বা খুন করে ঈশ্বরকে অসহায় করে তোলে। স্তালিন, মাও থেকে শুরু করে অনেক সমাজতন্ত্রী সমাজতান্ত্রিক আদর্শের কম ক্ষতি করেনি। এখন গণতন্ত্রীরা উঠেপড়ে লেগেছে গণতন্ত্রের বারোটা বাজাতে। আগে যে করেনি তা নয় তবে এত নগ্ন ভাবে করেনি। কিছুদিন আগে মলদোভার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সান্দো জয়লাভ করেছেন অভিবাসীদের ভোটে যদিও খোদ মলদোভায় হেরে গেছেন। তবে অভিবাসীদের মধ্যে শুধু যারা ইউরোপে তারাই ভোট দেবার সুযোগ পেয়েছে, রাশিয়ায় কর্মরত দশ লক্ষাধিক মলদোভার নাগরিক বলতে গেলে সেই সুযোগ বঞ্চিত হয়েছে যেহেতু এখানে মাত্র হাজার কুড়ি ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছিল। যারা নিজেদের খরচে দেশে গিয়ে ভোট দিতে চেয়েছিল তাদের বি...

প্রতিবাদে হন সৎ

Image
গতকাল বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুকে লাঞ্ছিত করার জন্য প্রতিবাদ হচ্ছে ফেসবুকে। হওয়াটা স্বাভাবিক। যেকোনো আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন মানুষ ও জাতি এটা করবে। তবে একই সাথে এ প্রশ্নও নিজেকে করতে হবে যে আমরা নিজেরাই কি এসব করার সুযোগ করে দেইনি? স্বৈরাচারের পতনের পর যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িত সব ইতিহাস ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠেছিল একদল মানুষ সেটাকে হাসিনার প্রতি ঘৃণার প্রতিফলন বলে আমরাই কি এধরণের ঘটনা প্রমোট করিনি? আওয়ামী লীগের ভুল ও অন্যায় ছিল সীমাহীন। সেটার প্রতিবাদ করা যেকোনো বিবেকবান মানুষের কর্তব্য। ন্যায়ের পক্ষে, সত্যের পক্ষে দাঁড়াতে হবে লাভ ক্ষতির হিসাব না করেই, তবে একই সাথে এটাও মনে রাখতে হবে এই সততা যেন অসৎ আর ভণ্ডদের দ্বারা তাদের স্বার্থ উদ্ধারে ব্যবহৃত না হয়। ইদানিং কালে সেটাই হচ্ছে। এখন থেকে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ শুরু না করলে একদিন প্রতিবাদ করার অধিকার ও শক্তি দুটোই হারাবেন। আর প্রতিবাদ করতে হবে যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে। এখানে যদি সিলেক্টিভ হন তাহলে বুঝতে হবে আপনি ন্যায়ের পক্ষে নন, আপনি সুবিধাবাদী। অন্যায়কারীদের জাত, পাত, ধর্ম, বর্ণ থাকে - অন্যায়ের এসব থাকে না। তাই অন্য...

গরু

Image
কথায় বলে ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়। এক বন্ধু জিজ্ঞেস করল "সবে মাত্র বিপ্লব হল। এখন থেকেই সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখা কি ঠিক?" জানি না, তবে ওই যে রিগ্যান বলেছিলেন - দভেরিয়াইউ নো প্রভেরিয়াইউ - মানে বিশ্বাস করি, তবে পরীক্ষাও করি। যদি বিগত সরকারগুলোর ইতিহাস পর্যালোচনা করি তাহলে দেখব এরা সবাই অতীতমুখী। জাতি হিসেবে আমরা ৫২'র ভাষা আন্দোলনে আটকে আছি, আওয়ামী লীগ ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে, বিএনপি ১৯৭৫ এর বিপ্লবে আর বর্তমান সরকার ২০২৪ এর জুলাই আগস্ট বিপ্লবে। সবার সাফল্য যেমন এসব বছর আবার ব্যর্থতা মানে - এই সব ঘটনার স্মৃতিকে/ সুফলকে নষ্ট করার পাঁয়তারা। তাই যখনই কথায় কথায় জুলাই আগস্টের বিপ্লব উচ্চারিত হয় - তখন ভয় হয় আমরা কি আবারও ভাঙা রেকর্ড বাজিয়ে যাচ্ছি কি না। কারণ এসবের পরিণতি আমাদের অনেক বার দেখা হয়ে গেছে। দুবনা, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪

বিজয়ের বিড়ম্বনা

Image
অদ্ভুত কিছু লেখা দেখছি আছ ফেসবুকে আর বিভিন্ন গ্রুপে। এটার শুরু মনে হয় ভারত সরকার ১৬ ডিসেম্বরের বিজয়কে ভারতের বিজয় বলায়। ব্যাপারটা হচ্ছে ঘটনা মিথ্যে নয়। তবে এর আগে কখনও এ নিয়ে কোন বাকবিতন্ডা হয়নি। মনে রাখতে হবে ১৯৭১ সালের যুদ্ধ আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ছিল। অন্যদিকে নভেম্বরের শেষে পাকিস্তান ভারতের পশ্চিম সীমান্ত আক্রমণ করলে সেটা ভারত পাকিস্তান যুদ্ধে পরিণত হয়। ইতিহাস সেটাই বলে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর শুধু আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে না, ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের অবসান হয় আর পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করে। যতদূর জানি এটা হয় নিয়াজীর উদ্যোগে। কারণ জেনারেল ওসমানী মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক হলেও তার রেগুলার আর্মি ছিল না। সেক্ষেত্রে নিয়াজী অরোরার কাছে আত্মসমর্পন করা সম্মানজনক মনে করেন। তাই ভারত যদি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয় উপলক্ষ্যে এই দিনটি পালন করে এতে আমাদের বিজয় প্রশ্নবিদ্ধ হয় না। বিভিন্ন সময় একাধিক দেশ বিভিন্ন যুদ্ধে জয়লাভ করে এবং প্রতিটি দেশ নিজের নিজের মত করে দিনটি পালন করে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এর রিপাবলিকগুলো নিজের মত করেই ৯ মে বিজয় দিবস ...

বিজয় দিবস

Image
১৬ ডিসেম্বর - বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালে এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করেছে কোটি কোটি মানুষ। বিজয় শুধু জয়ের আনন্দ নয়, ভয়ের শেষ, ‌নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়ানোর দিন শেষ, বাড়ি ফেরার, আবার বন্ধুদের দেখা পাওয়ার, বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আত্মীয় স্বজনদের সাথে মিলিত হবার অপেক্ষার শেষ। নিয়তির কী নির্মম পরিহাস, আজ এই বিজয় দিবসের প্রাক্কালেই আবার প্রশ্ন উঠেছে সেই স্বাধীনতা কি স্বাধীনতা ছিল, সেই বিজয় কি বিজয় ছিল? প্রশ্ন আমাকে হতাশ করে না, কেন না একজন বিজ্ঞানী হিসেবে প্রশ্ন করা ও তার উত্তর খোঁজাই আমার পেশা। গবেষণা করতে গিয়ে আমরা অহরহ আগের অনেক কাজ বাতিল করি, অনেক কাজ উৎকৃষ্ট করার চেষ্টা করি। এটাই বিজ্ঞানের মূল কথা। কিন্তু সেই সাথে আমরা আগের কাজের উল্লেখ করতেও ভুলি না। এজন্যেই আমরা বলি আমরা আরও দূরে দেখি কারণ আমরা বিশাল বিশাল দৈত্যের কাঁধে বসে আছি। এটাই পরম্পরা, এটাই অতীতের সাথে ভবিষ্যৎকে এক সূতায় বাঁধা। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে বৈজ্ঞানিক চিন্তা ভাবনার কদর কখনোই ছিল না। সব নতুন শাসক নতুন করে ইতিহাস লেখে, সবাই হতে চায় শেষ মেসিয়াহ। কিন্তু এতে করে একাত্তরের তিরিশ লক্ষ শহীদে...

ছোট ছোট কথা

Image
কয়েক সপ্তাহ আগে ভোর পাঁচটার দিকে সেভার সাথে গেলাম মস্কো নদীর ধারে বেড়াতে। ও কমবেশি নিয়মিত যায়। আমি কালেভদ্রে যদি আবহাওয়া ভালো থাকে। কারণ আমি যতটা না ঘুরতে যাই তারচেয়ে বেশি যাই ছবি তুলতে। রাস্তা প্রায় ফাঁকা। হঠাৎ দু একটা গাড়ি বা রাতের বাস দেখা যায়। মস্কোর বাস সার্ভিস ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আর বাকি সময়টা থাকে রাতের বাস সার্ভিস যা মূলতঃ এয়ার পোর্ট ও রেল স্টেশনের সাথে সংযুক্ত। মাঝেমধ্যে দলবেঁধে তরুণ তরুণীরা সাঁ করে চলে যায় ইলেক্ট্রো বাইকে। ফুটপাতে ওদের জন্য লাইন মার্ক করা থাকলেও প্রায়ই পথচারীদের গা ঘেঁষে চলে যায়। দুর্ঘটনা ঘটে। ফলে নিয়মিত ওদের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নতুন নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়। সেভা সকালে হাঁটতে বেরোয় মূলতঃ এসব ভীড় এড়ানোর জন্য। দেবিল (মূর্খ, গাধা) - সেভা গজ গজ করে। তুই এসব পছন্দ করলে এভাবেই যেতি। এটা বয়সের কারণে। ওরা কিন্তু তোর বয়সী। তুমি সবসময় এসব এড়িয়ে যাও। ঠিক তা নয়। তবে শত শত ভালোর মধ্যে দুই একটা খারাপ ঘটনা ঘটলে এ নিয়ে খুব বেশি ভাবি না। আর বিশাল সাদা ক্যানভাসে কালো দাগ যেমন চোখে পড়ে, বিশাল কালো ক্যানভাসে সাদা দাগ তেমনি চোখে পড়ে। আমরা ...

আমরা

Image
জানি না ১৯৪৭ সালে ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহারের মধ্য দিয়ে জন্মের কারণে কি না কিন্তু এই ভূখণ্ডের সব কিছুই ধর্মের মত ব্যবহৃত হয়। ধর্মের ব্যবহার কীভাবে হয় এখানে? মূলতঃ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য। অনেকেই বলে আমাদের দেশের মত রাজনীতিতে আবেশিত জনগণ খুব কম দেশেই আছে। হাট, মাঠ, ঘাট, টি স্টল সব জায়গাতেই শুধু রাজনৈতিক আলোচনা। কিন্তু সেটা রাজনীতি সচেতনতা নয়, কোন না কোন দলের প্রতি অন্ধ সমর্থন। ফলে রাজনীতি আজ গুণগত ভাবে ধর্মের রূপ পেয়েছে যেখানে প্রশ্ন করার সুযোগ নেই। আর এর ফলে বিভিন্ন দিবস আজ ধর্মীয় উৎসব পালনের এক একটি দিবসের মত। আমরা একুশ পালন করি। বই মেলা, লেখালেখি কি না হয়? কিন্তু ভাষার উন্নয়নের জন্য, জাতি যাতে মাতৃভাষায় সঠিক ভাবে ভাবতে, বলতে বা লিখতে পারে সেজন্য কিছু করি না। আমরা ঘটা করে স্বাধীনতা দিবস পালন করি কিন্তু নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারি না। আমরা বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে উৎসবের আয়োজন করতে পারি কিন্তু বিজয়ের সুফল সবার কাছে পৌঁছে দেয়া তো দূরের কথা বিজয়ই ধরে রাখতে পারি না। আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করি কিন্তু দেশে মুক্ত চিন্তার মানুষের বসবাস যোগ্য পরিবেশ গড...

জয় বাংলা

Image
ইদানিং জয় বাংলা স্লোগান নিয়ে বেশ লেখালেখি হচ্ছে। আজ এক বন্ধু, যিনি বাংলাদেশের বাম আন্দোলনের একজন সম্মুখ সারির নেতা, লিখলেন - '৭১ সালে এবং এর পরে ন্যাপ-সিপিবি-ছাত্র ইউনিয়ন গেরিলা বাহিনী কি 'জয় বাংলা' স্লোগান দিয়েছে? এই জয় বাংলা স্লোগান দিয়েই বাংলাদেশ ছাত্রও ইউনিয়ন, সিপিবি ও অন্যান্য প্রগতিশীল সংগঠনের উপর হামলা করা হয়েছিল বিভিন্ন সময়। ...... সন্দেহ নেই যে তিনি ঠিক বলেছেন। কিন্তু প্রশ্ন কিন্তু সেখানে নয়। সর্বহারার অধিকার চেয়ে এদেশে কি সন্ত্রাস চলেনি? খেমার রুজ কি সমাজতন্ত্রের কথা বলে লাখ লাখ মানুষ হত্যা করেনি? সিপিবি বা এ ধরণের রাজনৈতিক দলের মূল স্লোগান দুনিয়ার মজদুর এক হও। তারা জয় বাংলা বলবে না অন্য কিছু বলবে সেটা ভিন্ন বিষয়। বয়সে ছোট থাকলেও এখনও মনে আছে একাত্তরের কথা - যখন আমরা গাইতাম জয় বাংলা বাংলার জয় হবে হবে হবে হবে নিশ্চয় ............... আসলে ঐ সময় জয় বাংলা ছিল মন্ত্রের মত। জয় বাংলা আর মুক্তিযুদ্ধ একই সূত্রে গাঁথা। তাই পরে আমরা কি করেছি আর কি করিনি সেই প্রশ্নের সময় এখন নয়। যারা বলেন গত ১৫ বছরে এই স্লোগান দলীয় স্লোগানে পরিণত হয়েছে, তারা তো এটাও স্বীকার করবেন যে এ...

বন্ধুত্ব

Image
সিরিয়া থেকে বিভিন্ন রকমের খবর আসছে। পতনের হাত থেকে শেষ মুহূর্তে আসাদকে বাঁচিয়েছিল রাশিয়া। সেটাও অনেক বছর আগে। এরপর অনেক জল গড়িয়েছে, পৃথিবী নাচতে নাচতে বহু বার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করেছে কিন্তু আসাদ মনে হয় দেশ ও নিজেকে রক্ষার জন্য খুব বেশি কিছু করেননি ইরান আর রাশিয়ার উপর নির্ভর করা ছাড়া। কিন্তু ঈশ্বর তাদের সহায় হন যারা নিজেদের সহায়তা করে। ভাগ্যও এই ফর্মুলা মেনেই চলে। বন্ধু থাকা ভালো তবে বন্ধুর উপর খুব বেশি নির্ভরশীল হলে সেই বন্ধুত্ব হয় প্রভূত্বে পরিণত হয় অথবা নিরাসক্তিতে। কারণ বন্ধুর নিজের অনেক সমস্যা থাকে। তাকে সেসব সমস্যা সমাধানে সময় দিতে হয়।  মস্কোর পথে, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রশ্ন

Image
আজ একটা ছবিতে দেখলাম ডান, বাম, মধ্যম, মৌলবাদী নির্বিশেষে দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করে ভারতের বিপক্ষে সরকারের ভূমিকার প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন। এ ধরণের একাত্মতা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরল। এমনকি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ও তারা সবাই মতৈক্যে পৌঁছুতে পারে নাই। তবে সমস্যা হোল ভারতের বিরুদ্ধে এক হলেও বাংলাদেশের প্রশ্নে তারা এক হতে পারবে কিনা? কারণ বাংলাদেশ শুধু ভূখণ্ড নয়, এটা শুধু জনগোষ্ঠী নয়, এটা রক্ত দিয়ে লেখা একটি সংবিধান। আজ যারা একসাথে ভারত বিরোধী স্লোগান দিলেন তারা কি একই ভাবে একাত্তরে অর্জিত বাংলাদেশের পক্ষে স্লোগান দিতে পারবেন? নাকি সবাই ২০২৪ এর স্বাধীনতাকে অরিজিনাল স্বাধীনতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আগামী দিনে একসাথে চলবেন? দুবনা, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

জাতীয় ঐক্য

Image
সব দেখে মনে হয় দেশে নতুন করে রাজনৈতিক বিন্যাস শুরু হয়েছে। এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে আওয়ামী লীগ ছাড়া জাতীয় ঐক্য হয় কীভাবে? হলে সেটা হবে কাঁঠালের আমসত্ত্ব। ২০০১ সালে যখন বিএনপি নির্বাচনে সবচেয়ে বড় দল রূপে আত্মপ্রকাশ করে তখেন ফেসবুক ছিল না। তবে বন্ধুদের সাথে রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হত। আওয়ামী লীগের বন্ধুদের বলেছিলাম, - তোমাদের উচিৎ বিএনপিকে সরকার গঠন করতে সমর্থন করা। - বলেন কী? এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। - দেখ, আওয়ামী লীগ হেরে গেছে। ভাবমূর্তি এমনিতেই নষ্ট হয়েছে। কিন্তু বিএনপিকে সরকার গঠনে সমর্থন দিলে সেটা মহানুভবতার পরিচয় হবে। কিন্তু আসল কথা হল তাহলে বিএনপিকে জামাতের সাথে আঁতাত করার ক্ষেত্রে দুইবার ভাবতে হবে। করলে বিএনপির সমালোচনা করতে পারবে, না করলে জামাত ক্ষমতা থেকে দূরে থাকবে। কিন্তু তখন কেউ এসবে পাত্তা দেয়নি। এখন আবার আওয়ামী লীগ নিয়ে দুটো কথা বলা যায়। বর্তমান সরকার যদি আওয়ামী লীগকে জাতীয় ঐক্যের জন্য ডাকে তাহলে যেকোনো পরিস্থিতিতেই তারা লাভবান হবে। কারণ - প্রথমত আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে কিছু করলে সেটা সারা বিশ্বে সমালোচনার শিকার হবে। তাই তাদের ডাক দিয়ে সরকার এই সমালোচনা এড়াতে পার...

যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা

Image
এক সময়ে বিশ্বাস করা হত যিনি জ্ঞানী তিনিই ব্রাহ্মণ। পরে অবশ্য এটা পেশা বা পদ হয়ে গেছে - লাভজনক পেশা। ফলে জ্ঞান বিচারে নয়, নিজেদের সুবিধা অসুবিধার কথা চিন্তা করেই ব্রাহ্মণত্বের সার্টিফিকেট দেয়া শুরু হয়। একই ঘটনা ঘটছে এখন গণতন্ত্র, মানবতা - এসব ক্ষেত্রেও। পশ্চিমা বিশ্ব ধরেই নিয়েছে একমাত্র তারাই গণতন্ত্র, মানবতা, বাক স্বাধীনতা এসবের হোল সেলার। তাই যেই একটু স্বাধীন ভাবে চলতে চায় তাকেই স্বৈরাচারী, অগণতন্ত্রী ইত্যাদি খেতাবে ভূষিত করা হয়। জর্জিয়া এক সময়ে রঙিন বিপ্লবের বন্যায় ভেসে গেছিল। ফলাফল - রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ, পরাজয় ইত্যাদি। বর্তমান সরকার এসব থেকে শিক্ষা নিয়ে রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন না করলেও ইউক্রেনকে সাহায্য করা, দ্বিতীয় ফ্রন্ট খোলা - এ ধরণের নীতি থেকে সরে এসেছে এবং জন সমর্থন পাচ্ছে। ফলে কয়েকদিন আগে নির্বাচনে জিতলেও পশ্চিমা বিশ্ব নানা অজুহাতে এই ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকার করছে, সে দেশের প্রেসিডেন্ট, ফ্রান্সের নাগরিক মেয়াদ শেষ হলেও পদত্যাগ করতে অস্বীকার করছেন, এমনকি স্কুলের ছেলেমেয়েদের রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছেন। এভাবেই পশ্চিমা বিশ্ব অ তাদের স্থানীয় দোসররা জর্জিয়াকে ইউক্রেনের পথে ঠ...

নয়া জামানা

Image
কাদেরের ছিল ছাত্রলীগ আর হেলমেট লীগ। ছাত্রলীগের আর কিছু থাক না থাক কমিটি ছিল, অফিস ছিল। মানুষ অন্তত এদের চিহ্নিত করতে পারত। এখন সেই স্থান দখল করেছে মব। মবের কোন কমিটি নেই, নাম নেই, ধাম নেই। এরা বিমূর্ত। ধরাছোঁয়ার বাইরে। ঠিক যেমনটি এক সময় ছিল ক্রসফায়ার। আসলে ক্রসফায়ার বেচারাও বেওয়ারিশ ছিল না। অন্ততঃ পুলিশ বা ব়্যাবকে এ নিয়ে গালি দেয়া যেত। কিন্তু মব! এরাই তো জনতা। একটু ক্ষিপ্ত এই আর কি। তারা একই সাথে ওঝা ও সাপ, শাসক, শোষক এমনকি শোষিত। ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পের বৃহৎ বাস্তবায়ন। ঋণ গ্রহীতা কৃষক শুধু ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ নয়, ব্যাংকের চালকও। শত হলেও নোবেলবিজয়ী বুদ্ধি। একেবারে ধরি মাছ না ছুঁই পানি। ঠিক যেমনটি আমাদের সরকার। মস্কো, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪

আবিদ খাঁন

Image
এখন কাজানে আছি গ্র্যাভিটেশন, কসমোলজি ও আস্ট্রোফিজিক্সের এক কনফারেন্সে। হঠাৎ দেখলাম আবিদ খাঁন মেসেজ পাঠিয়েছে। ভীষণ অবাক হলাম। মস্কোয় দীর্ঘদিন প্রেমে বিরহে কাটালেও আমাদের সম্পর্ক ঠিক যখন তখন হাই হ্যালো করার মত নয়।‌ মেসেঞ্জারে ঢুকে দেখি আমাদের শেষ মত বিনিময় হয়েছে ২০১৩ সালে যখন ও প্রধানমন্ত্রীর সাথে মস্কো সফর করে। তাই একটু অবাক হলাম। আরোও অবাক হলাম মেসেজের ঢঙে  কোথায় এখন? বলতে পারতাম কনফারেন্সে। কিন্তু তাহলে আমি বিজন হব কেন? সত্য বলতে হবে কিন্তু রহস্য মিশিয়ে। তাই লিখলাম  - সন্দেহভাজনদের সমাবেশে। বিজ্ঞানী মাত্রেই সন্দেহভাজন। কনফারেন্স তো সমাবেশই। - একটা কথা বলার ছিল তোমাকে। - বলুন। একটু অবাক হয়েই লিখলাম। কারণ ঐ একটাই। আমরা সরাসরি বলাটাই পছন্দ করি। - কিছু টাকা পাঠাতে পারবে বিকাশে? এবার আমার অবাক হবার পালা। আবিদ জানে আমি রাশিয়ায়। তাহলে বিকাশে কেন? তাছাড়া আমার বন্ধুরা আমার পকেট যে গড়ের মাঠ সেটা ভালো করেই জানে। ওরা ফোন করে জানার জন্য আমার টাকা লাগবে কি না বা আমি দেশে আসব কি না? এলে টিকেট পাঠাতে হবে কি না? আবিদ অবশ্য বন্ধু নয়। তারপরেও। তাই আগ্রহ আরও বেড়ে গেল। বললাম  -...

খেলা

Image
ছোটবেলায় যখন কালীগঙ্গা নদীর পাড় ভাঙতে শুরু করত আমরা প্রায়ই একটু একটু করে একেবারে কিনারায় এসে দাঁড়িয়ে হাল্কা চাপ দিতাম এই বিশ্বাসে যে ও ভেঙে পড়বে না। তবে সবসময় না হলেও মাঝেমধ্যে পাড় ভেঙে পড়ত আর আমরা পড়তাম নদীতে। বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার সাথে সেই খেলাই খেলছে আর ভাবছে রাশিয়া উত্তর দেবে না। কিন্তু মনে মনে চাইছে রাশিয়া উত্তর দিক যাতে সবাই একযোগে রাশিয়া আক্রমণ করতে পারে। এই খেলার মূল উদ্দেশ্য যুদ্ধের দায় রাশিয়ার ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া যাতে জনমত তাদের পক্ষে যায়। কিন্তু তারা এই হিসাব করছে না যে রাশিয়া শুধু পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ নয় আয়তনেও বিশাল। তাই সবদিক দিয়ে তাদের ক্ষয়ক্ষতি রাশিয়ার তুলনায় অনেক বেশি হবে আর যদি তারা জিতেও যায় জয়ের ফল ভোগ করার মত কেউ আর থাকবে না। হিরোশিমা ও নাগাসাকি বিজিত হয়েছিল বটে কিন্তু কোন আমেরিকান সৈন্য সেখানে গিয়ে আমেরিকার পতাকা উড়ায় নাই। দুবনা, ২২ নভেম্বর ২০২৪

সমাজ

Image
"তোমাকে বধিবে যে গোকুলে বাড়িছে সে।" কংস যখন শিশু কৃষ্ণকে হত্যা করতে যায় তখন মহামায়া এ কথা বলে সেখান থেকে চলে যায়। আসলে প্রতিটি সমাজের পরিবর্তনের চাবিকাঠি সমাজের ভেতরেই থাকে, সেখানেই সে বেড়ে ওঠে আর উপযুক্ত সময়ে ছোবল মারে। এটা অবজেক্টিভ প্রক্রিয়া। সেই পরিবর্তনকে গতি দেয় সমাজের প্যাসনারী কিছু মানুষ। আদিম সাম্যবাদী সমাজ থেকে পুঁজিবাদী সমাজের গতি ছিল একমুখী। শোষণ ছিল আদিম সাম্যবাদী সমাজ পরবর্তী সমাজগুলোর চালিকা শক্তি, শোষকের অন্যতম হাতিয়ার। সেটা এখনও বিদ্যমান। সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদ যেহেতু শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে চায় তাই তাদের চলতে হয় উল্টো স্রোতে। এজন্যেই দরকার বিপ্লবী পার্টি। তবে সেটা বড়জোর সাফিসিয়েন্ট কন্ডিশন, নেসেসারি কন্ডিশন নয়। দুটোই পূর্ণতা পেলে বিপ্লবের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বর্তমান পার্টির নেতা কর্মীদের নিয়ে অনেকেই হতাশ, তবে সেটা তত্ত্বের নয় এদের সমস্যা। এটা বর্তমান ভোগবাদী মানসিকতার প্রতিফলন। আগে কমিউনিস্ট পার্টির লোকেরা ছিলেন সন্ন্যাসীর মত, কৃচ্ছতা সাধন করতেন। পরিস্থিতি বাধ্য করত। পরবর্তীতে সমাজতান্ত্রিক বিশ্ব থেকে সহযোগিতা পেয়ে এদের মধ্যেও ভোগের মানসিকতা জন্ম ন...

আম ও ছালা

Image
অনেক দিন আগে এক গল্পে পড়েছিলাম কীভাবে উকিলের উস্কানিতে ছোট ভাই বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ভাইকে তো পথে বসায়ই, সাথে নিজেও গৃহহীন হয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কুক্ষিগত করার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অনেক দল শুধু আওয়ামী লীগকেই ক্ষমতাচ্যুত করেনি, একাত্তরের সব অর্জন হারিয়ে দেশকে টাইম মেশিনে চড়িয়ে একাত্তর পূর্ববর্তী বাস্তবতায় নিয়ে গেছে। আওয়ামী স্বৈরশাসন থেকে মুক্তি পাওয়া অবশ্যই দরকার ছিল কিন্তু তাই বলে দেশটি মৌলবাদীদের হাতে তুলে দেওয়ার কি আদৌ কোন প্রয়োজন ছিল? এ তো দেখি গামলায় নোংরা জলের সাথে বাচ্চাকেও নদীর জলে ভাসিয়ে দেবার অবস্থা। আমেরিকা ও ন্যাটোর আশ্বাসে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমে আজ ইউক্রেন অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। ঠিক এই ঘটনাই ঘটেছে আমাদের বাম দলগুলোর সাথে। অন্যায়ের প্রতিবাদ আমরা অবশ্যই করব, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ব, কিন্তু সেই লড়াইয়ের ফসল নিজের ঘরে তোলার শক্তি যদি না থাকে আর যারা তুলবে তারা যদি আদর্শগত ভাবে আরও বেশি ভয়ঙ্কর হয় তাহলে সেই খেলায় নামার আগে শত বার ভাবতে হবে যাতে আম ছালা সবই বেহাত হয়ে না যায়। দুবনা, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

শিক্ষা

Image
অধিকাংশ মানুষের ধারণা শুধু তাদের কাছ থেকেই কিছু শেখা যায় যাদের অপেক্ষাকৃত উচ্চ ডিগ্রী আছে । একথা ঠিক যখন আমরা কোন বিশেষ বিষয়ে জানতে চাই। কারণ মানুষ কোন একটি বিষয় নিয়েই পড়াশুনা করে। কিন্তু স্কুলের শিক্ষাই কি সব? এই শিক্ষা তো মূলত চাকরিজীবী তৈরির জন্য। বৃটিশ ভারতে স্থানীয়রা আইসিএস করতে যেতেন পরবর্তী কালে বৃটিশ নিয়ন্ত্রিত ভারত সরকারের আমলা হবার জন্য। সেদিক থেকে দেখলে বৃটিশরা আমাদের দেশে যে শিক্ষা ব্যবস্থা কায়েম করেছিল সেটা আমলা বা চাকরিজীবী তৈরির জন্য। জীবন কিন্তু এর বাইরেও ব্যাপকভাবে বিস্তৃত। তাই শেখার জন্য আমাদের শুধু ডিগ্রীওয়ালা মানুষের কাছেই যেতে হবে তা কিন্তু নয়। শিক্ষার জন্য দরকার চোখ কান আর বিশেষ করে মন খোলা রাখা, নিজেকে যেকোনো লোকের কাছ থেকে শেখার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত করা। সব শিক্ষাই উপকারী বা কাজে আসবে তা কিন্তু নয়। তবে নেগেটিভ রেজাল্ট - সেটাও রেজাল্ট, সেই অভিজ্ঞতা আমাদের ভুল পথ থেকে দূরে রাখে। তাই আসুন আমরা মনের দুয়ার খুলে রাখি যাতে সেখানে শিক্ষার আলো পৌঁছুতে পারে। শিক্ষক কে সেটা সময়ই বলবে।  মস্কোর পথে, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

গোষ্ঠী ভাবনা

Image
জুলাই আগস্টের আন্দোলনে নারীদের ব্যাপক ও ডিসিসিভ অংশগ্রহণ সত্ত্বেও ক্ষমতার বলয়ে আজ তারা অনুপস্থিত। এ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। এমনকি ছাত্র-জনতার আন্দোলন নামের মধ্যেও নারীদের উপস্থিতি নেই বলে একে শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলন বলে অভিহিত করার প্রস্তাব দিয়েছেন। কেউ মন্তব্য করেছেন ছাত্র শব্দটি বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নামে আছে সেটাও নারীদের উপস্থিতি অগ্রাহ্য করে। আমার মনে হয় ঐ ভাবে ভাবলে মানুষের মধ্যেও মানবী অনুপস্থিত। আসলে ইদানিং কালে এই প্রশ্নগুলো সামনে চলে এসেছে যদিও মানুষ বললে আমরা নারী পুরুষ সবাইকে বুঝি। একই ভাবে ছাত্র বলতে ছাত্র ছাত্রী নির্বিশেষে সবাইকে বোঝায়। ইদানিং অবশ্য অনেক ক্ষেত্রেই এসব শব্দের স্ত্রীবাচক শব্দ ব্যবহার করা হয় না। তবে প্রশ্নটি যতটা না শব্দের তারচেয়ে বেশি আন্দোলনে মেয়েদের ব্যাপক ও ডিসিসিভ উপস্থিতির পরেও জনজীবন থেকে এখন তাদের রহস্যময় অনুপস্থিতি। সমস্ত দেশটাকেই যখন ধোঁকা দেয়া হল মেয়েরা বাদ যাবে কেন? তাছাড়া শিক্ষার্থী শব্দ ব্যবহার কতটুকু যৌক্তিক? কারণ শিক্ষার্থী মানে যারা শিক্ষা বা জ্ঞান অর্জন করতে আগ্রহী। ব্যতিক্রম নিশ্চয়ই আছে তবে সব দেখে মনে হয় এদের বেশিরভাগই ...

অপ্রিয় সত্য

Image
জুলাই আগস্টের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে স্বাভাবিকভাবেই অনেক প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তমনা মানুষ অংশগ্রহণ করেছিল। রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাব বা অন্ধ হাসিনা বিরোধিতা তাদের অনেককেই এই আন্দোলনের সাথে জামাত শিবিরের গভীর সম্পৃক্ততার কথা বুঝতে দেয়নি। বর্তমান প্রশাসনে মৌলবাদীদের উপস্থিতি ও কর্মকান্ড এদের অনেককেই আন্দোলনে নিজেদের ভূমিকার কথা নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে। তবে অনেকেই নিজেদের ভুল স্বীকার করতে দ্বিধা করছে। কারণ এই সত্যটি খুব অপ্রিয়। সমস্যা হল সত্য অপ্রিয় হলেও অন্য সত্য আমাদের নেই। তাই অপ্রিয় সত্যকে স্বীকার করেই আমাদের সামনে চলতে হবে। সেটা যদি স্বীকার না করি, লুকোতে চাই তাহলে বারবার পেছনে ফিরে আসব। বারবার নিজেরাই নিজেদের ধোঁকা দেব।  মস্কোর পথে, ১০ নভেম্বর ২০২৪

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি

Image
অনেক আগে শুনেছিলাম রাশিয়ার কোন এক শহরে নগর প্রধানের ফটোশপে রাস্তাঘাট পরিষ্কার করে রিপোর্ট তৈরি করার কথা। এ নিয়ে মিডিয়ায় হৈচৈ হলে সে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। ফটোশপ ব্যাপারটা মোটেই খারাপ নয়। শিল্পীরা যদি তাদের মনের মাধুরী দিয়ে ছবি আঁকতে পারে এবং অপ্রয়োজনীয় জিনিস বাদ দিতে পারে, ফটোগ্রাফারের পক্ষে সেটা সম্ভব নয়। তাকে সব সহ ছবি তুলতে হয় এবং পরে রিটাচের সাহায্যে অপ্রয়োজনীয় জিনিস বাদ দিতে হয়। আগে সেটা কষ্ট সাধ্য ছিল এখন ফটোশপের কল্যাণে তা সহজ হয়ে গেছে। তাই এখন কোন দৃশ্য পছন্দ হলে তুলে নেই, কারণ জানি ফটোশপে সেটাকে মনের মত করে ঠিক করে নিতে পারব, আগের মত এই লেন্স নেই বা ঐ ফিল্টার নেই এসব নিয়ে দুশ্চিন্তা করি না। তবে ছবির ক্ষেত্রে যদি এটা কাজ করে, শহরের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে সেটা অকেজো। কারণ ছবিতে পরিষ্কার হলেও বাস্তবে শহর নোংরাই থেকে যায়। একই কথা বলা চলে জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে। মিডিয়াকে বশ করে বা কিনে যেকোনো ধরণের রিপোর্ট তৈরি করা যায়, কিন্তু তাতে বাস্তবতার হেরফের হয় না। কিছুদিন আগেও বাংলাদেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভেসেছে, এখানকার মানুষের কোন কষ্ট ছিল না, ছিল শুধু বিএনপি জামাতের প্রোপ্যাগান্ড...

ভাবনার বিষয়

Image
আমি সাধারণত ছাত্রদের নাম মনে রাখতে পারি না বা রাখি না। এটা করি যাতে পরীক্ষার সময় নিজের দিক থেকে পক্ষপাতিত্ব না ঘটে। তবে গতকালের এক ঘটনা আমাকে ভাবালো। কয়েক বছর হয় রুয়ান্ডা থেকে বেশ কিছু ছেলেমেয়ে পড়তে আসছে আমাদের ইউনিভার্সিটিতে। ওরা আমাদের ডিপার্টমেন্টের ছাত্র। জনা বারো। আমাদের তো সেই ছাত্রজীবন থেকেই এশিয়া, আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকার ছেলেমেয়েদের সাথে ওঠা বসা। তাই গতকাল একটু অবাক হলাম আমার অজ্ঞতায়। একটি ছেলে যখন পরীক্ষা দিতে এলো আমি অবাক হয়ে ভাবলাম - আরে এত কিছুক্ষণ আগে পরীখা দিয়ে গেল, আবার আসছে কেন? কিন্তু নাম জিজ্ঞেস করায় অন্য নাম বলল। পরীক্ষা নিলাম। কিছুক্ষণ পরে আরও একজন এলো পরীক্ষা দিতে। আমি আবারও ভাবলাম - ও তো কিছুক্ষণ আগেই পরীক্ষা দিয়ে গেল। দেখা গেল সেও অন্য নামের অন্য এক ছেলে। এক সময় ভাবতাম চীনা ছাড়া আর সবাইকে চিনতে পারব, এখন দেখি সে গুঁড়ে বালি। পরে খেয়াল করলাম আমি ওদের উচ্চতা আর কোঁকড়ানো চুলের জন্য গুলিয়ে ফেলেছি। অথচ আমি কী ক্লিন শেভ, কী দাড়ি রেখে, কী গোঁফ রেখে, কী টুপি পরে, কী টুপি ছাড়া যেভাবেই যাই না কেন - কখনই আমাদের ইনস্টিটিউটের ক্যামেরাকে ফাঁকি দিতে পারি না। দুবনা, ০৭ ন...

ব্যুমেরাং

Image
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশের নির্বাচনে আমেরিকা বা পশ্চিমা বিশ্বের পছন্দের প্রার্থী হেরে গেলে তারা এসব প্রার্থীকে উৎসাহিত করেছে নির্বাচনের ফলাফল মেনে না নিতে। সেটা সারা বিশ্বেই। ইউক্রেনে এভাবেই ইউশেঙ্কো ক্ষমতায় আসে। রাশিয়ায় চেষ্টা হয়েছিল। এখন জর্জিয়ায় সেই চেষ্টা হচ্ছে। সব দেখে মনে হয় এমনকি খোদ আমেরিকায় গণতন্ত্র মানে ডেমোক্র্যাটিক (গণতান্ত্রিক) পার্টির শাসন। তবে চারিদিকে ঢিল ছুঁড়লে এক সময় সেই ঢিল নিজের গায়েও লাগতে পারে। বাজারে গুজব ৫ তারিখের নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী পরাজয় স্বীকার নাও করতে পারে। জেতার জন্য এক বার সিস্টেমকে করাপ্ট করলে একদিন সেই সিস্টেম প্রতিপক্ষের হাতেও অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে। দুবনা, ০১ নভেম্বর ২০২৪

মালিক

Image
বৃটেনে লেবার সরকার বর্তমানের অর্থনৈতিক দুরবস্থার জন্য দায়ী করছে কনজারভেটিভ পার্টিকে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বিজয়ের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে উৎসবের আয়োজন করার জন্য অর্থ দানের পাশাপাশি কিয়েভের ফ্যাসিবাদী সরকারকে (যা কিয়েভ নিজেও লুকায় না) বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার দিচ্ছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে। বাইডেন ও হ্যারিস বর্তমান প্রশাসনের সব ব্যর্থতার দায় ট্রাম্পের ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছেন। মানবতার বাণী জপে দেশে দেশে সরকার উৎখাতের মাধ্যমে অরাজকতা সৃষ্টি করে এই মানুষকেই আবার আমেরিকা অসীম দুর্দশায় ফেলছে। হাসিনা সরকার একদিকে ইসলামী জঙ্গিবাদের সাথে লড়াই করে অন্যদিকে হেফাজতের হেফাজত করেছে। ইউনূস সরকার তাদের ব্যর্থতা হাসিনার কাঁধে চাপিয়ে দিচ্ছে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে ক্ষমতা দখল করে নিজেরাই এখন স্বৈরাচারী আচরণ করছে। এক কথায় সবাই তাদের ব্যর্থতার জন্য দায়ী করছে পূর্বপুরুষদের আর একই সাথে পরস্পরবিরোধী বিভিন্ন কাজে লিপ্ত হচ্ছে। কেউ কেউ রিসেট বাটন চাপছে, অন্যেরা তাদের সেই ইচ্ছেটা বহু কষ্টে চেপে রাখছে। মানুষের মত এত পরস্পরবিরোধী জীব কি আর আছে? যতদূর জানি দলবদ্ধ যেকোনো জীব দলের সবচেয়ে শক্ত...

দেউলিয়াপনা

Image
আজকাল পশ্চিমা বিশ্ব সমর্থিত গণতন্ত্রের একটিই অর্থ - ভোটের মাধ্যমে নিজেদের প্রার্থীর বিজয়। ভোটের স্বচ্ছতা, অস্বচ্ছতা কোন বিষয় নয়। ইউক্রেনে নিজেদের প্রার্থী ইউশেঙ্কোকে বিজয়ী করে আনতে সমস্ত রীতিনীতি লঙ্ঘন করে তৃতীয় বার ভোটের আয়োজন করা হয়েছিল। ইনুকোভিচকে প্রতিবাদ মিছিলের উপর পুলিশের হস্তক্ষেপ থেকে বিরত রেখে অগণতান্ত্রিক ভাবে প্রতিপক্ষকে ক্ষমতায় আনলেও পরে তাদের দ্বারাই দনবাসে সাধারণ মানুষের উপর কামান ও বিমান হামলা করা হয়েছিল। জর্জিয়ায় এভাবেই সাকাশভিলি প্রতিপক্ষকে দমন করেছিল। এবারের জর্জিয়ায় সংসদ নির্বাচন স্বচ্ছ ভাবে হয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সেই রায় দিলেও পশ্চিমা বিশ্ব ভোটের ফলাফলকে স্বীকৃতি না দেবার সু্যোগ খুঁজছে যদিও সবাই জানত যেকোন নিরপেক্ষ নির্বাচনে সরকারি দল জিতবে। তাই জনমত নয়, নিজেদের স্বার্থ - এটাই পশ্চিমা বিশ্বের গণতন্ত্র স্বীকার করা না করার একমাত্র ক্রাইটেরিয়া। জনগণ বিপক্ষে ভোট দিলে তারা ভাবে জনগণ যথাযথ গণতন্ত্রীমনা নয়। আমাদের দেশ ব্যতিক্রম নয়। বিগত কয়েক দশকের ঘটনাবলী একটাই শিক্ষা দেয় - যারা যত বেশি গণতন্ত্রের কথা বলে অগণতান্ত্রিক পথে ক্ষমতায...

স্বাধীনতা

Image
ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, মিশর যেসব দেশই নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে তারাই পশ্চিমা বিশ্বের বিরাগভাজন হয়েছে। বাংলাদেশও বাদ যায়নি। স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা, মানবতা ইত্যাদি গাল ভরা বুলি যতই আওড়াক না কেন অন্যদের স্বাধীনতায় এরা বিশ্বাস করে না। এক সময় এরাই খৃষ্টান ধর্মের বাণী দিয়ে সারা বিশ্বকে পদানত করেছিল, আজ ঠিক সেটাই করছে মানবতার ঘুমপাড়ানি গান শুনিয়ে। শুধু বোতল বদল হয়েছে, মদ আগেরটাই আছে। এটা ঠিক তৃতীয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই স্বৈরাচারী ব্যবস্থা কায়েম হয়েছে কিন্তু সমস্যা এসব দেশের নেতাদের স্বৈরাচারী আচরণ নয়, সমস্যা এদের পশ্চিমা বিশ্বের কাছে নত না হওয়া। ইতিহাস বলে এরা হাজার গুণ স্বৈরাচারী কিন্তু অনুগত যে কাউকে সাদরে গ্রহণ করে এমনকি প্রয়োজনে আল কায়েদা, ইসলামিক স্টেটস এর মত প্রচন্ড অমানবিক সংগঠন গড়ে তুলে। তাই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই যদি করতেই হয় নিজেদের শক্তিতে করুন, এদের সাহায্য নিয়ে নয়। তাতে এক স্বৈরাচারের পরিবর্তে আরেক স্বৈরাচার আসবে। সত্যিকারের জনপ্রিয় সরকার এদের দরকার নেই, কারণ এসব সরকার দেশের স্বার্থে কাজ করে, তাকে ম্যানিপুলেট করা যায় না। মস্কো, ২৮ অক্টোব...

আইন

Image
একসময় অনেকেই ভোল্টেয়ারের উদ্ধৃতি দিয়ে ফেসবুকে লিখত "তোমার সাথে আমি একমত না হতে পারি, কিন্তু তোমার কথা বলার অধিকার রক্ষায় আমি জীবন দিতেও পিছপা হব না।" এখন অবশ্য কেউ সেসব বলে না। এই যে ছাত্র লীগ নিষিদ্ধ হল তার পরেও সবাই নীরব। ছাত্র লীগ অনেক অপরাধে অপরাধী সে ব্যাপারে কোন দ্বিধা নেই কিন্তু এভাবে একটা সংগঠন নিষিদ্ধ করা আসলে অন্যান্য সংগঠন নিষিদ্ধ করার স্টেজ রিহার্সাল। দেশে যদি জরুরি অবস্থা জারি না থাকে তাহলে কোন সংগঠন নিষিদ্ধ করার আইনি পদ্ধতি আছে। চাইলাম আর নিষিদ্ধ করলাম এটা তো স্বৈরাচার। আজ আপনারা যারা এটা নীরবে সয়ে গেলেন সেই বিএনপি, সিপিবি, ছাত্র দল, ছাত্র ইউনিয়ন ইত্যাদি কিন্তু তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী, পরবর্তী টার্গেট। যখন আপনাদের উপর নিষেধাজ্ঞা নেমে আসবে তখন কিন্তু আর আপনাদের পাশে দাঁড়ানোর কেউ থাকবে না। অনেক সময় তেতো ওষুধ খেতে হয়। সেটা ভেবেই না হয় এভাবে কোন সংগঠন নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদ করুন। এতে অন্তত বিবেকের কাছে সৎ থাকতে পারবেন আর কেন আপনাকে নিষিদ্ধ করা হল এই দাবি তুলে আইনি লড়াইয়ের চেষ্টা করতে পারবেন। একবার বেআইনি ভাবে কোন কিছু করার সুযোগ সৃষ্টি হলে তা বারবার ব্যবহৃত...

প্রায়োরিটি

Image
 আমি বরাবরই ভালো বিশেষজ্ঞদের পছন্দ করি তা সে যে বিষয়েই হোক না কেন। একজন ভালো ছাত্র, একজন ভালো শিক্ষক, এক জন ভালো বিজ্ঞানী বা একজন ভালো কৃষক, মাঝি, গায়ক - যেই হোক। যদিও সব ক্ষেত্রে সত্য নয়, তারপরেও আমার ধারণা ভালো বিশেষজ্ঞ মানেই তিনি নিজের কাজের প্রতি যত্নশীল, কর্তব্যপরায়ণ। আর যিনি যত্নশীল তাঁর পক্ষে ভালো মানুষ হবার সম্ভাবনা বেশি। সেই হিসেবে ডঃ ইউনুসের উপর এই বিশ্বাস ছিল যে তিনি শুধু আইনের শাসন নয়, সামাজিক ন্যায়পরায়ণতার কথা মাথায় রেখে দেশ চালানোর চেষ্টা করবেন। স্বাভাবিক অবস্থায় আমি চাইতাম দায়িত্ব নেবার আগে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা কর ফাঁকির মামলা আইনের পথে মোকাবেলা করবেন। কারণ তিনি যদি সত্যিই অপরাধী না হন তাহলে এখন তাঁর ভয়ের কারণ ছিল না। কিন্তু তিনি মনে হয় এখানে রাজনীতির আশ্রয় নিয়েছেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে মামলা খারিজ করা হয়েছে। তবে রাজনৈতিক বিবেচনায় সেটা উপেক্ষা করা যায় কেননা শেখ হাসিনা তাঁর প্রতি সব সময়ই বিরূপ ছিলেন বিধায় মামলা রাজনৈতিক কারণেও হতে পারে। আগস্টের আন্দোলনের একটা বড় কারণ ছিল দুর্নীতি, অর্থ পাচার ইত্যাদি। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে গ্রামীন ব্যাংককে ৫ বছরের জন্য কর দান থে...

স্বৈরাচার

Image
রাজনৈতিক, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তৎপর ও সফল প্রগতিশীল অনেক মানুষের ২০২৪ এর বিপ্লবে ভূমিকা আমার মনে দৃঢ় বিশ্বাসের জন্ম দিয়েছিল যে অন্ধ বিশ্বাসের মত অন্ধ ঘৃণাও ধ্বংসের পথ সুগম করতে পারে। তারপরেও আশা ছিল ইতিহাস আমাদের শিক্ষা দেবে। সোভিয়েত ইউনিয়নে মানুষ ছিল অনেক বেশি শিক্ষিত, দেশ শিল্পে, শিক্ষা দীক্ষায় অনেক বেশি উন্নত। কিন্তু অল্প কিছু মানুষ অল্প কিছু সময়ের মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়নের সব অর্জনকে নাই করে দিয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বার বার বাংলাদেশ সম্পর্কে আশংকার কথা লিখেছিলাম। এখন যে বিভিন্ন দিবস বাতিল হচ্ছে এটা ১৯৯১ পরবর্তী সময়ে সোভিয়েত ইতিহাস মুছে দেবার মত - শুধু ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। সেখানেও অর্থনীতিবিদরা ছিল প্রধান ভূমিকায় আর এসব হয়েছিল আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্বের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে। ১৭ বছর লেগেছিল ঘুরে দাঁড়াতে। এখনও সেটা সম্পন্ন হয়নি। তখন এদেশের মানুষ পাছে কমিউনিস্ট বলে গালি দেয় এই ভয়ে মুখ খোলে নাই। দেশে ভয় পায় পাছে স্বৈরাচারের দোসর বলে। কিন্তু না দেশে, না এখানে কোথাও জনগণ এদের ইতিহাস পরিবর্তনের ম্যান্ডেট দেয়নি, দিয়েছিল দুর্নীতি দমন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্ট...

মতিয়া আপা

Image
আজ ঘুম থেকে উঠে ফেসবুকে বেগম মতিয়া চৌধুরীর মৃত্যু সংবাদ পেলাম। মতিয়া আপা, বাংলাদেশের অগ্নিকন্যা, এক সময়ের ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি - সেই হিসেবে আমাদের অনেক কিছুই এক সূতায় বাঁধা। পরবর্তীতে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। কৃষি মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। যত দূর জানি তাঁর নাম দুর্নীতি বা এসব কেলেঙ্কারিতে জড়িত ছিল না। তিনি একজন সফল রাজনৈতিক নেতা যিনি চেষ্টা করেছেন মানুষের জন্য কিছু করার। সবাই মানুষের জন্য রাজনীতি করে বলে দাবি করে কিন্তু আদর্শের প্রতি অন্ধ বিশ্বাস থেকে অনেকেই অনেক সময় ছোট খাটো যে সুযোগ আসে মানুষের পাশের দাঁড়ানোর, সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে কিছু একটা করার - ভবিষ্যতে অনেক বড় কিছু করার আশায় সেই সুযোগ হেলায় সরিয়ে দেয়। কিন্তু সবার জীবনে জ্যাক পট আসে না। তাই অনেকেই সারা জীবন মানুষের জন্য রাজনীতি করেও, হাজারো ত্যাগ স্বীকার করেও মানুষের জন্য কিছু না করেই একদিন চির শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েন। মতিয়া আপা ছিলেন ব্যতিক্রম। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হয় তাঁর প্রয়াণ হবে নিরবে নিভৃতে। তবে আমার বিশ্বাস কোন দিন যদি বাংলাদেশের আন্দোলনের নিরপেক্ষ ইতিহাস লেখা হয় তবে ...

অপেক্ষা

Image
দেশের অধিকাংশ মানুষের ধারণা ইউরোপ আমেরিকায় জীবন খুবই বিলাসবহুল। কাজ কর। ডলার পাউন্ড ইউরো উপার্জন কর। আর এসব মানেই তো অনেক টাকা। এত টাকা রাখবে কোথায়? ফুর্তি করে জীবন কাটাও। আর তাই এসব দেশে বসবাসের প্রতি আমাদের আকর্ষণ অনেকটা স্বর্গ বাসের মত। হালের নেতা মন্ত্রীরা চালাক। তাই তারা আর স্বর্গের লোভে দেখায় না (অপছন্দের মানুষকে সরাসরি স্বর্গে চালান করে দেয়) দেশকে ইউরোপ আমেরিকা বানানোর কথা বলে। আজকাল ফেসবুকে কিছু ভিডিওতে জিনিসপত্রের উচ্চ মূল্য নিয়ে মানুষের অসন্তোষ দেখি। কেন রে বাবা! এটাই তো ইউরোপ আমেরিকা হওয়ার সহজ পথ। আমরা তো ওদের ডলার পাউন্ড ইউরো-ই গ্রহণ করি, শিক্ষা দীক্ষা সংস্কৃতি এসব পাশে সরিয়ে রেখে। তবে এটা স্বাভাবিক। মানুষ খারাপটা সহজেই হজম করতে পারে। যে লোক দুই অক্ষর ইংরেজি বলতে পারে না সেও বেশ কয়েকটি ইংরেজি গালি জানে। এখন অপেক্ষা করুন কবে বেতনটাও ঐ রকম হবে। একদিন নিশ্চয়ই হবে। সবচেয়ে বড় কথা সেই দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকা।  মস্কো, ১৩ অক্টোবর ২০২৪

মস্কোর দূর্গা পূজা

Image
পূজা মানে ভার্সিটি জীবনের বন্ধুদের সাথে বছর গড়িয়ে আরও একবার দেখা হওয়া। পূজা মানে কয়েক ঘন্টা মনখুলে আড্ডা। পূজা মানে ঢাকের বাজনা, কাসের শব্দ, ধূপের গন্ধ, আরতি। পূজা মানে কেমন আছ? অনেক দিন দেখা নেই? ক্যামেরা আন নি? গতকাল কেন এলে না? বাঙালি মেয়েদের অভিযোগ। পূজা মানে বিশ্বরূপ, সুমিতদের সাথে দেখা। ছাত্রজীবনের স্মৃতিচারণ, কারো কারো পিণ্ডি চটকানো। এবারও ব্যতিক্রম ছিল না।  মস্কো, ১২ অক্টোবর ২০২৪

হুকুমদার

Image
আমাদের শাসন ব্যবস্থাই স্বৈরাচারী। আগের সরকার নির্দেশ জারি করত ঢাকা শহরে রিকশা চলবে না।‌ বর্তমান সরকার বলছে ২০ বছরের পুরানো গাড়ি ও ২৫ বছরের পুরানো মাল গাড়ি চলবে না। এই দু'টো উদ্যোগ ভালো তাতে সন্দেহ নেই। এসব গাড়ি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর, জনজীবনের জন্য ক্ষতিকর। তবে এসবই আবার অতি প্রয়োজনীয়। এছাড়া এসব গাড়ির সাথে জড়িত হাজার হাজার মানুষের জীবিকা। পুরানো গাড়ি সরাতে হলে আগে নতুন গাড়ির ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার যদি এসব ব্যবস্থা করে গাড়ি সরিয়ে নেয় তাহলে সমস্যা নেই। তবে দেশের ইতিহাস বলে সরকার বিভিন্ন অজুহাতে কারখানা বন্ধ করতেই বেশি পারদর্শী, কর্মস্থল তৈরিতে তারা হয় অপারগ অথবা অনিচ্ছুক। আচ্ছা যারা গাড়ি চালায় তারা তো চাকরি চায় না, বরং উদ্যোগী হয়ে দু চারজনকে চাকরি দেয়। তাই না? সব দেখে মনে হয় সরকার তো নয় হুকুমদার।  মস্কো, ০৬ অক্টোবর ২০২৪

কৌশল

Image
রুশরা বলে পবিত্র স্থান কখনও খালি থাকে না। রাজনীতি এর ব্যতিক্রম নয়। একটা সময় ছিল যখন কমিউনিস্টরা ন্যাপ, আওয়ামী লীগ ইত্যাদি দলের কর্মী হয়ে রাজনীতি করত, এসব দলের রাজনীতি প্রভাবিত করত। এবং সেটা করত সাফল্যের সাথেই। সেই সময়ের আওয়ামী লীগের চরিত্র দেখলেই তা বোঝা যায়। প্রকাশ্য রাজনীতি করার ক্ষেত্রে বাঁধা সৃষ্টি হলে জামাত শিবির আওয়ামী লীগে সম্পৃক্ত হয়ে রাজনীতি করেছে, আওয়ামী লীগকে জামাতি চেহারা দিয়েছে। যেটা কমিউনিস্টরা করতে ব্যর্থ হয়েছে জামাত শিবির সেই সুযোগ নিয়ে নিজেদের শক্তিশালী করেছে, সুযোগ বুঝে সামনে এসেছে। যতদিন কমিউনিস্টরা আওয়ামী লীগের ভেতরে থেকে কাজ করছে তারা আওয়ামী লীগকেই শক্তিশালী করতে চেয়েছে। জামাত শিবির করেছে উল্টো - তারা আওয়ামী লীগকে জনবিচ্ছিন্ন করতে চেয়েছে, করেছে। এটা আবারো বলে রাজনীতিতে বন্ধু বলে কিছু নেই, আছে দলীয় স্বার্থ, আছে রণকৌশল। কোন দলের সাথে কখন মিত্রতা, কখন মিত্রতার ভান আর কখন শত্রুতা করতে হবে সেটাও রণকৌশলের অঙ্গ। এর উপর নির্ভর করে সাফল্য। দুবনা, ০৫ অক্টোবর ২০২৪

রিসেটের ক্ষুদ্র ঋণ

Image
এবারের কোটা সংস্কার আন্দোলন কোন অবস্থাতেই মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী আন্দোলন ছিল না। এটা ছিল মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে দলীয় বলয় থেকে বের করে আনার আন্দোলন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ হলেও সেটা করেছে দেশের সাধারণ জনগণ, এদেশের কৃষক, শ্রমিক, খেটে খাওয়া মানুষ। আর ফসল উঠেছে অন্যের ঘরে। স্বাধীনতার অর্জনের হিস্যা নিতেই ছাত্র জনতা মাঠে নেমেছিল। এই অবস্থায় রিসেট বাটনের বয়ান দেশের মানুষকে তাদের অধিকার থেকে আবারো বঞ্চিত করা, নতুন ব্যাঙ্ক খুলে জনগণকে নতুন করে নতুন স্বাধীনতার ক্ষুদ্র ঋণের জালে আটকানো। ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের ও দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ তার চলার পথ ১৯৭১ সালেই সেট করেছে। এটা আর রিসেট করার অপেক্ষা রাখে না। জনগণের জন্য সত্যিই কিছু করতে চাইলে একাত্তরের প্রতি সম্মান জানিয়েই করতে হবে। ১৯৭১ জনগণের রায়। এটা জাতির সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। তাই নো ধানাই পানাই, নো রিসেটের ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্প। দুবনা, ০৪ অক্টোবর ২০২৪

প্রশ্ন

Image
হিজাব না পরায় ঢাকায় এক বিদেশি মহিলাকে হেনস্থা করার ভিডিও দেখলাম ফেসবুকে। প্রথম আলো জানাল ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য পর্দা বাধ্যতামূলক করা হবে। কেউ একজন বলল পূজা করতে চাইলে কোলকাতা গিয়ে করুন। স্বৈরাচারের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল অন্যের উপর নিজের মতামত চাপিয়ে দেয়া। বর্তমানে যে পরিস্থিতি দেশে বিদ্যমান সেটা যদি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় তাহলে সেই স্বৈরাচার বিগত দিনের সব রেকর্ড ম্লান করে দেবে। নিজেদের প্রগতিশীল, শিক্ষিত, মুক্তমনা বলে দাবি করেন এমন যেসব মানুষ এই মধ্যযুগীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম হওয়ার পথ সুগম করে দিলেন তারা জনগণকে কী বলবেন? দেশের জনগণ কিন্তু এমনটি কখনোই চায়নি। বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষ যাদের সংসারে দুবেলা অন্ন মেয়েদের কাজের উপর অনেকাংশে নির্ভর করে। আপনারা না হয় ইউরোপ আমেরিকায় পাড়ি জমাবেন বা সেখানেই বসে আছেন। দেশের কোটি কোটি মানুষ যারা এখনও জারি সারি গায় তাদের কথা কি ভেবেছেন কখনও? একদল ঈশ্বরের দোহাই দিয়ে নিজেদের খায়েশ মেটায় আর আপনারা সেটা করেন জনগণের দোহাই দিয়ে। কিন্তু না ঈশ্বর না জনগণ কেউই আপনাদের তাদের জন্য কিছু করতে বলেনি। বরং তারা চায় আপনারা তাদের নিজেদের মত ...

কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়

Image
২০০৭ সালে আমার সোলো ফটো এক্সিবিশনের ছবিগুলোর বেশিরভাগ ছিল বাসা থেকে অফিসে যাওয়ার পথের ধারের ফুল, পাতা, ঘাস ইত্যাদির। যখন লোকজন শুনল এসব তাদের চলার পথের ধারে তোলা, বিশ্বাস করতে চাইল না, বলল - আমিও তো ওপথে গেলাম, দেখিনি তো। http://bijansaha.ru/albshow.html?tag=75 ২০১৬ সনে আমার এক বন্ধুর পোস্ট ছিল, আমি, আমার বন্ধুরা, ছেলেমেয়ে, ওদের বন্ধুরা, কলিগরা কেউই ট্রাম্পকে সমর্থন করে না। ও এত ভোট পায় কোত্থেকে? দেশে থাকাকালীন যখন ছাত্র ইউনিয়ন, খেলাঘর, কমিউনিস্ট পার্টি ইত্যাদির সাথে জড়িত ছিলাম তখন আশেপাশের সবাই শুধু সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ইত্যাদির কথা বলত। কিন্তু কোন ভোটেই আমাদের টিকির দেখা মিলত না। এক বিপ্লবী বন্ধু দেশে বেড়াতে গিয়ে লিখল কয়দিন ধরে সারা দেশ চষে বেড়ালাম। একটাও জামাত শিবিরের দেখা মিলল না। সব মিথ্যা কথা। অথচ হিজাব না পরায় মহিলারা আক্রান্ত হচ্ছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে মূর্তি ভাঙা হচ্ছে, মাজার ভাঙা হচ্ছে, আগের মতই মিছিলে গুলি চলছে। এসবের প্রামাণ্য ভিডিও আছে। এমনকি প্রধান উপদেষ্টা সেটা স্বীকার করেছেন। আমরা সাধারণত নিজেদের ভুল দেখি না কারণ সেটা ভুল মনে করি না। ছাত্রলীগ...

প্রস্তাব

Image
আমাদের ফোটোগ্রাফির একটা ক্লাব আছে। ২০০৬ সালে আমরাই সেটা প্রতিষ্ঠা করি। যেহেতু একাধিক মানুষ একসাথে চলতে গেলে সবার জন্য গ্রহণযোগ্য কিছু নিয়ম-কানুন মানতে হয় তাই আমরা একটি গঠনতন্ত্রও লিখি। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম সংযোজন সংশোধন তাতে করা হয়েছে। মূল কথা সেটা যেন আমাদের সবার জন্য সুবিধাজনক হয়, আমাদের কাজকর্ম করার পথ সহজ করে। কারণ গঠনতন্ত্র আমাদের চলাকে সহজ করার জন্য। আর এই পরিবর্তন করেছি বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে। বাংলাদেশের বিগত তেপান্ন বছরের রাজনীতির ইতিহাস থেকে দেখি যারাই ক্ষমতা হারায় তারাই নবনির্বাচিত সরকারের বিশেষ আতিথ্যে দিনযাপন করে। নবাগত সরকার বিদায়ী সরকারকে এতটাই ভালোবাসে যে সহজে ছাড়তে চায় না, এমনকি যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য তাদের ২৪ ঘন্টা কড়া নজরদারিতে রাখে। এসব কথা মাথায় রেখে সংবিধানে একটি নতুন বিধি সংযোজন করা যায়। বিদায়ী সরকারকে বাধ্যতামূলক ভাবে জেলের ভাত খেতে হবে। এর মেয়াদ বিগত দিনের শাসনামলে তাদের কাজকর্ম দ্বারা নির্ধারিত হবে, তবে কোন মতেই ৪ বছরের বেশি হবে না যাতে তারা পরবর্তী নির্বাচনের অংশগ্রহণ করার জন্য সার্বিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে। এতে করে দুর...

সমাধান

Image
কথা হচ্ছিল সেভার সাথে সমস্যা ও তার সমাধান নিয়ে। - পাপ, এমন কোন সমস্যা কি আছে যার সমাধান নেই? - সব সমস্যারই সমাধান আছে এবং একাধিক সমাধান আছে। তাই মূল সমস্যা সমস্যায় নয়, এর মূল সমস্যা হল অনেকগুলো সমাধান থেকে নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে সবচেয়ে উপযোগী সমাধান বেছে বের করা।  - যেমন? - ধর একজন লোক অসুস্থ হয়েছে। সে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে পারে, ডাক্তার দেখাতে পারে, অষুধ খেতে পারে, অপারেশন করাতে পারে, এমনকি মরেও যেতে পারে।  - মানে? - মানে আর কি? মৃত্যু সব অসুখের জন্য সবচেয়ে কার্যকরী ওষুধ। জানিস না? সেভার হাসতে হাসতে পেটে খিল।‌ কথা তখনকার মত এখানেই শেষ। দুবনা, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দায়বদ্ধতা

Image
ফেসবুকের খবর বিশ্বাসযোগ্য হলে ঢাবির শিবির সভাপতি নিজের পরিচয় গোপন করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমন্বয়ক হয়েছিল। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কৌশলগত ভাবে ঠিক হলেও এটা ছিল মিথ্যাচার।  অধ্যাপক আলী রীয়াজ সংবিধান সংশোধন কমিটির প্রধান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি একজন বাংলাদেশী আমেরিকান। ফেসবুকে কেউ কেউ লিখেছেন তিনি আমেরিকার নাগরিক। হয়তো বাংলাদেশের নাগরিকত্ব এখনও ধারণ করেন। যতদূর জানি আমেরিকার নাগরিকত্ব পাওয়ার সময় সেই দেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে শপথ নিতে হয়। সেক্ষেত্রে আমেরিকার নাগরিক হলে অধ্যাপক আলী রীয়াজ কোন দেশের প্রতি অনুগত থাকবেন? বিভিন্ন লেখায় ও বক্তব্যে তিনি দায়বদ্ধতার কথা বলেন। তিনি যদি আমেরিকান নাগরিক হন এবং একই সাথে বাংলাদেশের সংবিধান সংশোধন কমিটির প্রধান হন তাহলে বাই ডিফল্ট তিনি কোন একটি দেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে অপারগ হবেন। খেলাধূলার ক্ষেত্রে ভিনদেশী প্রশিক্ষক নিয়োগ আর দেশের সংবিধান সংশোধন বা রচনা এক জিনিস নয়। এমনকি তিনি নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করলেও তাঁর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। সেক্ষেত্রে এটা কি দ্বিচারিতা নয়? তাহলে ঢাবির শিবির সভাপতির সাথে তাঁর পার্থক্য কো...

প্রশ্ন

Image
ফেসবুকে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দেখে সমাজের মনোজগতের কমবেশি এক সামগ্রিক চিত্র পাওয়া যায়। আমার ফেসবুক বন্ধুদের বেশির ভাগ জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। দ্বিতীয় বৃহত্তম গোষ্ঠী সোভিয়েত ইউনিয়ন বা রাশিয়ান গ্র্যাজুয়েট। বাংলাদেশের কিন্তু সোভিয়েত গ্র্যাজুয়েট নয় এদের এক বড় অংশ দেশের বাইরে - উন্নত বিশ্বের বাসিন্দা, জীবনে প্রতিষ্ঠিত। এদের অনেকের স্ট্যাটাস দেখে মাঝেমধ্যে অবাক হতে হয়। বাংলাদেশ নিয়ে আমাদের আবেগ, সে থেকে কোন রাজনৈতিক দলের প্রতি সমর্থন বা কোন দলের বিরোধিতা করা বোধগম্য। কিন্তু একই সাথে তৃতীয় দেশের নাগরিক হয়ে ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি এদের মনোভাব দেখে মনে হয় শারীরিক ভাবে বিদেশে অবস্থান করলেও এদের মন বাংলাদেশের চোরাবালিতে আটকে গেছে। সবচেয়ে অবাক হই বর্তমানে নিজেদের ভারতীয় বা পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত স্বদেশী আমেরিকান, কানাডিয়ান, ইউরোপিয়ানদের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি দেখে। আর কবে আমরা উন্নত বিশ্বের স্বাধীন নাগরিক হবে? এতদিন বিদেশে থেকেও যদি মানসিকতা বদলাতে না পারি তাহলে দেশে বিদেশি প্রেসক্রিপশনে বিভিন্ন ধরণের উন্নয়ন ও সংস্কার কি দেশের মানুষকে আদৌ মুক্তমনা মানুষ হতে সাহায্য করবে? আমরা যেমন ...

দায়

Image
আপনি কি আজ হাতে রক্তের দাগ দেখেছেন? শুনেছেন মৃত্যু পথ যাত্রীর আর্ত চিৎকার? আমার মনে হয় আমি দেখেছি। একটা সময় পর্যন্ত কোটা বিরোধী আন্দোলনের সমর্থক হিসেবে এই হত্যার দায় আমাদের অনেকের। একটা সময় পর্যন্ত এ কারণে যে যখনই সেটা সরকার পতনের আন্দোলনে পরিণত হয়েছে আমি মনে করেছি আমরা ভুল পথে যাচ্ছি। এর মানে এই নয় আমি আওয়ামী সরকারের সমর্থক ছিলাম বা আছি। আসলে স্বৈরাচারী শাসন, দুর্নীতি, টাকা পাচার ইত্যাদি দেশের অপুরনীয় ক্ষতি করলেও আমার মনে হয় দেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে রাজনীতিহীনতায়। যেহেতু তখন মাঠে কোন রাজনৈতিক শক্তি ছিল না একটি দেশপ্রেমিক সরকার গঠনের জন্য তাই আমার মনে হয়েছিল কিছুটা হলেও সময় নেয়া দরকার রাজনীতিকে গোছানোর জন্য। অন্যথায় শাসনের লাগাম এমন সব মানুষের হাতে চলে যেতে পারে যে এত প্রাণের বিনিময়ে যা অর্জিত হয়েছিল সবই বৃথা যাবে। আমরা চেয়েছিলাম বৈষম্যহীন সমাজ, কিন্তু আজ বৈষম্য এন্ট্রপির মত ক্রমাগত বাড়ছে। মানুষ নাজেহাল হচ্ছে তার ধর্মীয় পরিচয়ে, রাজনৈতিক পরিচয়ে, এমনকি শুধু সন্দেহের ভিত্তিতে। আমাদের লড়াই ছিল বিচার বহির্ভূত হত্যার বিরুদ্ধে। কিন্তু আজ চারিদিকে শুধুই বিচার বহির্ভূত হত্যার ছড়াছড়ি। যেদি...

অপব্যবহার

Image
যে বাচ্চা কথায় কথায় কাঁদে এক সময় তার কান্নায় কেউ গুরুত্ব দেয় না। শান্ত গম্ভীর মানুষকে লোকে সমীহ করে কারণ জানে সে রাগলে খবর আছে। কিন্তু যে উঠতে বসতে রাগে তার রাগেও আর কেউ কান দেয় না। এক সময় কারণে অকারণে হরতাল ডেকে ডেকে হরতালকেই অপ্রাসঙ্গিক করে তোলে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো। এখন এসেছে গ্রেফতারের আর মামলা করার পালা। এভাবে চললে কিছুদিন পরে মামলা গ্রেফতার এসবও অর্থহীন হয়ে পড়বে। তাই কাউকে গ্রেফতার বা কারো বিরুদ্ধে মামলা করার আগে ভাবুন সেটার আদৌ দরকার আছে কি না। অযথা রাষ্ট্রকে হাস্যকর করবেন না কারণ রাষ্ট্র এক গুচ্ছ স্বার্থান্বেষী তথাকথিত বিপ্লবীর নয়, রাষ্ট্র বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের।  দুবনা, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রশ্ন

Image
সোভিয়েত ইউনিয়নে পড়াশুনা করেছে এরকম অনেককেই বলতে শুনি তারা তো সোভিয়েত ইউনিয়নে লেখাপড়া করেছে সোভিয়েত সরকারের বৃত্তি নিয়ে তাই বর্তমান রাশিয়ার প্রতি তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই। এখানে দুটো বিষয় আমাকে ভাবায়। যেহেতু সুযোগ পেলেই এরা বলে দেশের টাকা তো জনগণের টাকা তাই সোভিয়েত সরকারের বৃত্তি মানে এ দেশের মানুষের কষ্টার্জিত অর্থে দেয়া সে বৃত্তি। সরকার বদলানোর সাথে সাথে কি দেশের জনগণ বদলে গেছে? জনগণ সেই জারের আমলে, সোভিয়েত আমলে বা বর্তমান রাশিয়ায় কমবেশি একই আছে। সব আমলেই অধিকাংশ মানুষ রাজাকেই ঈশ্বর জ্ঞানে পূজা করে, জার, জেনারেল সেক্রেটারি বা প্রেসিডেন্টের প্রতি আনুগত্যকে দেশের প্রতি আনুগত্য মনে করে। তাই তো এরা মহান পিতৃভূমির যুদ্ধের সময় বলত জারের জন্য, জন্মভূমির জন্য অথবা স্তালিনের জন্য জন্মভূমির জন্য এই লড়াই। তাই জনগণ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজের সমর্থক হলেও তারা আসলে দেশের জন্যই এসব করে। সাধারণ মানুষই বারবার দেশের বিপদে দেশের পাশে দাঁড়ায়, জীবন দিয়ে দেশ রক্ষা করে। তাই দিনের দেশে তথাকথিত এলিট শ্রেনী নয়, এই সাধারণ মানুষই দেশ। তাহলে কি এই জনগণের প্রতি এদের কোন দায়বদ্ধতা নেই? দ্বিত...

রাজনীতিবাজ

Image
 রাজনীতিবিদদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল তারা নিজেদের চাহিদার চেয়েও জনগণের চাহিদা সম্পর্কে বেশি অবগত বলে মনে করে। বেদেনীর মত যারা সারা বিশ্বের মানুষের ভাগ্য বদলায় কিন্তু কী এক অজ্ঞাত কারণে নিজেদের ভাগ্য বদলাতে পারে না রাজনীতিবিদরা জনগণের সমস্যার সমাধান করতে চায়। জনগণের জন্য কি ভালো আর কি মন্দ সেটা নিজের উর্বর মস্তিষ্ক থেকে আবিষ্কার চেষ্টা না করে এরা যদি জনগণের কাছে সেটা জিজ্ঞেস করার সাহস রাখত তাহলে রাজনীতির গতিপথ বদলে যেত আর পৃথিবী অনেক বেশি বাসযোগ্য হত। রাজনীতিবাজরাই আজকের সব সমস্যার নাটের গুরু। দুবনা, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪